আলমগীর শাহরিয়ার

০৮ অক্টোবর, ২০১৮ ২২:৫১

দেশটা ‘হিরোর’ নাকি হিরুর?

জন্মের পর থেকে দেখে আসছি ‘হিরো’ মানে নায়ক। ইলিয়াস কাঞ্চন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন করে আসছেন। সম্প্রতি তার আন্দোলন একটা পরিণতি দেখেছে এদেশে সীমাহীন পরিবহন নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা কিশোর বিপ্লবের নয়া জামানার বারতার মাধ্যমে।

কোন কিছু না ভেঙেও--সব ভেঙেচুরে তছনছ করে চোখে আঙুল দিয়ে নয়, জং ধরা বার্ধক্যের দোষে মুখোশে আবৃত চিরকাল সিস্টেমের যে চোখ, সে চোখে আঙুল ঢুকিয়ে তারা দেখিয়ে দিয়েছে এদেশের অন্তহীন পরিবহন নৈরাজ্যের কুৎসিত রূপ, নমুনা।

সে আন্দোলনে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন নৈতিক সমর্থন বা বুদ্ধিজীবীদের মত একটা বিবৃতি দিয়ে নিরাপদে ঘরে বসে টিভি টক শো'র ঝড় দেখেননি, রাস্তায় নেমে এই আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন। সেই অপরাধে, ক্ষোভে তাকে দেশের সকল টার্মিনালে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

গত শনিবার সমাবেশে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ সাত দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে। দাবি মানা না হলে ১৩ অক্টোবর থেকে সারাদেশে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে তারা।

সেই স্বার্থান্বেষী হুমকি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাদিকুর রহমান হিরু, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি।

এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ ঘোষণার পরও হিরুদের কেশাগ্রটিও কেউ ছুঁতে পারবে না। কখনো কোন সরকার পারেনি।

তাই সারাদেশে জনগণের পক্ষ থেকে আরও শক্ত ও কঠোর পরিবহন আইন প্রণয়নের যে জোর দাবি উঠেছিল তা চাইলেও করতে পারেনি সরকার। অথচ মোক্ষম একটি সুযোগ এসেছিল।

এমন ঘোষণার পর আশঙ্কা করছি ইলিয়াস কাঞ্চন পরিবহন সন্ত্রাসদের দ্বারা পথে ঘাটে লাঞ্ছিত হতে পারেন!

গায়েবি বাদীর গায়েবি চাঁদার দাবিতে করা মামলায় সড়ক অব্যবস্থাপনা ও যাত্রীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী আইন আদালতের কানামাছি খেলায় যেমনটা হেনস্তার শিকার হলেন।

তাই প্রশ্ন জাগে দেশটা কি ‘হিরো’র না ‘হিরু’র? নায়কের না ভিলেনের?

  • আলমগীর শাহরিয়ার: কবি, প্রাবন্ধিক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত