আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

দেশটা পরিবর্তন হতে কত সময় লাগবে?

এস এম নাদিম মাহমুদ  

বছর দেড়েক আগে জাপানের কেন্দ্রিয় ব্যাংক (বিওজে) একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেটা হলো, যেসব ব্যাংক কেন্দ্রিয় ব্যাংকের কাছে অর্থ গচ্ছিত করতো তাদের সেই গচ্ছিত অর্থ থেকে শতকরা ০.১ ভাগ ঋণাত্মক সুদ কেটে রাখার হতো। এর কারণ হিসেবে কেন্দ্রিয় ব্যাংক বলছিল, ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্যে হলো বিনিয়োগ করা। যার মধ্য দিয়ে দেশে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। আর সেটা না করে ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকের টাকা কেবলমাত্র গচ্ছিত করে আসছিল, যা অর্থনীতির বারোটা বেজে যায়। আর ভুল শোধরাতে স্থানীয় ব্যাংকগুলোকে তাদের গচ্ছিত অর্থ ব্যবসায় বিনিয়োগে উৎসাহ দিতেই বিওজে নেগেটিভ চার্জ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন আর স্থানীয় ব্যাংকগুলো আর কেন্দ্রিয় ব্যাংকের কাছে টাকা না রেখে ব্যবসা-বাণিজ্যে ঋণ দিচ্ছে, ফলে দেশে ‘অলস টাকায়’ রাজস্ব ফিরেছে।

আমি জানি না, জাপানকে অনুকরণ করতে গিয়ে এবারের বাজেটে সরকার কেন এই ‘অপরিপক্ব’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্রাহকদের ‘লাখ’ টাকা ব্যাংকে রাখার ‘কর’ আদায়ের যে নিয়ম এসেছে, তা সত্যিই হতাশাজনক।

আমার মনে হয়, যে টাকা এই লাখপতির কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে, কোটিপতিদের ডাকসাইটের ‘কর’ না পাওয়া অর্থগুলোর যদি সন্ধান করতে পারতো তাহলে দেশের রাজস্ব আয় এমন পর্যায়ে যেত যা আমাদের দেশের উন্নয়নে যথেষ্ট ছিল। ওরা ব্যাংকগুলো ছিদ্র করে যে অর্থ বের করে, সেই অর্থগুলো যদি এনবিআর মর্যাদা দিতে পারতো, তাহলে আমাদের ‘কর’ কয়েকগুণে বৃদ্ধি পেত।

ধরুন, সারা দেশে ৪০ লাখ মানুষ লাখপতি। আর কোটিপতি ৫শ জন। এই চল্লিশ লাখ ব্যক্তির কাছে গড় পড়তা যদি দুই লাখ টাকা থাকে তাহলে এদের কাছে আট হাজার কোটি কর সরকার পাবে। আর ওই পাঁচশজনের কাছে দেশের তিন ভাগ অর্থ নড়াচড়া করে। কয়েক লাখ কোটি করের মুখ দেখে না। এই তিন ভাগের মাত্র অর্ধেকও করও যদি সরকার পেতো তাহলে ‘দেশের চেহারা পরিবর্তন করতে আর সময় লাগতো না।

ব্যাংকগুলোতে গিয়ে খোঁজ নেন, তাদের কাছে কতগুলো ঋণখেলাপি আছে। বছরের পর বছর বিনে সুদে এরা অর্থ ঢেলে আঙুল ফুলে করা গাছ করে দেয়। আগে গোড়ায় হাত দেন, তারপর নয় শাখা-প্রশাখায়। গোড়ায় খেদমত না করলে গাছে ফল যেমন দেয় না তেমনি শাখা-প্রশাখায় দৌড়ে বেড়ালে কাজ হয় না।

আমি বিশ্বাস করি, দেশে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কেন্দ্রিয় ব্যাংক কেবলমাত্র নেগেটিভ চার্জ আদায় শুরু করে, তাহলে বুঝবেন দেশটা পরিবর্তনের গীত শুরু হয়ে গেছে। ওরা বছরের পর বছর টাকা গচ্ছিত করে, বিনিয়োগের চেয়ে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের কাছ থেকে সুদ পেতেই বেশি উৎসাহী। কাজেই এইগুলোকে আগে থামান।

তারপরও যদি দেখেন আপনাদের এনবিআর পরিপক্ব হচ্ছে না, তাহলে এই মধ্যবিত্তদের ধরেন।

এস এম নাদিম মাহমুদ, গবেষক, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ