সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৫ মার্চ, ২০১৬ ১৮:৫৩

অথচ তারাও গভর্নরের পদত্যাগ চেয়েছিলেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগের পর তাঁকে উদ্দেশ করে প্রশংসার বাণ ছুটছে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক চয়ন চৌধুরী। অথচ এঘটনার আগে তাঁর পদত্যাগের দাবি উঠেছিল বলেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

চয়ন চৌধুরী মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে উল্লেখ করেন, "শেয়ার বাজার, হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনার পাশাপাশি নানা বিশেষ শব্দ ব্যবহার করায় দীর্ঘদিন ধরেই অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি চলছে। সর্বশেষ রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনার পর পুরাতন পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এযাত্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবিও উঠে।"

তিনি আরও লিখেন, "যেই আতিউর রহমান পদত্যাগ করলেন, যথারীতি শুরু হয়েছে উল্টো সুর। রাখাল বালকের নাটকীয় উত্থান থেকে শুরু করে গভর্নর হিসেবে তাঁর নানা পদক্ষেপের প্রশংসার বাণ ছুটছে।"

চয়ন চৌধুরীর ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিস্তারিত-

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়; প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীকে নিয়ে চারদিকে হইচই। তৎকালীন মন্ত্রীর প্রকাশ্যে ধূমপান, গণমাধ্যম কর্মী নিয়ে মন্তব্যের সঙ্গে মঞ্চে ঘুমিয়ে পড়া, গান গাওয়া নিয়ে সরব সবাই। মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি নিয়ে সকলের মধ্যে উচ্চকিত হওয়ার তীব্র প্রতিযোগিতা।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা হঠাৎ পরপারে চলে গেলেন। আর তারপরই শুরু হলো তাকে নিয়ে স্তুতি-বাক্য বর্ষণের উল্টো প্রতিযোগিতা। মুক্তিযুদ্ধে মহসিন আলীর বীরত্বগাথা ও তাঁর মানবিকতার নিদর্শন নিয়ে কলাম ও আঙুলে (মানে কি-বোর্ডে আরকি) ঝড় উঠলো।

শেয়ার বাজার, হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনার পাশাপাশি নানা বিশেষ শব্দ ব্যবহার করায় দীর্ঘদিন ধরেই অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি চলছে। সর্বশেষ রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনার পর পুরাতন পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এযাত্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবিও উঠে।

কিন্তু যেই আতিউর রহমান পদত্যাগ করলেন, যথারীতি শুরু হয়েছে উল্টো সুর। রাখাল বালকের নাটকীয় উত্থান থেকে শুরু করে গভর্নর হিসেবে তাঁর নানা পদক্ষেপের প্রশংসার বাণ ছুটছে। অর্থনীতি বিষয়টা বিশেষ ভালো বুঝি না। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, এই প্রশংসাকারীরা আগে কোথায় ছিলেন!

দায়িত্বশীল পদে থেকে গাফিলতি, অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া কিংবা নিজেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া অবশ্য গর্হিত কাজ। এজন্য সংশ্লিষ্টদের শাস্তি হওয়া অত্যাবশ্যক ভবিষ্যতের জন্য। কিন্তু যারা তাদের আশপাশে থাকেন, সহযোগী-সহকর্মী-স্তাবক হয়ে; তাদের শাস্তি আরো বেশি জরুরী।

এই মানুষগুলো-ই শীর্ষ পদে দায়িত্বশীলদের পরিচালিত করেন বলে তাদের দায়-অপরাধটা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে কিছু পদের দায়িত্বশীলদের ওই লোকদের সহায়তা-পরামর্শের বাইরে যাওয়ার সুযোগ-ই থাকে না। এক্ষেত্রে অপরের সততা-দায়িত্বশীলতার উপর নির্ভর করে শুধু নিজের বিবেক-বুদ্ধিতেই আস্থা রাখতে হয় দায়িত্বশীলদের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত