সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২২ মার্চ, ২০১৬ ১৩:৫৫

পদকপ্রাপ্তদের কাছে বায়োডাটা চাওয়া অপমানজনক

সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীকে একুশে পদক দেওয়ার সময়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বাসায় ফোন করে বায়োডাটা চাওয়া হয় এমন তথ্য জানিয়েছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এ বিশিষ্ট ব্যক্তির পুত্র সাগর লোহানী।

সাগর লোহানী মঙ্গলবার (২২ মার্চ) ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করে লিখেন, "মনোনীত ব্যক্তির সারাজীবনের কর্মের উপর একটি Brief তৈরি করবার দায়িত্ব বর্তায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আমলাদের উপর। কিন্তু সেইসব আমলা নিজের মূর্খতা ও অযোগ্যতা ঢাকবার প্রয়াসে মনোনীত ব্যক্তির কাছে তার বায়োডাটা চেয়ে নেয়।"

এটাকে অপমানজনক ও মর্যাদাহানিকর উল্লেখ করে সাগর লোহানী এ সম্পর্কে লিখেন, "গত বছর বাবাকে যখন একুশে পদকের জন্যে মনোনীত করা হয় তখন আমাদের এই সংক্রান্ত একটি অভিনব অভিজ্ঞতা হয়। সে সময় মন্ত্রণালয় থেকে বাসায় ফোন করে চাওয়া হয় বাবার বায়োডাটা। তখন আমরা পরিষ্কারভাবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছিলাম, “এই বায়োডাটা জোগাড় করা আপনাদের বিষয় আপনারা ব্যবস্থা করবেন আমরা কিছু দিতে পারবো না"।

সাগর লোহানীর ফেসবুক পোস্টের বিস্তারিত-

একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরষ্কার এর জন্যে যাদের নাম মনোনীত হয় তাদের পদক প্রাপ্যতার যোগ্যতার ফিরিস্তি জমা দিতে হয় বা আবেদন করতে হয় এমন নিয়ম এই দুই পদক প্রদানের নীতিমালার কোথাও নেই।

মনোনীত ব্যক্তির সারাজীবনের কর্মের উপর একটি Brief তৈরি করবার দায়িত্ব বর্তায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আমলাদের উপর। কিন্তু সেইসব আমলা নিজের মূর্খতা ও অযোগ্যতা ঢাকবার প্রয়াসে মনোনীত ব্যক্তির কাছে তার বায়োডাটা চেয়ে নেয়। এটি অত্যন্ত অপমানজনক এবং মর্যাদাহানিকর।

গত বছর বাবাকে যখন একুশে পদকের জন্যে মনোনীত করা হয় তখন আমাদের এই সংক্রান্ত একটি অভিনব অভিজ্ঞতা হয়। সে সময় মন্ত্রণালয় থেকে বাসায় ফোন করে চাওয়া হয় বাবার বায়োডাটা। তখন আমরা পরিষ্কারভাবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছিলাম, “এই বায়োডাটা জোগাড় করা আপনাদের বিষয় আপনারা ব্যবস্থা করবেন আমরা কিছু দিতে পারবো না"।

এরপর এই আমলারা সম্ভবত বাংলাদেশের সংস্কৃতির ধারক-বাহক/রক্ষক-সংরক্ষক শীর্ষ নেতা (?) দের দ্বারস্থ হন কেননা সেই আবদার নিয়ে এই নেতাদের মধ্যে দুজন পরবর্তিতে আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি সরাসরি তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করি। এ ব্যাপারে আমরা অনঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে দেই। একজন শীর্ষ নাট্য ব্যক্তিত্বকে বলি , “আপনারা যদি কামাল লোহানীর কর্ম সম্পর্কে নাই জেনে থাকেন তবে দয়া করে ওনার নাম মনোনয়ন তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিন”। এই বক্তব্যের পরে অবশ্য আর কেউ এ বিষয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। কদিন পরে মন্ত্রণালয় থেকে আবার যোগাযোগ করা হয় তবে এবার বাবার ঠিকানা আর তাঁর সাথে পরিবারের কারা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে যাবেন তাদের নাম জানবার জন্যে!

তবে হ্যাঁ আমাদের মত অনেকেই এই বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন অতীতে। কিন্তু বেশী সংখ্যকই "যদি নাম বাদ দিয়ে দেয়" এই ভয়েই মন্ত্রণালয় যা চেয়েছে তাই দিয়েছে আর মন্ত্রণালয়ের গণ্ড মূর্খগুলোও সে সুযোগের শতভাগ সদ্ব্যবহার করে চলেছে। কেননা এই আমলারা তো দেখেছে যে পদকের জন্য লালায়িত “মহান ব্যক্তি”রাও কেমন করে তাদের তোষামোদ করে যাতে তার নামটি মনোনয়ন তালিকায় ওঠে!

আমাদের জাতীয় চরিত্রে “আত্মমর্যাদাবোধ” শব্দটি সেই ডায়নোসরের যুগেই অবলুপ্ত হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত