জাকির তালুকদার

২০ জানুয়ারি, ২০১৮ ১১:১১

একজন লতিফ সিদ্দিকী ও পূর্ণিমার ভাইয়ের কথা

লতিফ সিদ্দিকী তখন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। একই সাথে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য। তিনি আমার প্রকাশকও। নান্দনিক প্রকাশনী চালাচ্ছেন। আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মন্ত্রীপাড়ার বাসভবনে লেখালেখি বিষয়ক আড্ডার জন্য।

রাত্রি ৯টার দিকে এক তরুণ ঢুকল ঘরে।

মন্ত্রীর কাছে এসেছে পরদিন একটা চাকুরির ইন্টারভিউয়ের সুপারিশ করানোর জন্য। একথা শুনে ভুরু কুঁচকে উঠল লতিফ সিদ্দিকীর। বিরক্ত হয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তার আগেই তরুণ বলল যে সে পূর্ণিমার ভাই। সঙ্গে সঙ্গে লতিফ সিদ্দিকী চেয়ার থেকে উঠে হাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নিলেন তরুণকে।

একেবারে কাছে বসিয়ে জানতে চাইলেন, কার কাছে সুপারিশ করতে হবে। ছেলেটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। টিএন্ডটি-তে ইন্টারভিউ দেবে। চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে ফোন করতে গিয়েও থেমে গেলেন লতিফ সিদ্দিকী। একেবারে শেষ সময়। তারা ইতোমধ্যে নিজেদের ক্যান্ডিডেট সব ঠিক করে ফেলেছে কি না কে জানে!

লতিফ সিদ্দিকী ডাকলেন তাঁর পিএস-কে। বললেন- এই ছেলেটার কাগজপত্র রেখে দাও। কাল সকালে আমার অফিসে আসবে সে। জয়েন করবে আমাদের ডিপার্টমেন্টে।

সেই প্রথম এবং একবারই ক্ষমতার অপব্যবহার দেখে খুশি হয়েছিলাম।

এই ঘটনার কথা আমি কোথাও বলিনি। লতিফ সিদ্দিকীও বলেননি। মিডিয়ার বাহবা কুড়োতে চাননি তিনি।

আজ ধর্ষিতা পূর্ণিমাকে পুনরায় ধর্ষণ করল মিডিয়া এবং হাততালি-লোভীদের দল।

  • জাকির তালুকদার: বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক

(ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত