রাবি প্রতিনিধি

০৭ এপ্রিল, ২০১৭ ২২:৪৯

রাবিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ‘অবমাননা’, ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নবনির্মিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের প্রতিকৃতি স্মৃতিফলকের সামনের দেয়ালের নিচের দিকে ফুটিয়ে তোলায় একে অবমাননা অভিহিত করে এই সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাঞ্জু তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে রাবি'র শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, 'গোটা জাতি যেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি বা ছবিকে সবার উপরে রাখে, এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা মহামন্য রাষ্ট্রপতির ছবিরও উপরে বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি নিচে লাগানো হয়েছে। এমন অবমাননা মেনে নেয়া যায় কি? এখনই সময় হোক প্রতিবাদের।'

ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন অনেকেই। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচিত্র নিচে রাখাকে অবমাননা বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ ওই পোস্টে কমেন্টে লিখেছেন, 'প্রতিবাদ ও ঘৃণা কিভাবে জানানো যায় সে ব্যাপারে কৌশল নির্ধারণের জন্য বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের অনুরোধ জানাচ্ছি।'

ফারুক হাসান নামের একজন লিখেছেন, 'রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী সরকার, তখন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এমন অবমাননা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।'

শাহাদাত হোসেন নামের একজন কমেন্ট করেছেন, 'এই মূহুর্তেই ভেঙ্গে ফেলতে হবে এবং যারা এই কু-কর্মের সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে কেউ সাহস না পায়।'

শাহজাহান সিরাজ সম্রাট নামের একজন লিখেছেন, 'হবেই তো। যেখানে সিনেটে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোন ছাত্রনেতার প্রয়োজন হয় না, সেখানে তো এটা হতেই পারে। রাবিতে যারা শিক্ষক রাজনীতি করেন, তাদের অতীত ঘাটলে দেখা যাবে অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধ চেতনার পরিপন্থি। অনেক আওয়ামী লীগের শিক্ষক আছেন, যাদের কাছে চেতনা শেখার জন্য গেলে তারা ঝাড়ি মেরে বলে- তুমি ছাত্রলীগ করো। আমার কাছে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আসতে পারলে আসবা নতুবা আসবা না। আরে নিমকহারাম, আপনি যখন চাকুরি পাওয়ার জন্য মন্ত্রী/এমপি/ছাত্রনেতাদের কাছে গিয়েছিলেন, তখন আপনাকে কি তারা বলেছিল- মেধা নিয়ে আসেন? বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ কাজ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি পাওয়া। চাকুরি তো পান নেতাদের তেল মালিশ করে। তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুঝবেন কি করে? আর এখনকার নেতারাও কি বুঝে যে এদের চাকুরি দেয় আমি বুঝি না। আমি সকল শিক্ষককে একই রকম মনে করি না। এর মধ্যে থেকে আমি অনেককে প্রচুর সম্মান করি।'

এরকম অনেকেই কমেন্ট করেছে স্ট্যাটাসটিতে। তারা সকলেই দাবি করেছেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির অবমাননা করা হয়েছে। তারা প্রতিকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটি সংস্কারেরও দাবি জানিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত