মাহমুদুল হক

০৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০১:১২

প্রয়াস কমলগঞ্জ

ভাবছিলাম কিছুদিন পরেই লিখবো। কিন্তু কালীপ্রসাদ হাইস্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী পলি মালাকারের পরীক্ষার ফি সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর মনে হলো এ তহবিলের বিষয় কমলগঞ্জের মানুষের জানা দরকার।

যদিও পলিকে কেউ বের করে দেয়নি কিন্তু তার চোখের জল তো মিথ্যে নয়। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শত শত পলি রয়েছে পরীক্ষা এলেই ফি এর জন্য উদ্বিগ্ন হয়, মা-বাবাকে বারবার বলতে থাকে। কিন্তু যাদের বাবা নেই তাদের সংখ্যাওতো কম নয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকে দেখছি অনেক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী কখনো পরীক্ষার ফি,বই কেনা, স্কুল-কলেজে ভর্তি ফি এসবের জন্য আমার অফিসে আসে। বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতার চেষ্টা করি। একসময় ভাবলাম স্থানীয় বিত্তবানদের সহায়তায় দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ী তহবিল গঠন করা যায় কীভাবে? কয়েকমাস সময় নিয়ে একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হলো। কোন প্রচার না করলেও ইতোমধ্যে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা "প্রয়াস কমলগঞ্জ " এর তহবিলে জমা হয়েছে।

কয়েকজন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে ১লক্ষ টাকা করে এবং আজীবন সদস্য হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে তহবিলে প্রদান করেছেন।

তাঁদের অনুমতি সাপেক্ষে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর নাম প্রকাশ করা হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্থায়ী তহবিল ব্যয় করা যাবে না, আমানতের উপর যে ইন্টারেস্ট পাওয়া যাবে সেটাই দরিদ্র মেধাবীদের বৃত্তি হিসেবে দেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদাধিকার বলে সভাপতি এবং স্থানীয় একজন ব্যক্তি সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আমি জানি প্রয়াস কমলগঞ্জ একদিন বিত্তবানদের সহযোগিতায়  কোটি টাকার তহবিলে পরিণত হবে এবং শত শত দরিদ্র মেধাবীর উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করবে।  সেদিন আমি কমলগঞ্জে না থাকলেও প্রয়াস কমলগঞ্জ দরিদ্র-মেধাবীদের জীবনে আশার দ্বীপশিখা হয়ে জ্বলবে।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)
মাহমুদুল হক: ইউএনও, কমলগঞ্জ উপজেলা, মৌলভীবাজার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত