মাসকাওয়াথ আহসান

২০ জুলাই, ২০১৮ ১৬:০০

মামলাকারীরা সাংবাদিকতা পেশায় বেমানান

একটি সাংবাদিক সংগঠনের নির্বাচনে অস্বচ্ছতা ও কারচুপির অভিযোগ করেছিলেন শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ। গণতন্ত্র নামের প্রতিষ্ঠানে "নির্বাচনে অস্বচ্ছতা ও কারচুপির অভিযোগ" উত্থাপনের অধিকার সংরক্ষিত। যাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তারাও সাংবাদিকতা পেশার মানুষ। তাদের এটা জানার কথা ছিলো যে, নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপিত হলে তার জবাবদিহি বাধ্যতামূলক। সেটি গণতান্ত্রিক চর্চারই অংশ।

সেই জবাবদিহিতে না গিয়ে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা জাফর ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ৫৭ কালো ধারায় মামলা করেছে।

কালো ধারায় মামলা করে জবাবদিহিবিমুখ অশিক্ষিত-অসংস্কৃত লোকেরা। সাংবাদিকতা পেশায় থেকে মামলাবাজি খুবই বেমানান। তাই এই মামলার ঘটনা সাংবাদিকতা পেশার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক একটি ঘটনা।

এই ধারণা খুব প্রচলিত যে আমাদের সমাজে নতুন শিক্ষিত লোকেরা একটি মামলা করে নিজের শিক্ষার বহর দেখিয়ে দেয়। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় ঠিকঠাক শিক্ষিত লোকেদেরই আসার কথা; যারা গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতে বিশ্বাসী; যারা যে কোন অভিযোগ খণ্ডন করতে সক্ষম হবেন যৌক্তিক ভাষায়।

তাই এই মামলা মামলাকারীদের সাংবাদিকতা পেশায় বেমানান প্রমাণ করেছে।

জাফর ওয়াজেদ সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে একটি সৎ, সাহসী ও উজ্জ্বল নাম। তার প্রজ্ঞা ও জানাশোনা তরুণ সাংবাদিকদের অনুপ্রাণিত করে ঠিক-ঠাক জেনে সাংবাদিকতা করার লক্ষ্যে। এ প্রজন্মের সাংবাদিকরা অনেকেই কোন তথ্য ও রেফারেন্স সম্পর্কে নিশ্চিত হতে জাফর ওয়াজেদের শরণাপন্ন হয়।

সাংবাদিকতা পেশা থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া প্রজ্ঞা ও নিরাপোষ মনোভঙ্গির প্রত্ন চিহ্নই যেন জাফর ওয়াজেদ। তিনি একটি নির্বাচনের অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায়; সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মামলা করা প্রমাণ করে; যাদের অন্য কোন মামলাবাজ পেশায় থাকার কথা; তারা জোর করে সাংবাদিকতা পেশায় জায়গা করে নিয়েছে।

আমরা আশা করি সাংবাদিকতা পেশার সম্মান রক্ষায় এরকম কালো ধারায় মামলা করা সাংবাদিকরা মামলাটি তুলে নেবেন।

একজন সাংবাদিক যদি বাক-স্বাধীনতার টুটি চেপে ধরা ৫৭ ধারার মামলা চর্চা করে; তাহলে তা নিঃসন্দেহে সাংবাদিকতা পেশার মৌল আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়ায়।

  • মাসকাওয়াথ আহসান: লেখক, সাংবাদিক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত