আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

চৌর্যবৃত্তির উচ্চশিক্ষা!

এস এম নাদিম মাহমুদ  

কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চৌর্যবৃত্তি নিয়ে যে সমালোচনা করছি, তা কি আদৌও উচিত হচ্ছে আমাদের? আমরা কেন এই সমালোচনা করবো? কেনই বা চৌর্যবৃত্তি নিয়ে সমালোচনা করতে হবে?

গবেষণার চৌর্যবৃত্তি কি? সেই বিষয় আসলে আমাদের আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সত্যিই কি আমাদের স্নাতক-স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কোন শিক্ষা দিয়েছে? গবেষণায় ‘কোনটিকে মেরে’ দেয়া বলা হয় সেটি কি কোন বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের মাধ্যমে কোনদিন জানিয়েছেন কিংবা বাংলাদেশের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান?

কেউ কি বলতে পারেন, দেশে ‘মেধাস্বত্ত্ব’ কমিশন/বিভাগ কিংবা দপ্তর আছে কি না? কিংবা সেটি আদৌও কার্যকর কি না?

সেটি যদি না হয়, তাহলে আমরা এই ধরনের সমালোচনা করার অধিকার রাখি না। যে বিশ্ববিদ্যালয়, তার শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে নৈতিক শিক্ষা দেয়নি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এই চৌর্যবৃত্তি আশা করতে পারি।

একটা কথা বলি, আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছি, সেখানে প্রথম বর্ষে আমি যা শিখেছি সেখানে একটা বিষয় হলো, ‘চ্যালেঞ্জ অব এক্সপেরিমেন্ট ও আর্টিকেল রাইটিং’। বিষয়টি বুঝানোর জন্য আমাদের সিডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা হয়, যেখানে আমরা কিভাবে এক্সপেরিমেন্ট করবো, কিভাবে ডাটা প্রসেসিং করবো, কিভাবে পেপার লিখবো তার বিস্তারিত ভিডিও আকারে উল্লেখ ছিল। শুধু তাই নয়, আমাদেরকে এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টার একটি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। যেখানে উল্লেখ থাকে প্লেজিয়ারিজম কি, কত প্রকার? কোনগুলো কে প্লেজিয়ারিজম ধরা হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রায় পঞ্চাশের অধিক অধ্যায় জুড়ে ছিল, প্লেজিয়ারিজমের বিশদ বর্ণনা।

অন্যের লেখা চুরি তো দুরে থাক নিজের আগের কোন গবেষণার লাইন মেরে দেয়াও এই চুন্নির মধ্যে পড়ে। যা একজন শিক্ষার্থী পাঠ করলে, সে অনায়াসে বুঝতে পারবে, এই চুরি বিদ্যার কতটা ভয়ানক শাস্তি হতে পারে? গবেষক, রিভিউয়ার, সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট ইন্সটিটিউট থেকে শুরু করে প্রকাশিত জার্নালের সত্ত্বাধিকারী পর্যন্ত ‘গবেষণার চুরি’ দায়ে অভিযুক্ত হতে পারেন।

যে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্লেজিয়ারিজম পাঠ করার সুযোগই দিলো না, রেফারেন্স থেকে নেয়া কোনটি সাইটেটিং আর কোনটি কপি-পেস্ট মেরে দেয়া তফাৎ বুঝতে দিলো না সেখানে পদোন্নতির জন্য মিশেল ফুকো হোক আর মিশেল ওবামাই হোক মেরে দেয়া অধিকারের মধ্যে পড়ে আর কী?

স্কুল, কলেজের পরীক্ষায় যখন প্রশ্নপত্র ফাঁসের হরি খেলা হয় সেখানে সামান্য কয়েক পাতা মেরে দিয়ে কি গবেষকবৃন্দকে নিন্দা জানিয়ে ছোট করবেন না। মিশেল ফুকোর লেখা খুঁজে বের করাও যে এক ধরনের গবেষণা তা কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বুঝেনি নাকি?

গবেষণার অর্থ যেখানে অপ্রতুলতা সেখানে আপাতত উচ্চশিক্ষার চৌর্যবৃত্তিও গবেষণা হবে না তো কি হবে? এগুলো আজ হয়নি, যারা প্রবন্ধগুলোকে অনুমতি দিয়েছেন তারাও এভাবেই পুলসিরাত পার হয়ে ‘অধ্যাপক’ হচ্ছেন।

আহা! স্বপ্নের শিক্ষালয়! এরচেয়ে গলাটিপে আমাদের হত্যা করো না কেন?

এস এম নাদিম মাহমুদ, গবেষক, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ