আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

শিক্ষাক্ষেত্রে সুবাতাস, ভুক্তভোগী সংশ্লিষ্টরা মহাআনন্দে!

রহিম আব্দুর রহিম  

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি সংস্কার জোরালো ভাবে শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কর্মচারীরা মনে করেছেন। প্রতিদিনই শিক্ষা সংক্রান্ত সুবার্তা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হচ্ছে।

২ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক সমকাল পত্রিকায় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ‘বেসরকারি শিক্ষকদের এসিআর চালু হচ্ছে’- শিরোনামের একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সংবাদটির সারসংক্ষেপ বেসরকারি স্কুল ,কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক- কর্মচারীদের (অ্যানুয়াল সিক্রেট রিপোর্ট) এসিআর তৈরি করবেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। এসিআরের উপর ভিত্তি করে একজন শিক্ষক বা কর্মচারীর কর্মক্ষেত্রের মূল্যায়ন করা হবে। প্রমোশন, বদলি, জবাবদিহি, যোগ্যতাসহ বিভিন্ন ইতি ও নৈতিবাচক ভাগ্য নির্ধারিত হবে শিক্ষক কর্মচারীদের।
একই রিপোর্টে বলা হয়েছে বেসরকারি শিক্ষকরা ৬ এবং ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাবেন। পদোন্নতির সোপান তৈরি করতে সহযোগী অধ্যাপকদের এমপিওভুক্ত করার কথাও ভাবা হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের এক প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানে বদলি করতে একটি নীতিমালা তৈরির জন্য মন্ত্রণালয়, মাউশিকে দায়িত্ব দিয়েছে।

গত ২৭ মার্চ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে অতিরিক্ত সচিব, (বেসরকারি মাধ্যমিক) মো. জাবেদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ৩ এপ্রিলের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলীর খসড়া নীতিমালা মাউশিকে তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে, অতিরিক্ত সচিব মো. জাবেদ আহমেদ বলেছেন, ‘গত ১২ জুন জারি করা এমপিভূক্তির নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে কিছু সুনির্দিষ্ট সংশোধনী আনা হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষকদের পদোন্নতি, এসিআরসহ নানা বিষয়ে সংস্কার ও পরিবর্তন আনবে। আর পরিবর্তনের সব কিছুই শিক্ষকদের কথা ভেবেই করা হচ্ছে। চাকরির ১৬ বছরের দু’টি উচ্চতর গ্রেড শিক্ষকরা পাবেন। বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির জন্য নীতিমালা করা হচ্ছে। সহযোগী অধ্যাপকদের এমপিওভূক্ত করার বিষয়টিতে অর্থ-মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। এ জন্য প্রস্তাব তৈরি করে পাঠানো হবে।’

বদলির যে নীতিমালা হচ্ছে তাতে বদলির ক্ষেত্রে প্রার্থীরা নিজ জেলায় ফিরতে অগ্রাধিকার পাবেন, তবে একই প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে তিন বছর না থাকলে কেউ বদলি যোগ্য হবেন না। সংবাদটি বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য মহা আনন্দের বটে। শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের হৃদয়ের রক্তক্ষরণে দেরীতে হলেও রাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ভূয়সি প্রশংসার দাবীদার।

এক্ষেত্রে শঙ্কা - আশঙ্কাও রয়েছে বিস্তর। বদলির বিষয়টি কার হাতে থাকবে? সরকারের মন্ত্রণালয়ভুক্ত মাউশি, এনটিআরসি না কি স্থানীয় কমিটির হাতে? যদি সরকারের হাতে থাকে তবে কথা নেই, যদি কমিটির হাতে যায় তবেই তো ব্যবসার ষোলকলা। আগে ছিলো নিয়োগ বাণিজ্য এখন চলবে বদলি বাণিজ্য। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের গভীরভাবে ভাবতে হবে।

বেসরকারি শিক্ষকদের বর্তমানে মেডিকেল, আবাসিক এবং উৎসব বোনাসে যে বৈষম্য বিরাজ করছে তাতে সমতা আনা যায় কি না? বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সু নজর দিলে বিষয়টি শিক্ষকবান্ধব সিদ্ধান্ত হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বেসরকারি শিক্ষকদের সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে ৭:২ (অনুপাতিক) অর্থাৎ সাত জনের মধ্যে দুই জনকে সহযোগী অধ্যাপক করার যে অযৌক্তিক নিয়ম চালু রয়েছে, তা বিলুপ্ত করে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি মানবিক কারণেই বিবেচনায় আনার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

এসিআর পদ্ধতি চালু হলে জবাবদিহিসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এটা নিশ্চিত। তবে এটাকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যাতে অবৈধ ব্যবসা এবং অনৈতিক খবরদারি করতে না পারে সে বিষয়টি অবসানে যৌক্তিক কোন কঠোর কোন নিয়ম সংযুক্ত হওয়ার প্রয়োজন আছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তারা এক মাসের বেতন ভাতাদি, অন্য মাসের মাঝা-মাঝি কিংবা মাসের শেষে উত্তোলন করা সুযোগ পান। যা মাস শেষ হলেই পরবর্তী মাসের ১ বা ২ তারিখের মধ্যে উত্তোলন করতে পারেন এমন কোন ডিজিটাল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও এই সরকারের আমলেই হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সব মিলিয়ে এই সরকারই আমলেই সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একযোগে জাতীয়করণ করে সকল বিতর্কের অবসান ঘটনাটিও এখন সময়ের চাওয়া।

রহিম আব্দুর রহিম, শিক্ষক, কলামিস্ট, নাট্যকার ও শিশু সাহিত্যিক। ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ