আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

পার্ভার্টদের চ্যাপ্টারয়েড ও অবলা অধ্যায় ম্যাৎকার এবং নব্য পুরুষতান্ত্রিকতা

কাজল দাস  

একজন লেখিকা 'পরকীয়া' নিয়ে মতামত লিখেছেন। এই লেখার সমালোচনা বা বিচার হতেই পারে। প্রেম, পরকীয়া আর যৌন স্বাধীনতা নিয়ে বিস্তর আলোচনার দাবি রাখে এই সমাজে। কিন্তু এই লেখার সূত্র ধরে অনলাইনের একদল নাস্তিক ও মুক্তমনারা তাদের গালি দিচ্ছেন 'কিটিবাদী' বলে। একদল পার্ভাট আর বিকৃত চিন্তার লোক পত্রিকাটিকে গালি দিচ্ছে 'চ্যাপ্টারয়েড' বলে।

উপরে আমরা যাদের কথা বললাম এরা সবাই পুরুষ। গুলিস্তানের ভিড়ে, বন্দর বাজার পয়েন্টে বা খাতুনগঞ্জের আড়তের লুঙ্গি উঁচু করে চলা পুরুষদের সাথে এদের পার্থক্য হল এরা তাদের চেয়ে অনেক স্মার্ট। ওরা নারীবাদ আর নারীবাদী না চেনে দিনরাত নারীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে আর এরা নারী ও নারীবাদ বুঝে গালাগালি করে। এছাড়া আর কোন পার্থক্য নাই। যারা চিনে জেনে শুনে বুঝে গালাগালি করে এরা হল নব্য পুরুষতান্ত্রিক। এই পুরুষদের বাইরে আরও একদল নারীদেরকে দেখা গেছে এই সময়ে যারা নারীকে এহেন কোন ভাষা নাই যা দিয়ে গালি দেয় নাই। এদের মধ্যে আবার আরও একদল নারী আছে যারা নারীবাদ কি সেটা না বুঝলেও নব্য-নারীবাদী বলেও উষ্মা প্রকাশ করেন। কেউ কেউ আবার মনে করেন 'স্বামী সেবাই পরম ব্রত', নারীবাদ মানে স্বামী সেবার বাইরে গিয়ে লম্ফঝম্ফ করা। এই সব নারীরা নারীবাদীদেরকে গালি দেন 'ছুটামাগী' বলে। কি পুরুষ আর কি নারী উভয়েই মনে করেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অপরাধী এই নারী যিনি এই লেখাটি লিখেছেন। অথবা এরা পুরুষবিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন যারা নারী স্বাধীনতার কথা বলছেন বা লিখছেন ।

আমরা এমন একটা সমাজে বসবাস করি যেখানে সর্বত্র নারীকে অসম্মান করা হয়। পরিবারের ভেতরে, কর্মক্ষেত্রে, ভিড়ে বা রাস্তায় নারীকে অসম্মান করা হয়। সকল ধরণের পুরুষেরা তাদের অসম্মান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানদার পর্যন্ত নারীকে সবার আগে মাগী আর বেশ্যা বলে গালি দিয়ে উঠে। এই দেশের যতগুলো জেলা আছে, থানা আছে, গ্রাম আছে, পরিবার আছে, কোন একটা জায়গা পাবেন না যেখানে নারীকে অসম্মান করা হয় না। এমন কোন পরিবার পাবেন না যেখানে নারীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়না।

এইদেশে প্রতিবছর যতগুলো নারীকে খুন করা হয় , যতগুলো নারীকে ধর্ষণ করা হয়, যতগুলো নারী ঘটিত অপরাধ করা হয় দেশে এতো সংখ্যক নারীবাদী লেখকও নেই অথচ এইসব নব্য পুরুষতান্ত্রিকদের চোখে সবচেয়ে খারাপ হল এসব নারীবাদীরা। এরা নাকি দেশে উগ্রতা ছড়াচ্ছেন। আমাদের জানা নেই এইসব উগ্র নারীবাদীরা কয়জন পুরুষের এই পর্যন্ত মাথা ফাটিয়েছেন বা ধর্ষণ করে গলা টিপে হত্যা করেছেন বা জোর করে কয়জন পুরুষকে তুলে নিয়ে গণ ধর্ষণ করেছেন। আর কতজন পুরুষই বা আত্মহত্যার শিকার হয়েছেন এসব নারীবাদীদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে।

এই দেশের এমন কোন পুরুষ নেই যিনি রোজ প্রত্যক্ষ করেননি যে তার সামনে কোন না কোন নারীকে অন্তত একটা গালি দেয়া হয় না। এমন কোন নারী নেই যিনি প্রত্যক্ষ করেননি যে তাকে বৈষম্যের শিকার হতে হয় না প্রতিদিন। দেশে এতোসব নারী বিরোধী কর্মকাণ্ড আছে অথচ সবচেয়ে বড় অপরাধ করে ফেলছে নারীরা এর প্রতিবাদ করে লেখালেখি করে। কিংবা নিজের যৌন স্বাধীনতা চেয়ে। যে দিনে এই লেখাটি প্রকাশ হয়েছে এইদিনেই হয়তো এই দেশে ঘটে গেছে অনেকগুলো ধর্ষণ আর নারী নির্যাতন তবুও এর চেয়ে গুরুতর অপরাধ করে ফেলেছে এই লেখাটি। একটি লেখা গ্রহণ হবে কি হবেনা তার জবাব দেয়া হচ্ছে মাগী আর বেশ্যা বলে খানকি আর ছেনাল বলে। একদল গালি দিয়ে ওহী নাজিল করে আর আরেকদল তালি বাজায়। এরা গ্রামের সেই মোড়লদের মতই যারা নিজের ঘরে বউকে পিটিয়ে বিচার করতে আসে আরেকজনের বউয়ের। এই নব্য পুরুষতান্ত্রিকরা মনে করেই নারীরা সব কিছু পেয়ে যাচ্ছে, এতো চিৎকার চেঁচামেচির কি আছে? এরা নিজেদের হাতে নারীর স্বাধীনতা দেয়ার বাটখারা নিয়ে বসে আছে।

নারীবাদ হল একটি সমতার আদর্শ আর পুরুষতন্ত্র হল একটি অসম চিন্তার মানসিকতা। নারীবাদকে যারা কোন খণ্ডিত আদর্শ মনে করেন তারাও যেমন ভুল চিন্তা করেন তেমনি যেসব নারীবাদীরা নারীবাদকে খণ্ডিত অর্থে ব্যবহার করেন সেটাও ভুল। আবার ৯৯ ভাগ সুখী কোন নারী যখন তার বাকি ১ ভাগ নারীত্বের যন্ত্রণা নিয়ে কথা বলেন সেটিও যেমন নারীবাদের অংশ ঠিক তেমনি নারীদের অধিকার ৯৯ ভাগ অর্জিত হয়ে যাবার পরেও বাকি ১ ভাগ অধিকারের জন্য পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলে যাওয়াটা নারীবাদের কাজ। কারণ স্বাধীনতা সব সময়ই পরম, এটি চূড়ান্ত এবং অনিবার্য। তার কোন না মানে কিন্তু নেই। আমি নারী স্বাধীনতাকে দেশ স্বাধীন করার সাথে সব সময় তুলনা করতে আগ্রহী।

দেশ স্বাধীন মানে যে রকম সার্বভৌম ক্ষমতা লাভ করা তেমনি নারীর স্বাধীনতাও তার নিজের উপরে সার্বভৌম ক্ষমতা লাভ করা। নারীর শরীর প্রদর্শন, কাপড় পড়া, যৌন সঙ্গী নির্বাচন থেকে শুরু করে সন্তান ও সম্পত্তির অধিকার লাভ করা পর্যন্ত সকল বিষয়ে যতক্ষণ না পর্যন্ত সে পুরোপুরি স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত এটি আদায়ের জন্য বলে বা লিখে যাওয়াটা নারীবাদী আদর্শের কাজ। কিন্তু এই দেশের নব্য পুরুষতান্ত্রিকরা মনে করেন নারীরা এইসব চাইতে গেলে রয়েসয়ে চাইতে হবে। সমাজের রক্ষণশীল মূল্যবোধ আর পুরুষতন্ত্রের পাছার কাপড় যাতে উদোম না হয় সেই দিকে খেয়াল রেখে দাবি-দাওয়া করতে হবে। কিন্তু নারীবাদ সেটা করে না।

আমাদের পশ্চাৎপদ ও ধর্মান্ধ সমাজে নারীরা এখন নানানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, নব্য পুরুষতান্ত্রিকদের চোখ এখন এইসব এগিয়ে যাওয়া নারীদের দেখে বারে বারে আটকে যাচ্ছে। তারা এখন ধর্মে এবং জিরাফে ভূমিকা নিচ্ছে। তারা খুব ব্যঙ্গ করে বলে কোথা থেকে আসছে 'একদল নারীবাদী'। এরা যতটা কটাক্ষ করে বলে কোথা থেকে আসছে এই নারীবাদীরা ততটা কটাক্ষ করে কোনদিনই বলেনি কোথা থেকে আসছে এই 'পুরুষতন্ত্র' আর 'পিতৃতন্ত্র'? এটি বললে খুব কাজে দিতো; কিন্তু আদতে তারা এটি করতে চায় না। এই যে এভাবে না দেখতে পারার মানসিকতা এটি হল নব্য পুরুষতান্ত্রিকতার রূপ। এরা বড়জোর নিজেদের যৌন প্রয়োজনে নারীকে ছাড় দেবে; কিন্তু যৌনতার পরে নারীকে সম্মান দেবেনা। কারণ সম্মান দেয়ার মত কিছু তারা মনে করে না।

এখন যখন এইদেশে নারীদের বলার ভাষা বদলে যাচ্ছে, লেখার ভাষা বদলে যাচ্ছে সেটি নিয়ে তাদের আঁতে ঘা লাগছে। এই ঘা লাগার কারণ হল নিজেদেরকে পুরুষতান্ত্রিকতার বাইরে গিয়ে নিজেকে ভাবতে না পারা। কারণ নিজেকে জেন্ডার সংবেদনশীল অথবা নারী বান্ধব ভাবার জন্য যে সংগ্রামটা করতে হয় তারা সেটা করতে চায় না। মজ্জাগত পুরুষতান্ত্রিকতা থেকে বের হয়ে নারীদেরকে সহযোগী ভাবা তাদের পক্ষে কষ্টকর কাজ। এরা নিজেদের রিলাক্সড জোনে রেখে নারীদের স্বাধীনতা দিতে চায়। এদের কাছে এখন বাটখারা দিয়ে স্বাধীনতা দেয়া বা রয়েসয়ে থাকা চলনশীল নারীবাদ গড়ে তোলাই শ্রেয় কাজ। এরা নিজেরা বাক-স্বাধীনতার কথা বললেও নারী যখন পরকীয়ার কথা বলে উঠলো সেখানে তাকে গালি দেয়াটাই সঠিক মনে করলো। এটি তারা কেন করে? করার কারণ হল- নারীর বদলে যাওয়া ভাষাকে তাদের নিতে না পারা। আর এই নিতে না পারাটাও স্বাভাবিক কারণ-হাজার বছরের পুরুষতান্ত্রিক ভাত-ঘুম, এক দুইটা নারীবাদী লেখার দুপুর দিয়ে তো আর যাবে না। এর জন্য নারীদের আরও বেশি বেশি লিখতে হবে।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও যেমন দেশ থেকে নব্য পাকিস্তানী যায়নি তেমনি হাজার বছরের পুরুষতন্ত্রকে দু'য়েক লেখা দিয়ে বিদায় হবার কথা না। এদেরকে আরও জোরে কষে চড় লাগাতে হবে।

এই দেশে আমাদের যার বয়স সবচেয়ে বেশি ধরেন ১২০ বছর এই লোক থেকে শুরু করে নাবালকরা পর্যন্ত মনে করেনা যে নারীকে সম্মান দিতে হবে। অথবা একজন নারীর স্বাধীনতা আছে। অথবা তার স্বাধীনতা আছে সে যা খুশি চলতে পারে বা বলতে পারে। এইদেশে আমাদের পরিবারে আমরা কোনদিন এসব বলতে বা শুনতে দেখিনি যে এই তুমি একজন নারীকে (মানুষ অর্থে) কেন অপমান করছো? বড়জোর বলতে শোনা যায়, মেয়ে মানুষের গায়ে হাত তুলিস না। মেয়ে মানুষকে সম্মান দেয়ার কথা আমরা অহরহ শুনি; কিন্তু কাউকে কখনো বলতে শুনিনাই যে - রাস্তায় পুরুষ মানুষকে সম্মান দিয়ে চলিস। নারীকে পুরুষের হাত দিয়ে এইভাবে মাপজোক করাটাই পুরুষতান্ত্রিকতা।

নব্য পুরুষতান্ত্রিকরাও এখন অনলাইনের নারীবাদ বিষয়ক লেখালেখিতে নিজেদের হাতে বাটখারা তুলে নিয়েছে। নারীরা কি লিখবে আর কি লিখবে না এটা তাদের মর্জি মতো হতে হবে। তাদের মর্জি মতো না হলে তারা বলবে কিটিবাদী, চ্যাপ্টারয়েড, অবলা অধ্যায় অথবা লেজকাটা শেয়াল। সাবেক পুরুষতন্ত্রের দেয়া বেশ্যা, মাগি, খানকি আর ছেনাল গালিগুলো কি সুন্দর করে করে বদলে যাচ্ছে নব্য পুরুষতন্ত্রের ভাষার সাথে । আহ! মরি মরি! কি সুন্দর নব্য পুরুষতন্ত্রের রূপ।

কাজল দাস, অনলাইন এক্টিভিস্ট

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ