রাহাত মুস্তাফিজ

১২ জুন, ২০১৮ ০১:৪৩

‘মতপ্রকাশের জবাব ওরা গুলি করে দেয়’

জাতিসংঘের একটা সংস্থায় চাকরি হয়েছে আমার। আজ বিকেলে ওরা কনফার্ম করলো। ভেবেছিলাম এই খুশির খবরটা সবাইকে জানাবো। আর আজকেই ওরা আপনাকে মেরে ফেললো বাচ্চু ভাই। এইতো পরশুদিন বামদের কার্যকলাপের সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছিলাম। কমেন্টে লিখেছিলেন, ''কথা মন্দ কন নাই''। কথা আপনিও মন্দ বলতেন না ভাই। কিন্তু আপনার ওই কথাগুলো হজম করার মতো শক্তি-সাহস ওদের কখনও হয়ে ওঠেনি।

মুন্সিগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা। কবি ও প্রকাশক হিসেবেও আপনার নাম ছিল। অনেকের অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন। রঙ্গ-রস করতেন স্ট্যাটাসে-কমেন্টে। ষাটোর্ধ বয়সেও তারুণ্যের দুর্দান্ত সাহসে মহীয়ান ছিল আপনার জগত ও যাপিত জীবন।

চিরযুবা বাচ্চু ভাই কী করে ভুলি আপনাকে। এ কেমন দেশ আমাদের। এ কেমন সময়! মত প্রকাশের জবাব ওরা পালটা যুক্তি দিয়ে নয়, গুলি করে দেয়। এই কী স্বাধীন দেশ! এই কী ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ! এরকম একটা দেশের জন্য লড়েছিলেন আমাদের পিতা-মাতারা? এমন ভীতিকর শ্বাসবন্ধ হয়ে আসা ভূখণ্ডের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন ৩০ লক্ষ শহীদ?

বাচ্চু ভাই, এখনো বেঁচে আছি বলে অপরাধবোধ হয়। ওই অপরাধবোধ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। দু'একটা পোস্ট লেখা ছাড়া কিছুই করার নেই। আপনার প্রিয় পার্টি ডজন ডজন ঐতিহাসিক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করছে যুগ যুগ ধরে। জনসমর্থন হারিয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে আছে তারা। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে আপনার হত্যার বিচার আদায় করে নেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই। সরকারের ইফতার পার্টিতে নেতারা আপাতত বেহাত বিপ্লবের রণকৌশল খুঁজছে। তবে এইসব দৃশ্যের পরিবর্তন নিশ্চয়ই হবে। অন্ধকার চিরস্থায়ী হয় না কখনো। আলো আসবেই। আসতেই হবে।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত