মাসকাওয়াথ আহসান

১৩ মে, ২০১৮ ১৪:৫০

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: কতিপয় মিডিয়ার রুচি ও ভাষাসংস্কৃতি

কিছু সংবাদ মাধ্যম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উড্ডয়নের প্রথম প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হবার পরে বঙ্গবন্ধুর নামটি স্যাটেলাইটের সঙ্গে থাকায় কৌশলে একটি অত্যন্ত আপত্তিজনক শিরোনামে রিপোর্ট করেছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাইবার ইউনিটের কর্তব্য হবে এই সংবাদ মাধ্যমগুলোকে খুঁজে বের করা।

লাইসেন্স বা নিবন্ধন প্রাপ্ত মিডিয়ার ভাষারীতি কখনোই সিপি গ্যাং বা বাঁশের কেল্লার মতো নিম্নরুচির ফেসবুক পেজের ভাষারীতির মতো হতে পারে না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা শিরোনামটি ছিলো বিদ্বেষপূর্ণ-অসম্মানজনক। সভ্যসমাজে গণমাধ্যম পরিচালনা করতে গেলে মিডিয়া নৈতিকতা মেনেই করতে হবে।

মিডিয়ার নৈতিকতা ও শালীনতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইন আছে; প্রেস কাউন্সিলের মত প্রতিষ্ঠান আছে। যে গণমাধ্যমগুলো বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনৈতিক ও অশালীন শিরোনাম করেছে; তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তাদের কৃত অপরাধের জন্য বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান প্রেস কাউন্সিলের একান্ত কর্তব্য।

মিডিয়ার সামগ্রিক রুচি ও ভাষাসংস্কৃতির সভ্য মান ধরে রাখতেই প্রেস কাউন্সিলের সক্রিয় ভূমিকা আবশ্যক।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে "খবরের কাগজের মতো ফটোশপ তৈরি করে" ঐ একই অশালীন শিরোনাম বানিয়ে প্রচার করেছে কিছু কিছু ফেসবুকার। সূক্ষ্ম অপরাধ প্রবণতার বিরল দৃষ্টান্ত এসব অশ্লীলতার কলাকৌশল।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাইবার ইউনিটকে এরকম অপরাধীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে খুঁজে পাওয়া যায়না। তারা প্রায়শ শৌখিন শিকারে দুর্বল লোকজনকে নিয়ে সক্রিয়তা দেখায়; অথচ আসল অপরাধীদের ক্ষেত্রে নির্লিপ্ত।

আমাদের স্বীকার করতে হবে আমাদের সাংস্কৃতিক দৈন্য। এখানে মানুষ সমালোচনা মানে অশালীন ভাষায় গালাগাল বোঝে; আলোচনাকে ঝগড়া মনে করে। এর কদর্য রূপ ধরা পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে; গণমাধ্যমে সুপ্ত অশ্লীলতার কামনা ইদানিং প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।

সমাজের এসব মধ্যযুগীয় প্রবণতার অবসান ঘটাতে হবে। সভ্য সমাজের নিয়ম হচ্ছে সভ্য সংলাপ। কোন বক্তব্য বা ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় উস্কানি সৃষ্টি করা, মানুষকে গালাগাল করা, জুতা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা বা চাপাতি নিয়ে কোপ দিয়ে আসা এগুলো উপমানবীয় প্রবণতা। সমসাময়িক বিশ্বে ও চিন্তায় এগুলো অচল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত