অনলাইন ডেস্ক

১২ অক্টোবর, ২০১৮ ১২:৩৬

সেই ভিডিও নিয়ে যা বললেন এমপি মনির

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনিরকে স্কুলছাত্রীদের বরণ করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বৃহস্পতিবার যশোরের চৌগাছা উপজেলার এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফুল হাতে নিয়ে ছাত্রীরা এমপি মনিরুলসহ অন্যান্য অতিথিদের বরণ করে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, এমপি মনির ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ রুমের মধ্যে বসে আছেন। একদল ছাত্রী ফুলের মালা হাতে অতিথিদের সামনে দাঁড়াল। তারপর তারা ‘ ধন ধান্য পুষ্প ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা....গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফুল হাতে করজোড়ে প্রণামের মত করে মাথা নত করে উঠছে আর বসছে। পাশ থেকে একজন শিক্ষক ছাত্রীদের শিখিয়ে দিচ্ছে।

অতিথিদের সামনে দাঁড় করিয়ে ছাত্রীদের এভাবে উঠবস করার ৪ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি নিয়ে ফেসবুকে তুমুল সমালোচনা চলছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংসদ অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির বৃহস্পতিবার রাত ১১:৫১ মিনিটে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন।

ওই স্ট্যাটাসে এমপি মনির দাবি করেন, এই ভিডিওটি নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল জাতীয় সংসদের একজন সদস্যের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির সঙ্গে মাননীয় সংসদ সদস্যের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

তিনি আরও জানান, একজন অতিথির পক্ষে কোনভাবেই জানা সম্ভব নয় যে স্টেজে কী পারফর্ম হবে।

সাংসদ মনিরের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সিলেটটুডের পাঠকদের জন্যে হুবহু প্রকাশ করা হলো:

ম্মানিত সুধী,
আপনাদের সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভাইরালে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের মালা পরিয়ে দেয়ার একটি ভিডিও নিয়ে সমালোচনা করা হচ্ছে। যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আজ ১১ অক্টোবর,সকাল ১০ টায়,যশোরের চৌগাছায় অবস্থিত এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলাম আমি জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ ৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান। তাঁরা হলেন- ১. জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আবুল হোসেন, ২. উপজেলা সাবেক কমান্ডার নূর হোসেন, ৩. সাবেক কমান্ডার শওকত আলী, ৪. সাবেক ডেপুটি কমান্ডার কিতাব আলী, ৫. উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা শাহাজান কবীর।

আমাকে এবং জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানাতে ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা দেশাত্ববোধক গানের সঙ্গে বিনম্র শ্রদ্ধায় ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে স্কুল মাঠে শিক্ষার্থীদের ঐ ডিসপ্লেটি করা সম্ভব হয়নি। একারণে প্রধান শিক্ষকের পিড়াপিড়িতে এক পর্যায়ে স্কুলের ক্লাসরুমের ভেতরে স্বল্প পরিমাণ জায়গায় ডিসপ্লে টি করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ডিসপ্লের সামনে জায়গা না থাকায় এবং অতিথিদের আসন ডিসপ্লের নিকটে হওয়ায় ডিসপ্লেটি দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে ভিডিওতে।

উল্লেখ্য, একজন অতিথির পক্ষে কোনভাবেই জানা সম্ভব নয় যে স্টেজে কী পারফর্ম হবে।

এই ভিডিওটি নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল জাতীয় সংসদের একজন সদস্যের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির সঙ্গে মাননীয় সংসদ সদস্যের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এই ফুলেল শুভেচ্ছার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক (বিএনপি সমর্থিত) শাহজাহান কবীর। ঐ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিএনপি থেকে নির্বাচিত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান। কৌশলগত কারণে তিনি অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভবনের উদ্বোধন করতেই সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ভেন্না পাতার চেয়েও খারাপ টিনের ছাপরা ছিল চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।

"বিদ্যানন্দিনী প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেটি পাকা করে দেওয়ায় বাচ্চারা প্রখর তাপ আর ঝড়বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবে। সোনার টুকরা ছাত্রছাত্রীরা খুশী, অভিভাবকগণ, শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ খুশী। যে স্কুল ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০১৮ তে এসে আজকে বিদ্যানন্দিনী জননেত্রী শেখ হাসিনা'র কল্যাণে পাকা দালান পেল সেইরকম দিনে এসেও কেউ এটা নিয়ে কু-রাজনীতি করতে পারে এটা সত্যিই লজ্জাজনক"।

ভিডিওটির কারণে কারো মনে অযাচিতভাবে আঘাত দিয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত