শাহআলম সজীব

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৭:৫৩

সে আপনারাই ‘নাই’ হয়ে গেলেন!

ছাত্রলীগের যে ১০৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তাদের ব্যাপারে কি কোন সিদ্ধান্ত এসেছে? এদের মধ্যে ২৫ জন বিবাহিত, ১৯ জনের পরিবার সরাসরি বিএনপি কিংবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল, ১১ জন মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, ৮ জন বিভিন্ন মামলার আসামি, ৬ জন ব্যবসায়ী, ৩ জন বিভিন্ন অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কৃত, ২ জন ছাত্রলীগ থেকে আগে বহিষ্কৃত, ৬ জন ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা, ৬ জন সরকারি চাকরির জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত। ১৪ জন প্রথমবারের মতো সংগঠনে পদ পেয়েছে। ৭ জন দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার পরও পদবি পেয়েছিল।

উপরের উল্লেখিত অভিযুক্তদের ছাত্রলীগে পদপদবি দেওয়া হয়েছিল অনেক পরিশ্রমী, ত্যাগী, নির্যাতিত, নিপীড়িত এবং খাটি আওয়ামী লীগ পরিবারের অনেক নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল তারা বঞ্চিত হোক তবুও যেন প্রকৃত কর্মীদের দিয়ে কমিটি হবে, কমিটিতে রাজপথের ত্যাগী শেখ হাসিনা অন্তপ্রাণ নেতাকর্মীরা থাকবে।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশের পর যখন একে একে পদপদবিধারী নেতাদের তথ্য উপাত্ত বের হচ্ছিল কেউ বিবাহিত, কেউ মাদক বিক্রেতা, কেউ মাদকসেবী আবার কেউ চাকুরীজীবী তখন শীর্ষ দুই নেতা দায়িত্বশীল হননি, বরং লুকোচুরি খেলা শুরু করলেন। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন, তারাও কথা বললেন তবুও শীর্ষ দুই নেতা অভিযুক্তদের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিলেন না।

একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ করতে হলো।

তারপর ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কয়েকজনকে বহিস্কারের কথা জানালেন। কিন্তু কাদের বহিষ্কার করলেন, তারা কে, তাদের পদপদবি কী বা নাম কী তার কিছুই উল্লেখ করলেন না! ফলে শেখ হাসিনাসহ ছাত্রলীগের কেউই জানতে পারলো না কাদের বহিষ্কার করা হলো।

এটা মহা প্রতারণা। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আবেগ অনুভূতি এবং ভালোবাসা নিয়ে খেলা করলেন তারা।

একই সঙ্গে সবার মাঝে আরও ক্ষোভ সঞ্চারিত হলো। অনেকের আস্থা হারালেন তারা। বিষয়টি নেত্রী পর্যন্ত পৌঁছালো এবং মনে হচ্ছে ওই সময়টাতেই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। তবুও তারা আন্তরিক হয়নি, সতর্ক হননি তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে।

এখন কথা হচ্ছে যাদের কমিটিতে রাখতে গিয়ে ধীরে ধীরে নিজেদের পতন ডেকে আনলেন, বিপর্যয়ের মুখে ফেললেন নিজেদের, তারা কিন্তু ঠিকই কমিটিতে রয়ে গেলো! আর আপনারা?

কী দরকার ছিল তাদের কমিটিতে রাখার। তাদের মন রাখতে গিয়ে, তাদেরকে খুশি রাখতে গিয়ে বঞ্চিত করলেন অনেককে। এসবের কিছুই কি এখন কাজে লেগেছে? লাগেনি। এদিকে, মাঝখান দিয়ে সে আপনারাই 'নাই' হয়ে গেলেন!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত