সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৭ মার্চ, ২০১৬ ১৭:৩০

‘ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে বসবাসের কারণে ভারতের মুসলমানদের মুসলমানিত্ব কি নষ্ট হচ্ছে?’

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধান নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুলের শুনানি নিয়ে সম্প্রতি রাজনৈতিক  মহলে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ধর্মভিত্তিক দল হেফাজত, ওলামালীগ ও জামায়াতে ইসলাম ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে না রাখলে দেশ অচল করার হুমকি দিয়েছে।

২৮ বছর আগে করা ১৫ বিশিষ্টজনের করা একটি রিট আবেদনের ২৩ বছর পর রুলটি জারি করা হয়। আর রুল জারির প্রায় ৫ বছর পরে এসে এ রুল শুনানির দিন ধার্য হয়।

এ সম্পর্কে সাহিত্যিক স্বকৃত নোমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে একটি পোস্ট করেছেন।
তিনি লিখেছেন:

ভারতের মুসলমানরা প্রথমে ভারতীয়, দ্বিতীয়ত মুসলমান। বাবর থেকে আকবর পর্যন্ত সবাই তাই ছিলেন। বাংলার নবাবরাও তাই ছিলেন। সাম্প্রতিককালের সৈয়দ হুসাইন আহম্মদ মাদানী বা সৈয়দ আসাদ মাদানীসহ দেওবন্দ তরিকার অসংখ্য ইসলামি ধর্মতত্ত্ববিদদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ভারতীয় সংবিধানে ভারত রাষ্ট্র হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র। এই ব্যবস্থায় নৈতিকতা ও আইনশৃঙ্খলাগত কিছু বিধিনিষেধ ছাড়া অন্য সর্বত্র ভারতীয় নাগরিকদের স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ ও ধর্মপ্রচারের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এই অধিকারটি ভোগ করছে ভারতের ১৩% মুসলমান।

প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষ ভারত রাষ্ট্রে বসবাসের কারণে ভারতের মুসলমানদের মুসলমানিত্ব কি নষ্ট হচ্ছে? প্রথমে ভারতীয় হওয়ার কারণে ভারতীয় মুসলমানদের কি নরকবাস হবে? নাকি তারা বিশুদ্ধ মুসলমান নন? বাংলাদেশে একজন মুসলমানও কি আছেন, যিনি হুসাইন আহম্মদ মাদানী বা আসাদ মাদানী (বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অকুণ্ঠ সমর্থকদের একজন) বা ভারতের মুসলমানদের মুসলমানিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন?

আর, আশি পার্সেন্ট হিন্দু ধর্মাবলম্বীর দেশ ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে যদি রাষ্ট্র ধর্ম ‘হিন্দু’ করে দেয়া হয়, দেশটির মুসলমানদের জন্য কি তা সম্মানজন হবে? বাংলাদেশে যারা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পক্ষে, যারা নিজেদের প্রথমে মুসলমান এবং পরে বাংলাদেশী ভাবেন, প্রশ্নটি তাদের কাছে। নাকি তারা এই প্রবাদে বিশ্বাসী―‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম’; জাহান্নামে যাক ভারতের মুসলমানরা, আমাদের কী?


আপনার মন্তব্য

আলোচিত