রাজেশ পাল

০৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১১:২৫

টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হচ্ছে ছাত্রলীগ

গত দুইদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চোরাগোপ্তা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ছাত্রলীগের বর্তমান এবং সাবেক বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।

ইতিমধ্যেই পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজ হতে জানা গেছে, টার্গেট করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হত্যার কিলিং মিশন হাতে নিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। এ হত্যাকাণ্ডগুলো সম্ভবত এই নীল নকশা বাস্তবায়নেরই অংশ বিশেষ।

এ সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ে অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকারই ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। আর যুদ্ধাপরাধীদের সিংহভাগই ছিল জামায়াতের ইসলামীর রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত।

যদিও সেসময় বাম ও সুশীলদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, "এই সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেনা। কারণ জামায়াতের সাথে তাদের গোপন রাজনৈতিক আঁতাত রয়েছে।"; "জামায়াত না থাকলে তারা রাজনীতি করবেন কাদের নিয়ে?" ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি

কিন্তু ঐ যে বলে, "বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়"। সব ধরণের আঁতাত থিওরির মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে একে একে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়, নিজামী, মুজাহিদ,কাদের মোল্লা, কামরুজ্জামান সহ সকল যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের। চার দশক ধরে যাদের হাত ছিল বোনের সম্ভ্রম আর ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত।

এদেশে মাত্র বছর দশেক আগেও কেউ আসলেই ভাবতে পারেনি যে জীবদ্দশায় এদের বিচার করা কোনোদিন আদৌ সম্ভব হবে। কারণ অর্থ, বিত্ত, প্রতিপত্তির বদৌলতে এদেশের মানুষকে বরাবরই বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে গেছে তারা। আর ম্যাডাম খালেদা জিয়ার বদৌলতে মন্ত্রী হয়ে নিজেদের গাড়িতে লাল সবুজের পতাকা উড়িয়েছে নিজামী মুজাহিদরা। যে পতাকা ঠেকাতে যারা একদিন রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিলো তারা এদেশের মাটিতে।

কিন্তু অবশেষে তাদের সুখনিদ্রার অবসান হয়। বিচারে ফাঁসি হয় তাদের। ৪০ বছর ধরে আকাশে বাতাসে হাহাকার করে ফেরা বীর শহীদদের অতৃপ্ত আত্মা পান চিরশান্তি। কিন্তু নেতাদের এই ফাঁসি মেনে নিতে পারেনি তাদের উত্তরসূরিরা। শুধু নেতাদের ফাঁসি নয় একে একে চট্টগ্রাম আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর মতো দুর্ভেদ্য ঘাটিগুলোও হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের। বন্ধ হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার কোচিং ব্যবসা। ফলে ভেতরে ভেতরে তীব্র ক্ষোভে ফুসতে থাকে তারা। আর খুঁজতে থাকে মোক্ষম সুযোগ।

পেট্রোলবোমা নিয়ে, কোটা আন্দোলনের ছদ্মবেশে, এমনকি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকেও ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চালায় তারা। আর তারই ধারাবাহিকতায় এখন দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তাদের গুপ্তহত্যার মিশন।

হুমায়ূন আজাদ স্যার বলেছিলেন, "মানুষ যেমন সাপ চেনেনা, বাঙালিও চেনেনা জামায়াতকে"- আর সেই কালসাপের মরণ কামড়ই শুরু হয়ে গেছে এবার। কাজেই হুশিয়ার সাবধান বন্ধুগণ।

সময় থাকতে প্রতিরোধ গড়ে তোলা না গেলে এই কালসাপের দংশনের বিষে নীল হয়ে যেতে হবে পুরো জাতিকে।

পশ্চিম গগনে ঝড় উঠেছে, ঘনিয়ে এসেছে রাতি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত