সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ২১:০৮

মাহফুজুর রহমানের প্রশংসায় তসলিমা নাসরিন

এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের গানের অনুষ্ঠান নিয়ে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে তখন লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাঁর প্রতিক্রিয়া লিখেছেন ফেসবুকে। ফেসবুকে দেওয়া তাঁর এক স্ট্যাটাসে তসলিমা নাসরিন মাহফুজুর রহমানের শিল্প-সাহিত্যের প্রতি দরদ দেখে বলছেন, ইনি (মাহফুজুর) আর সব কোটিপতির চেয়ে ভিন্ন।

গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এটিএন বাংলায় ‘স্মৃতির আল্পনা আঁকি’ শিরোনামে চ্যানেলটির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রচারিত হয়। এরপর এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা মন্তব্য, স্ট্যাটাস আসছে।

তসলিমা নাসরিন মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাঁর ভেরিফায়েড আইডিতে লিখেন-
ফেসবুকে বাংলাদেশের মানুষ কাল থেকে হাসছে। হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে। কারণ এটিএন চ্যানেলের কর্ণধার মাহফুজুর রহমান গান গাইতে না জেনেই গান গেয়েছেন চ্যানেলে।বাজে লিরিক, বাজে সুর, বাজে কণ্ঠ। টাকা আছে বলে টপ মডেলদের দিয়ে অভিনয় করিয়েছেন। গানের কথার সঙ্গে মিলিয়ে হাত পা নেড়েছেন, সোজা কথায় আনকুথ আর আউটডেটেড। সব মানছি। কিন্তু কিছু পজিটিভ জিনিস ভাবছি


কোটিপতিরা টাকা কামানোর ধান্দায় থাকে। মদ আর 'মেয়েমানুষ' নিয়ে প্রমোদ তরী ভাসায়। দুর্নীতি দুষ্কর্ম এত করে যে পাবলিকের সামনে পারতপক্ষে আসে না। তাদের গান গাওয়ার শখ-টখ থাকে না। এই লোকটি শিল্প সাহিত্যে মন প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন। ইনি আর সব কোটিপতির চেয়ে ভিন্ন।


গানের কথাগুলো সবই কোনও নারীকে নিয়ে, যাঁকে তিনি খুব ভালোবাসেন। তাঁর সব গানই ভালোবাসা আর বিরহের গান। কোনও নারীকে খুব মিস করছেন, ফিরে আসতে বলছেন। যাঁকে ছাড়া তাঁর কিছু ভালো লাগছে না। সেই নারীর সঙ্গে ছিল তাঁর সুখের জীবন। সেই সুখের জীবন এখন আর নেই তাঁর। ফিলদি ধনীরা সাধারণত এমন স্বীকারোক্তি করে না। তাদের এক গেলে আরেক আসে। কারো জন্য তারা কাঁদে না। এই লোকটি ভিন্ন। লোকটি প্রেমিক। হয়তো আউটডেটেড প্রেমিক কিন্তু প্রেমিক। উদার। সংবেদনশীল।


ধনীদের অনেক রকম স্বপ্ন বা সংকল্প থাকে। কোনও প্রাসাদ বা কোনও জাহাজ বা কোনও ক্যাসিনো কিনে ফেলা। বা বিশাল কোনও জুয়োয় জিতে যাওয়া বা কাউকে ঠকানো, বা কোনও জাতশত্রুকে খুন করা। কিন্তু এই লোকটি ওসব কিছু চাইছেন না, তাঁর নিজের চ্যানেলে একটু গান গাইতে চেয়েছেন, এই যা।


লোকটি ভাল গান গাইতে পারেন না বলে শুটিং বা এডিটিং-এর সময় তাঁর কর্মচারীরা নিশ্চয়ই তুমুল হেসেছে। তিনি তাদের হাসির শব্দ শুনতে পাননি। তাঁকে নিশ্চয়ই মিথ্যে প্রশংসা করে বোকা বানানো হয়েছে। এত প্রতাপশালী হয়েও মানুষ যে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করছে তা বুঝতে পারছেন না। বড় সরল সোজা তিনি, বড় সাদাসিধে।

গান গাইতে জানেন না, তারপরও আবেগ তাঁর এত বেশি যে, গান গাওয়া শিখে তারপর গাইবেন, তর সইলো না। গেয়ে দিলেন। একটুও ভাবলেন না লোকে যে মন্দ বলবে। এর মানে তাঁর ইমোশান মাত্রাছাড়া। এত ইমোশান ফিলদি ধনীদের সাধারণত থাকে না। তারা বুঝে শুনে চিন্তা ভাবনা করে প্রতিটা স্টেপ ফেলে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত