সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২১:৩৮

লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করুন, ছিঁড়বেন না

জৈন্তাপুরের ডিবির হাওর এলাকার কয়েকটি বিল সম্প্রতি পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষন হয়ে ওঠেছে। বিলজুড়ে লাল শাপলা ফোটার কারণে এই বিল ইতোমধ্যে 'লাল শপালার বিল' নামে পরিচিতি পেয়েছে।

এখানকার লাল শপালা সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ভিড় করছেন এই বিলে। তবে অনেকে কেবল সৌন্দর্য উপভোগেই ক্ষান্ত না থেকে ছিঁড়ে আনছেন ফুল। ছেঁড়া ফুল নিয়ে ছবি দিচ্ছেন ফেসবুকে। এভাবে শাপলা ফুল ছিঁড়তে থাকলে অচীরেই এই বিলের সৌন্দর্য বিলিন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।

ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে শাপলা না ছেঁড়ার জন্য পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আব্দুল করিম লিখেন-

সম্প্রতি সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ডিবির হাওড় এলাকার 'লাল শাপলার বিল' গণমাধ্যমের কল্যাণে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে । প্রতিদিন সেখানে পর্যটকরা দল বেঁধে যাচ্ছেন । সুন্দরের সন্ধান পেলে মানুষ দর্শনার্থী হবে, সেই সুন্দরের মাঝে অবগাহন করবে সেটাই স্বাভাবিক । কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সুন্দরকে আমরা দেখে অন্তরকে জুড়াতে পারিনা । অন্তর জুড়াতে প্রয়োজন হয় সেই সুন্দরকে দুই হাতে ধরার, প্রয়োজন হয় কচলে দেখার । আমরা সুন্দরকে একান্ত নিজের করে না পেলে পরিতৃপ্ত হই না। তাই লাল শাপলার বিলের রুপ দেখে সেই রূপকে নিজের করে পেতে বৃন্ত থেকে শাপলা ছিঁড়ে নেই।

গত কয়েকদিন ধরে লাল শাপলার বিল দেখতে যাওয়া পর্যটকরা এই কান্ড করছেন । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সচেতন ও অচেতন সকল টাইপের মানুষকেই লাল শাপলার বিলে গিয়ে নৌকা ভরে শাপলা সংগ্রহ করতে দেখছি । শাপলার সাথে মিথস্ক্রিয়া করা রঙ্গিন ছবিতে টাইমলাইন রঙ্গিন হয়ে উঠছে । যদিয় অনেকেই ফেইসবুকে পরিচিতজনকে এমন কান্ড করতে দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন, এমন কাজ না করার উপদেশ দিয়েছেন । অনেকে ভুল বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ দুঃখ প্রকাশ করেছেন । আমিও আমার খুব কাছের দু'একজনকে এমন কান্ড করতে দেখে সমালোচনা করেছি । উনারাও বিষয়টি বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন । কিন্তু এখনো লাল শাপলার বিলে যাওয়া পর্যটকদের ছবি প্রকাশিত হচ্ছে । যা একই দোষে দুষ্ট । যারা অজ্ঞতাবশতঃ এমন কান্ড করেছেন তাঁদেরকে বিব্রত করার জন্য নয়, আগামীতে যারা সুন্দর দেখতে লাল শাপলার বিলে যাবেন তাঁদেরকে সচেতন করার জন্য এ লেখার অবতারণা ।

লাল শাপল বিলের 'শাপলা' প্রাকৃতিক ভাবেই জন্মায়। লক্ষ লক্ষ শাপলায় ভরে যায় হাওর। সেখানকার স্থানীয় মানুষের মহিষের পাল প্রতিদিন শত শত শাপলা খেয়ে সাবাড় করে। গ্রামবাসী নিয়মিত সব্জি হিসাবে শাপলা সংগ্রহ করে, স্থানীয় শিশুরা খেলার ছলে অনেক শাপলা রোজ ছিঁড়ে। এসব কর্মকান্ড চলার পরেও 'লাল শাপলার বিল' লাল হয়ে বেঁচে ছিল। স্থানীয় মানুষ, শিশু ও মহিষের দোহাই দিয়ে নগরের পর্যটকরা শাপলা বিনাশী পর্যটন যদি এভাবে অব্যাহত রাখেন তবে এই সৌন্দর্য বেশী দিন টিকে থাকবে না।


ছবি : প্রথম আলো

আপনার মন্তব্য

আলোচিত