আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

প্রসঙ্গ জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধকরণ

রণেশ মৈত্র  

আসলে অন্য একটা বিষয় নিয়ে লিখছিলাম। বেশ কিছুটা অগ্রসরও হয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎই হাতে এলো দৈনিক পত্রিকাগুলি। তাতে ১০ জানুয়ারির সংখ্যায় লাল কালি শিরোনামে তিন কলামব্যাপী প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি খবরের প্রতি স্বভাবত:ই দৃষ্টি আকৃষ্ট হলো। হয়তো বা ঐ পত্রিকায় নিয়মিত পাঠক বৃন্দের (দৈনিক সংবাদ) সবার দৃষ্টিই খবরটি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।

আমি আসলে সমগ্র দেশবাসীর মত এই দাবীতে পুরোপুরি একমত, তেমনি যখন কথাটি আমাদের আরও এক মেয়াদেও জন্য নির্বাচিত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কিছু বলে বসেন। বস্তুত: তিনি এই বিষয় নিয়ে অন্তত: দীর্ঘ তিনটি বছর ধরে বলে আসছেন, জামায়াত নিষিদ্ধ করণের ব্যাপারে নতুন আইন প্রণয়নের কাজ ইতোমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে। নথিপত্র এখন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলেই তা মন্ত্রীসভা অনুমোদন করবে। অত:পর সংসদে পাশ হতে কোন সমস্যাই নেই।

আমার স্মরণমতে তিনি ২০১৮ সালে তাঁর সিডনী সফর কালে আয়োজিত এক সভায়ও কথাগুলির পুনরুক্তি করেন।

এই সমাবেশে অবশ্য আমি এবং আমার জ্যেষ্ঠ পুত্রও আমন্ত্রিত হয়ে যোগ দিয়েছিলাম। জামায়াত নিয়ে যখন বিদেশের মাটিতে সরাসরি কথা উঠলো তখন যথেষ্ট আশাবাদেরও সঞ্চার হয়েছিল উপস্থিত সবার মনেই।

হঠাৎ করে উদ্যোক্তারা আমাকে ডাকলেন মঞ্চে গিয়ে বসতে এবং অত:পর কিছু কথা বলতে। জামায়াত প্রসঙ্গকেই সূত্র হিসেবে ধরে বললাম, “মাননীয় মন্ত্রী, এই একই কথা জামায়াত প্রসঙ্গে তো আপনার মুখে বহু কাল ধরে শুনে আসছি। মন্ত্রীসভার বৈঠক তো প্রতি সপ্তাহের সোমবারে অনুষ্ঠিত হয়। এক বছরে কম করে হলেও ৪০ টি বৈঠক হয়েছে কিন্তু বিল আকারে কোন কিছুই তোলা হয় নি। তবে কি এতে প্রভাবশালী কোন মন্ত্রীর আপত্তি আছে?

বললাম, শুনুন মাননীয় মন্ত্রী! আমি ক্ষুদ্র মানুষ হয়েও আপনাকে একটা পরামর্শ দিতে পারি। আর তা হলো আইন প্রণয়নের আদৌ কোন দরকার নেই? সরাসরি সংবিধানের একটি সংশোধনী আনুন। তাতে জামায়াতে ইসলামী সহ সকল ধর্মাশ্রয়ী দলকে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করুন। জিয়ার বিসমিল্লাহ ও এরশাদের ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে। ভেবে দেখুন ৭২ সংবিধানে এগুলি নিষিদ্ধ ছিল। তখন তো বঙ্গবন্ধুর জামায়াত নিষিদ্ধ করতে কোন আইন প্রণয়ন করতে হয় নি।
আর আজ সুপ্রিম কোর্ট নিষিদ্ধ করলো, যুদ্ধাপরাধী বিচারের ট্রাইব্যুনালগুলি রায় দিলো” জামায়াত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন সুতরাং অবিলম্বে তার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা প্রয়োজন। কিন্তু বস্তুত: কোনটাই মানা হলো না। আবার সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদও বললেন, “জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। তার জন্য বিদ্যমান আইনগুলিই যথেষ্ট। কিন্তু তখন সরকার সে পথে না হেঁটে জামায়াতকে বৈধ হিসেবে চালু রেখেছেন আবার ঐ বৈধ সংগঠনের সাথে জোট করার জন্য বিএনপি কে অপরাধী সাব্যস্ত করছেন। আবার বহু জেলায় জামায়াতের বহু নেতা-কর্মীকে আওয়ামী লীগে সাদরে ঢুকিয়ে নিয়ে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ করে অনেককে ইউপি চেয়ারম্যান পৌর সভার মেয়র কাউন্সিলারও নির্বাচিত করে রেখেছেন।

তবুও Later than Never উদ্যোগ যদি আবার সত্যিই নেওয়া হয়ে থাকে তবে তার আন্তরিক সাফল্য করি।

“সংবাদ” এর খবরে বলা হয়েছে, “জামায়াতে ইসলামী সহ যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সব সংগঠনের বিচারে ফের আইন সংশোধনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বেছে নেওয়া হলেও এই আইনে দল বা সংগঠনের মানবতা-বিরোধী অপরাধের শান্তির ব্যাপারে কিছু বলা নেই। এজন্য আইনটি সংশোধন করেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত সরকারের সময় সংশোধনী এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের খসড়া মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। এর পর থেকে বিষয়টি ঝুলে আছে কোথায় এবং কেন?) । আবারও খসড়া চূড়ান্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রীসভায় উত্থাপিত হলে তা অনুমোদনের পর জাতীয় সংসদে পাঠানো হবে। সংসদ সংশোধনী পাশ করলে ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের বিচারে আইনগত কোন বাধা থাকবে না। এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে গত (১১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, “জামায়াতে ইসলামীর বিচারের জন্য ফের আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”

একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যেমন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন ছয় দফা এগার দফাসহ বিভিন্ন দফায় বিরোধিতা করে জামায়াত। মুক্তিযুদ্ধেও সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস নামে বিভিন্ন দল গঠন করে জামায়াত ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ নামে। যুদ্ধকালীন সময় সাংগঠনিকভাবে তারা সারা দেশে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের মত যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হয়। সেই অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে এ পর্যস্ত জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, দলটার প্রধান অর্থদাতা বলে পরিচিত মীর কাশেম আলী, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সহ সংগঠনটির সাত শীর্ষ নেতা ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। গোলাম আযমের মামলার রায়ের জামায়াতেও ইসলামীকে একটি “ক্রিমিনাল সংগঠন” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ঐ রায়ে বলা হয়, জামায়াত একটি অপরাধী সংগঠন। একাত্তরে তাদের ভূমিকা ছিল দেশের স্বার্থেও পরিপন্থীর। এছাড়াও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিটি রায়ের পর্যবেক্ষণেই জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন (ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন) হিসেবে উল্লেখ করেছে।

২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ের জামায়াতের সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার আদেশ হলে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি এবং তাদের দলগুলি নিষিদ্ধ ঘোষণা সহ সাত দফা দাবীও অন্তর্ভুক্ত ছিল তখন গড়ে ওঠা শাহবাগ আন্দোলনে তরুণ সমাজ কর্তৃক। বিভিন্ন মহল থেকে তাদেও দাবীর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা হয় হাজারে হাজারে অংশগ্রহণও করা হয়।

পরবর্তীতে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করলে দলটির নিজস্ব নামে ও প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ে। এর পাঁচ বছর পর গত বছরের অক্টোবরের নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারী করে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্টদের মতে পাকিস্তান আমলে দুবার এবং ভারতে চারবার নিষিদ্ধ হয় জামায়াত। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে দলটির নিবন্ধন না থাকলেও সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের ২৫ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ও কিছু নিরপেক্ষ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও একটি আসনেরও জিততে পারে নি তারা।

এতে খুশী হওয়ার দিক যেমন আছে তেমন আত্মপ্রসাদের কোন কারণ নেই। জামায়াতে ইসলামী একটি ক্যাডার ভিত্তিক সংগঠন। সে সংগঠন এখনও তাদের অক্ষত। কিন্তু মূল দলের নেতৃত্ব ধীরে চলার নীতি গ্রহণ করায় তারা আপাতত: আগ্রাসী ভূমিকা পালন থেকে বিরত রয়েছে। কিন্তু হাজার হাজার মসজিদ, মাদরাসা? সেগুলি আজও দিব্যি তাদের নিয়ন্ত্রণে। সরকারের ছোট বড় আমলা, পুলিশ, বিজিবি,সেনাবাহিনীতে তাদের বহু অনুপ্রবেশ ঘটছে। সেদিকগুলি খেয়ালে রাখা এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ দরকার।

নারী সংগঠনও তাদের কম নয়। বাড়ী বাড়ী বোরকা পরে গিয়ে বাড়ীর নানা বয়সের মহিলাদেরকে বিনা পয়সায় ইসলামে তামিল দিয়ে থাকে তারা। ঐ বোরকাগুলির একাংশে অস্ত্র ও মাদক বহনে ও পুরুষ অপরাধীদের আশ্রয় দানের কাজেও ব্যবহৃত হয়। তাই সতর্কতার প্রয়োজন সার্বিক ক্ষেত্রেই। নইলে যে কোন মহলের মাধ্যমে বিপর্যয় নেমে আসা অস্বাভাবিক নয়।

অতীতের খবর তো এখানেই শেষ নয়।

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর পর ওই সংশোধনী সংসদে তোলার বিষয়ে কয়েক দফা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর খসড়া প্রস্তুত থাকলেও তা কখনও সংসদে ওঠে নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন অন্যতম প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুহিন আফরোজ ঐ সময় বলেছিলেন, “তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করার দুই মাস পর জামায়াতের বিচার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের বিষয়টি ওঠে। সে অনুসারে আইনটির খসড়াও করা হয়। কিন্তু এতদিনেও আইনটি কেন অনুমোদন হচ্ছে না, এটি আমার কাছে বোধগম্য নয়।

আইনের খসড়াটি মন্ত্রীসভায় উত্থাপনের ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ বলে অভিযোগ করে অভিযোগ করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অনেক সদস্যই। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল ক্ষোভ জানিয়ে আসছে এটি দ্রুত হওয়া দরকার বলে দাবি করে আসছেন। এ বিষয়ে আইনজ্ঞরাও প্রশ্ন তুলছেন। তাঁরা বলছেন, অনেক আইন রাতারাতি সংশোধন করা হচ্ছে। অথচ জামায়াতের বিচারে আইনের সংশোধন আটকে আছে। জামায়াত যে এতটা সন্ত্রাসী সংগঠন যে তা বহু রায়েই উঠে এসেছে অথচ ঐ দলটিকে নির্বাহী আদেশেও বে-আইনি করা সম্ভব। এছাড়া, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস্ আইনে ব্যক্তির বিচারের কথার উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সংগঠনের নেই। সেখানে অর্গানাইজেশন বা সংগঠন শব্দটি সংযোজন এবং সাজার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধকরণ তহবিল অফিস বাজেয়াপ্ত সহ কয়েকটি শব্দ সংযোজন করলে দলেরও বিচার করা সম্ভব হতে পারে।

বিশিষ্টজনেরা বলছেন, স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন গুলোর বিচারে বর্তমান সরকারের উপর তাঁদের আস্থা আছে। এখনই উপযুক্ত সময়। যত দ্রুত সম্ভব আইনের সংশোধনীর খসড়া পাঠিয়ে দিয়ে তা মন্ত্রীসভায় ও সংসদে অনুমোদন করতে আর কালক্ষেপণ উচিত হবে না।

এ বিষয়ে সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনের সংশোধনী তৈরি করে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আবারও একটু ইয়ে করার জন্য পাঠিয়েছে, আইনটি আমাদের কাছে আছে। আমরা চেষ্টা করাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে আবারও মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেব যাতে এটা মন্ত্রীসভায় উপস্থাপন করা হয়। আইন মন্ত্রী আরও বলে, রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের বিচার করা কিনা, সেজন্য এ আইনটির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনটি রায়ে দেখা গেছে যে, জামায়াত দল হিসাবে যুদ্ধাপরাধে জড়িত। তাদেও বিচারের জন্য দাবী উঠেছে। সেই দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম যে বিদ্যমান আইনে বিচার করা যায় না, তাই আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখন প্রাসঙ্গিক কয়েকটি জরুরী প্রশ্ন উত্থাপন করতে চাই:-
এক. সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামী সহ জঙ্গি উৎপাদনকারী ধর্মাশ্রয়ী দলগুলিকে, জিয়ার উদ্দেশ্যমূলক বিসমিল্লাহ্‌ এবং স্বৈরাচারী এরশাদের “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” বে-আইনি/বাতিল করে পুন:স্থাপন করতে বাধা কোথায়?

দুই. সংবিধান সংবিধানে যে দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের প্রয়োজন তার চাইতে বেশী সদস্য থাকা সত্বেও সংবিধান সংশোধনের পথে যেতে অনীহা কেন?

তিন. দল নিষিদ্ধকরণের জন্য আদালতের কাছে যেতে হবে কেন?

চার. আদালতের বিচারে যে অত্যধিক সময় সাপেক্ষ তা নিশ্চয়ই সবারই জানা আছে। তবু সে পথে হাঁটার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল কেন?

পাঁচ. একটি মামলা দায়ের করলেই মাননীয় আদালত যে দল/দলগুলিকে বে-আইনি ঘোষণা করলেনই তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে?

ছয়. যদি ধরেও সেই যে আদালত বে-আইনি ঘোষণা করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবেনই, ক্ষতিগ্রস্তপক্ষ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী কি উচ্চ আদালতে আপীল করতে যেতে পারবেন না? আমার ধারণা নিশ্চয় পারবেন। তখন সে আপীল শুনানির জন্য যে কয় বছর সময় লাগবে তাও কি বিবেচনায় নেওয়া হবে না।

সাত. মন্ত্রীসভা/ সংসদে অনুমোদনের দিন তারিখ তো এখনও ঠিকই হয় নি। অথচ উদ্যোগটি সুরু হয়েছে ১৯১৩ সালে। আজ প্রায় ছয় বছর ইতোমধ্যেই অতিক্রান্ত।

আট. যদি সহজেই তিন বা ছয় মাসের মধ্যেই মন্ত্রীসভা/সংসদেও অনুমোদন পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতে এজাহার প্রণয়ন, চার্জশীট প্রণয়ন, চার্জশীট গ্রহণ প্রভৃতিতে অনেক সময় স্বাভাবিকভাবেই লাগবে।

নয়. অত:পর অভিযুক্ত পক্ষ নানা যৌক্তিক/অযৌক্তিক কারণে দিব্যি আদালতের কাছ থেকে বার বার সময় নিতে পারবে। এভাবে সংঘটিত বিলম্বের আশংকাও কম নয়।

দশ. আদালত প্রদত্ত জামায়াত রাজনীতি বাতিলের রায় কি সংসদে অগ্রাহ্য করে যথা পূর্বং তথা পরং করা - অর্থাৎ পঞ্চদশ সংশোধনীর মত সংশোধনী দ্বারা আদালতের রায় অগ্রাহ্য করার সুযোগ রাখার চিন্তা আছে?

শেষ কথাটি বলি- বাংলাদেশে সব কিছুই সম্ভব।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ