লীনা পারভীন

১৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ২০:৫৬

যশোর রোডের গাছের সঙ্গে বাংলাদেশ-জন্মের সম্পর্ক

ছবি: সংগ্রহ

যশোর রোডের গাছগুলো কাটার পিছনের যুক্তি হচ্ছে বাস্তবতার নিরিখে রাস্তাকে প্রশস্ত করা। অবশ্যই। রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয়ে কোন দ্বিমত নেই।

যারা এই শতবর্ষী গাছগুলোর জন্য কেঁদে যাচ্ছেন, তাদেরকে রক্ষার আবেদন জানাচ্ছেন, তাদের কান্নার সুরটা কিন্তু অন্য। এই ভাষাটাকে বুঝাটাও একটু প্রয়োজন। এখানে ‘পরিবেশবাদী’ ট্যাগ দেবার আগে ভেবে দেখুন একবার।

এই গাছগুলো জড়িয়ে আছে আমাদের ‘বাংলাদেশ’ নামটির সৃষ্টির সাথে। ৭১ সালের সেই বিভীষিকাময় দিনে যেসব অসহায় মানুষ সেই রাস্তা ধরে প্রাণভয়ে রাতের অন্ধকারে পালাচ্ছিলেন একটি নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে, সেই তাদের কাছে এই রাস্তাটি হয়ে আছে একটি ইতিহাসের অংশ। এই গাছগুলো তাদের অনেক চোখের পানির সাক্ষী। হয়তো ক্লান্তিতে ভেঙে পড়া আমার সেই বৃদ্ধ বাবা মাকে মমতার ছায়া দেয়া আশ্রয়ের সাক্ষী এই গাছগুলো।

আমাদের ইতিহাসকে আমরা কেটে ফেলতে চাই না। আঁকড়ে ধরেই নতুন করে বেঁচে থাকার রাস্তা বানাতে চাই। আমরা না পারি, আধুনিক বিশ্বের কোথাও না কোথাও সেই প্রযুক্তি নিশ্চয়ই আছে যেখানে গাছগুলোকে উপড়ে না ফেলেই রাস্তাকে বড় করা যায়।
কত টাকাই তো কত জায়গায় চুরি হয়ে চলে যাচ্ছে। না হয় এই একটি উদাহরণ আমরা তৈরি করি যেখানে বিশ্ব দেখবে একটি দেশ তার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখবে বলে গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে জানে।

বাংলাদেশ তো ইতিহাস সৃষ্টি করে। না হয় আরেকবার করলাম।
জয় বাংলা।

  • লীনা পারভীন: সাবেক ছাত্রনেতা, কলাম লেখক।
  • [ফেসবুক থেকে]

আপনার মন্তব্য

আলোচিত