তপু সৌমেন

২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ১৬:২৯

মায়ানমারের সঙ্গে ৫% সীমান্ত আমাদের, আমরা কেন দায়িত্ব নেবো?

ছবিটি দেখুন কি মনে হচ্ছে? শুধু এইটাই বলতে চেয়েছি, সব কিছু বিশ্বাস করতে নেই।

রোহিঙ্গাদের কষ্ট দুর্দশা আজকে হাস্যকর করে ফেলেছি এই আমরাই। এইসব মিথ্যে কেন প্রচার করতে হবে? এতোটা নিচে কেন নামতে হবে? আমরাতো জানিই ওদের উপর অত্যাচার হচ্ছে আমাদের উচিৎ প্রতিবাদ করা তা না করে গুজব ছড়াচ্ছি।

পক্ষান্তরে বিবিসি, আলজাজিরা এ নিয়ে রিপোর্ট করে ফেলেছে যে আমরা ভুল, মিথ্যা ছবি দিয়ে ফেইসবুকে, মিডিয়াতে রোহিঙ্গা নির্যাতনের গুজব ছড়াচ্ছি। কি লাভ হলো তাইলে?

যে বিশ্ব মিডিয়াতে আমাদের প্রতিবাদ পৌঁছানোর কথা তা না করে পৌঁছে দিলাম গুজব। আমাদের উচিৎ ছিল বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় ভাবে, প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে প্রতিবাদ জানানো। ভুল তথ্য না দিয়ে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে যদি আমাদের একজনেরও প্রতিবাদের কারণে এই মানুষগুলোর সাথে ইনসাফ করা হয় তাতেই তো অনেক।

আমরা যারা গুজব ছড়াচ্ছি আমরা কি একবারও মায়ানমারের মানচিত্রটা লক্ষ্য করেছি? আমাদের কতুটুকু অংশ জুড়ে তাঁদের সীমানা? শুধুমাত্র ৫% সীমানাও আমাদের সাথে নেই তাঁদের বাকী ৯৫% সীমানা ভারত, চীন আর থাইল্যান্ড ঘিরে আছে। তাহলে আমাদেরকে কেন তাদেরকে নিতে হবে?

আমরাতো ইতিমধ্যে ৫ লাখ রোহিঙ্গা পালছি। তাঁদের পালতে গিয়ে আমাদের কি কি পোহাতে হচ্ছে, কষ্ট করে কক্সবাজারের মানুষগুলোকে জিজ্ঞেস করলেই হয়।

আমাদের নিজের দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে কতজন বাস করি? তার উপর এই রোহিঙ্গাদের আমরা কোথায় জায়গা দিবো? এদেরকে কি খাওয়াবো, অরাজক পরিস্থিতি শেষ হয়ে গেলে এরা কি ফেরত যাবে? যেতে চাইবে? মায়ানমারই বা কি নিতে চাবে?

তাহলে মাত্র ৫% সীমানা থাকার কারনে কেন আমাকেই এগিয়ে যেতে হবে? কেন বাকী দেশগুলো এগিয়ে যাবে না? তারা কি জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত না? নাকি আমাদের বেলায় এলেই জাতিসংঘের খবরদারি বেড়ে যায়?

এই মানুষগুলোর জন্য আরব বিশ্বের কোন দেশ থেকেওতো কোন প্রতিবাদ দেখলাম না, দেখলাম না কোন রাষ্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ। এরা কি মানুষ না? কেন এরা পানিতে ভাসবে? নিজের দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে যদি তবুও মনে হয় এদেরকে অবশ্যই আমাদের দেশে জায়গা দেয়া উচিৎ তাইলে একটা ছোট্ট গল্প বলি।

এক গ্রামে এক পরিবার বাস করতো ৫ জনের। সুন্দর সংসার মা বাবা আর ভাইবোন ৩ জন। কিছুদিন পর তাদের দুজন দূরসম্পর্কের আত্মীয় বেড়াতে এলো তাদের বাড়ি। এক দিন দুই দিন করে অনেক দিন হয়ে গেলেও তারা আর যায় না। শেষে বাড়ির কর্তা জিজ্ঞেস করে বসলো তোমরা কবে যাবে? এই কথা শুনে তারা জানালো আমরাতো যেতে আসিনি এখানেই থাকবো, আমরা ফিরে যাবো না। আর অবশেষে যে ফল হলো তা হলো বাড়ির মালিককেই ঐ দুইজনের অত্যাচারে তার নিজের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলো।

সরকারের কথা বাদ দিন যদি আপনাদেরকেই বলা হয় দুজন করে রোহিঙ্গা আপনাদের নিজের বাড়িতে থাকার ও খাবার ব্যবস্থা করে দিতে হবে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সে ক্ষেত্রে কি করবেন?

তাই বাস্তবতার নিরিখে চিন্তা করে কথা বলাই উচিৎ।

যা আমরা পারবোনা তা বলা বা করা উচিৎ না। তানা হলে এই মানুষগুলোর সাথে কেবলমাত্র পরিহাসই করা হবে কাজের কাজ কিছু হবে না।       

আপনার মন্তব্য

আলোচিত