মাসকাওয়াথ আহসান

২৪ জুন, ২০১৭ ১৮:০৫

শিল্পের ক্ষেত্রটি ঔদার্যের ক্ষেত্র

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারত (পশ্চিমবঙ্গ) যৌথ চলচ্চিত্র নিয়ে একটি ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে মনে হচ্ছে। অনেক প্রবীণ চলচ্চিত্র কর্মী এ ব্যাপারে তাঁদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে বাংলাভাষী দর্শকেরা সবাই এক একটি বাংলা চলচ্চিত্রের টার্গেট অডিয়েন্স। সেই টার্গেট অডিয়েন্সের অনেকে হলিউড-বলিউড চলচ্চিত্রের দর্শক। তাই দর্শক ধরে রাখা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। তাই বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তি বৃদ্ধিতে ঢাকা-কলকাতা যৌথতার প্রয়োজন রয়েছে বলেই অনুভূত হয়। আর সেটা হতে হবে যৌক্তিক ও শৈল্পিক বন্ধুত্বের ভিত্তিতে।

ভারত-পাকিস্তান চিরশত্রুতা আর যুদ্ধ যুদ্ধ হাবভাবের মাঝে থেমে নেই তাদের উভয়ের চলচ্চিত্রে শিল্পী ও কলাকুশলী বিনিময়। এতে বলিউডের চলচ্চিত্র উপকৃত হচ্ছে; পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্প ধীরে ধীরে একটি পেশাদার চেহারা পাচ্ছে।

বলিউডের সাম্প্রতিক চলচ্চিত্রে তাদের অনেক গল্প কলকাতা-অভিমুখী হচ্ছে। বলিউডের নির্মাতাদের আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশেও গল্প খোঁজার। কারণ বাঙালি জীবনের মধ্যে শিল্প মিশে থাকে অনায়াসে। কলকাতা আর ঢাকার মতো কাব্যময় শহর খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই ঢাকায় বলিউডের চলচ্চিত্রের শুটিং-এর সুযোগ বিস্তৃত করা প্রয়োজন। চলচ্চিত্র খুব শক্তিশালী মাধ্যম।

বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং-এর নামে সীমাহীন খরচাদি করেও কোন সুফল আসেনি। কারণ দর্শক বিজ্ঞাপনে, বিজ্ঞাপন ধর্মী প্রামাণ্যচিত্রের চেয়ে চলচ্চিত্রকে অনেক বেশী বিশ্বাসযোগ্য মনে করে। একটি দেশ বা শহর চলচ্চিত্রের গল্পের মাঝ দিয়ে যতটা সুন্দর ও উষ্ণ হয়ে ধরা দেয়; তা আর কোন ভাবেই সম্ভব।

শিল্পের ক্ষেত্রটি ঔদার্যের ক্ষেত্র। এখানে গতানুগতিক "আমরা বনাম ওরা", "উনারা বনাম তিনারা" করে শেষ পর্যন্ত যে কোন কাজ হয়না; তা এরই মাঝে প্রবীণ ও নবীন চলচ্চিত্রকর্মীদের বুঝে ফেলা স্বাভাবিক ছিলো।

  • মাসকাওয়াথ আহসান: লেখক, সাংবাদিক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত