আব্দুল করিম কিম

০৯ জুলাই, ২০১৮ ২২:১৫

এখানকার নির্বাচন একটি বিশেষ শ্রেণিভুক্ত মানুষের জন্য

বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তাপ শেষ হতে চলেছে। সেই উত্তাপ থাকাকালেই দেশের তিনটি প্রধান মহানগরে অনুষ্ঠিতব্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। তিন মহানগরের হোটেল-রেস্তোরাঁয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক আড্ডায় সিটি নির্বাচন এখন নাগরিক আলোচ্য। সেই উত্তাপ বাড়িয়ে দিতে গণমাধ্যমকর্মীরাও ব্যস্ত।

স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকাতে প্রায় প্রতিদিন নির্বাচন নিয়ে নানামুখি প্রতিবেদন ও কলাম লিখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের নির্বাচনী অনুষ্ঠান শুরু করেছে। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের সে সব অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে নাগরিক আন্দোলনের একজন সংগঠক হিসাবে আমাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়।

নির্বাচন নিয়ে এসব অনুষ্ঠানে অতিথিদের কাছে নাগরিক সমস্যা, নির্বাচন নিয়ে প্রত্যাশা সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। নিজ নিজ অবস্থান থেকে অতিথিরা নিজেদের ভাবনা তুলে ধরেন।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও একাধিক কাউন্সিলর পদে নির্বাচন হলেও এসব আলোচনার মূল আগ্রহ থাকে 'মেয়র' নিয়ে। তিনটি সিটিতেই প্রায় কমন একটি প্রশ্ন থাকছে 'কেমন মেয়র চাই?' সীমিত সময়ের অনুষ্ঠানে বেশী কথা বলার সুযোগ থাকে না। সব কথা টিভি অনুষ্ঠানে বলা যায় না। অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে আকাশকুসুম চয়ন করেন। দিনশেষে দেখেন ছাই হয় সব হুতাশে।

আমাদের জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচনী সংস্কৃতি দেশ ও দশের কল্যাণ করার জন্য নিবেদিতপ্রাণ মানুষের জন্য নয়। এখানকার নির্বাচন একটি বিশেষ শ্রেণিভুক্ত মানুষের জন্য। সেই শ্রেণিভুক্ত মানুষের থাকতে হবে অঢেল কড়ি।
নিজের না থাকলেও নির্বাচন উপলক্ষে 'কড়ি' আমদানি করতে হবে। যে কড়ি ফেলবে সেই তেল মাখবে । কড়িও উলুবনে ফেলা যাবে না। অনেক ছক কষে কড়ি ফেলতে হবে । কড়ির পাশাপাশি প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহের ছায়ার নিচে থাকতে হবে। দলীয়ভাবে হোক বা জোটগত ভাবে হোক প্রধান দুইধারার রাজনৈতিক বটগাছের ছায়া না থাকলে নির্বাচনে দাঁড়ানো অর্থহীন। তাই নাগরিকরা আকাশ কুসুম স্বপ্ন নিয়ে কেমন মেয়র চাই বললেও যা সামনে তুলে ধরা হয় তা থেকেই বেঁছে নিতে হয়।

অনেকক্ষেত্রে পরিস্থিতি এমন হয় যে, ব্যালট পেপার হাতে নিয়ে চিন্তা করতে হয় 'গু' না 'গোবর' । চিন্তাশীলরা অনেক ভেবে হয়তো 'গোবর' বেছে নেন।

(ফেসবুক থেকে)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত