আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

শিক্ষা, বেকার এবং কর্ম

রহিম আব্দুর রহিম  

‘প্রাথমিক সংস্কৃতি উন্নয়ন কেন্দ্র’ নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, তাদের এক প্রচার পত্রে উল্লেখ করেছেন, ‘সংকীর্ণ চিন্তার লোকেরা পরনিন্দা- পরচর্চায় সময় ব্যয় করে, সাধারণ চিন্তার লোকেরা প্রতিদিনকার ঘটনার বিশ্লেষণ করেন। মহৎ চিন্তার লোকেরা সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজেন, শ্রেষ্ঠ চিন্তার লোকেরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।’ প্রশ্ন, আমাদের শিক্ষা কোন চিন্তার অন্তর্ভুক্ত এবং কোনটি হওয়া উচিত?

শিক্ষা মানুষের সকল দৈন্যদশা, অভাব-অনটন থেকে মুক্ত করারই কথা,অথচ আমাদের দিন দিন দীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে । কারণ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সমস্যা সম্ভাবনা বিচার বিশ্লেষণ করে একটি গবেষণালব্ধ মানব সম্পদ উন্নয়নের শিক্ষা পদ্ধতি বা শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও বাংলাদেশে চালু হয়নি, ফলে যা হবার তাই।

সম্প্রতি জাকির হোসেন বাচ্চু নামক জাপান প্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁর জাপানের শিক্ষা অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ‘জাপানে শিক্ষা ব্যবস্থায়, আগে ‘নীতি’ পরে ‘শিক্ষা।’ এই আদর্শ মেনে কমপক্ষে শিশুর দশ বছর বয়স পর্যন্ত অর্থাৎ চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত কোন পরীক্ষা সেখানে নেই। আদর্শটি এমন যে, স্কুল জীবনে প্রথম তিন বছর মেধা যাচাইয়ের সাথে সাথে ভদ্রতা, নম্রতা, ও শিষ্টাচার দেশপ্রেম ও ন্যায়পরায়ণতা শেখানো হয়। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভদ্র জাতি হিসেবে জাপানিরা যে খ্যাতি অর্জন করেছে, তা তাদের শিক্ষা ব্যবস্থারই প্রতিফলন। এই জাপানে কোন স্কুলেই ঝাড়ুদার থাকে না। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা মিলে প্রতিষ্ঠান আঙিনা, স্ব-স্ব বাড়ি পরিষ্কার করেন। বছরে এক দিন ক্লিনিং ডে হিসেবে উদযাপন করা হয়।

তিনি তাঁর অভিজ্ঞতায় বলেছেন, ‘আনন্দের জন্য পড়াশোনা’ (Reading for pleasure) কী জিনিস সেটা জাপানেই রয়েছে। আমার ছেলেটি স্কুলে যাওয়ার যে ব্যাকুলতা তা দেখেছি জাপানেই।’ তার এই বক্তব্যের সাথে বাংলাদেশের শিশু শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের কতটুকু মিল রয়েছে? আমরা কি সেই ধরণের গবেষণালব্ধ শিক্ষা পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি?

জাপানে একজন অভিভাবক তাঁর সন্তানের স্কুলের শ্রেণি পাঠদান ভিজিট করতে পারেনা। শ্রেণিকক্ষের শেষ সারিতে অভিভাবক ভিজিটরদের বসার নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। আমাদের দেশে ভিজিট তো দুরের কথা অভিভাবক ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষের ধারে কাছে পৌঁছতে পারেনা। এ যেন ১৪৪ ধারা জারি করা একটি নিষিদ্ধ অঞ্চল। মজার বিষয়, প্রতিটি পিরিয়ডে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা অনুযায়ী ক্লাস থেকে বের হতে পারে, রাস্তায় গিয়ে ট্রাফিক সিগনাল, আইন সম্পর্কে জানতে পারে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে ‘ফরমাল’ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হয়। কোয়ালিটি এডুকেশনকে গ্রহণ করার জন্য একজন শিক্ষার্থী পারিপার্শ্বিক এবং আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটও অনেকাংশে দায়ী।

জাপানে মূল্যায়নের তিনটি মানদণ্ড Excellent (চমৎকার), Good (ভাল), Need more improvement (আরও অধিক উন্নতির প্রয়োজন)। বাংলাদেশের এক সময়কার ফাস্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন পরিবর্তন হয়ে মানদণ্ড প্রসব হয়েছে জিপিএ। এর ভেতর কি আছে তা জিপিএ প্রাপ্ত প্রার্থী নিজেই জানে না। অথচ এ, বি,সি বা জিপিএ গোল্ডেন নামক আজব হরিণ পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে সুস্থ শিশু-কিশোর তরুণ-তরুণীরা মানসিক, শারীরিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রতিবন্ধি হয়ে পড়ছে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল ‘শিশুদের বিকাশে নজর চাই’ শিরোনামে এক নিবন্ধে বলেছেন, ‘দুরন্ত ও বেপরোয়া শিশুদের আমরা অনেক সময় শাস্তি দিই। মনে রাখা জরুরি শারীরিক শাস্তি শিশুকে আরও বেশি মারমুখী ও বেপরোয়া করে তুলতে পারে। যিনি শাস্তি দিচ্ছেন তার প্রতিও নেগেটিভ অ্যাটিচ্যুড বীজ রোপিত হয়ে যেতে পারে। আরও মনে রাখা জরুরি যারা শৈশবে নির্যাতনের শিকার হয় ভায়োলেন্সের কারণে দৈনিক কিংবা মনস্তাত্ত্বিক ট্রমা ভোগ করে, তারাই আবার নির্যাতনকারী হয়ে উঠতে পারে।

এসব কারণে সমস্যা প্রতিরোধে সামাজিক স্তর থেকে শিশুদের হতাশা দূর করতে হবে। অথচ আমাদের শিশুরা বাবা-মা’র ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারই হওয়ার ইচ্ছাটি পূরণ করার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় পড়ে চরম হতাশায় ভুগছে। এই হতাশা ওই শিশুটিকে ধ্বংস যজ্ঞের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

জাপানে ইলিমেন্টারি স্কুলে প্রত্যেক ক্লাসেই একজন শিক্ষকই সকল বিষয়ে পাঠদান করান, তবে মিউজিক ও শরীরচর্চা শিক্ষক আলাদা থাকেন। তাদের এই পদ্ধতি চালু রাখার কারণ একটি, শিক্ষক যাতে শিক্ষার্থীর নাড়ি- নক্ষত্র জানতে পারে। বাংলাদেশে এমন একজন শিক্ষক আছেন যিনি তাঁর শিক্ষার্থীর নাম-ধামসহ পুরোপুরি ব্যক্তিগত তথ্য দিতে পারবেন? পারবেনা, কারণ আমাদের পদ্ধতিতেই গলদ। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা হলফ করে বলছি না। জাপানে একটি ক্লাসে ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী থাকে। শিক্ষক সংকট নিরসনে ওই দেশের ভলান্টিয়ার শিক্ষক রয়েছেন। প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের সম্মানীর বিনিময়ে ব্যবহার করতে পারেন। অথচ আমাদের দেশে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকই নেই।

কর্মক্ষম জাতি গঠন এবং হতাশাগ্রস্ত প্রজন্মকে উদ্ধার করতে হলে চাই গবেষণালব্ধ শিক্ষা পদ্ধতি বা ব্যবস্থা। শিক্ষা ও শিক্ষক দিবসে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম তাঁর এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ‘শিক্ষকদের সাধনা অন্য দশটি চাকরীর মত নয় নি:সন্দেহে, শিক্ষকতা মানেই হলো সমাজ নির্মাণের অঙ্গীকার। বাংলাদেশের মতো পিছিয়ে পড়া সামাজিক সংস্কৃতির দেশে শিক্ষা সেবায় দীনতা, অক্ষমতা, অমর্যাদা প্রকট সমস্যায় রয়েছে।’

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সম্প্রতি তাঁর এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা ছিলেন দরিদ্র, যারা আমাদের ধনী করে গেছেন। এখন শিক্ষকরা ধনী শিক্ষার্থীরা গরীব হচ্ছে।’ অর্থাৎ শিক্ষা সেবকরা সকল নীতি আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে শিক্ষা বাণিজ্যের বলয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। যে দেশে শিক্ষা পদ্ধতি বা ব্যবস্থায় ‘অমেরুদণ্ডী’ নীতি, সেই দেশে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড; এই বাণী শুধু কথার কথাই।

বিশ্বের বাণিজ্যিক মোড়ল হিসেবে পরিচিত চীনের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা সবাই জানেন, যে দেশের মানুষরা একসময় তাঁদের মাতৃভাষা গুছিয়ে বলতে পারতেন না তাঁদের আজ কী অবস্থা। দীর্ঘ ৬৫ বছর চীন মানব সম্পদ উন্নয়নে একতরফাভাবে কারিগরি এবং পৈত্রিক পেশাগত কর্মমুখী শিক্ষার উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করেছেন। ওই দেশটি পৃথিবীতে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য দীর্ঘ পাঁচ বছর তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রেখেছিল। তৎকালীন চীন সরকারের ধারণা এত ছেলে-মেয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কী করবে? কোথায় চাকরী পাবে? কে তাঁদের চাকরী দিবে? ওই সময় থেকেই চীনের ছাত্র-ছাত্রীদের নানা ধরণের ট্রেড কোর্সে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। চীনের প্রতিটি বাড়ি একটি ফ্যাক্টরি, প্রত্যেক পরিবারের প্রতিজন সদস্য এক একজন ইঞ্জিনিয়ার। অথচ উজ্জ্বল সম্ভাবনার বাংলাদেশে ব্যাঙের ছাতার গড়ে উঠছে বাহারি নামের বিশ্ববিদ্যালয়। স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থাকার পরও বাংলাদেশে প্রায় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রাইভেট যেখানে নেই ক্যাম্পাস, চার দেয়ালের ঝুপড়িতেই দেয়া হচ্ছে গতানুগতিক শিক্ষা মন্ত্র।

চীন যেখানে মানব সম্পদ উন্নয়নের কারখানা হিসেবে শিক্ষাকে গ্রহণ করেছে, সেখানে বাংলাদেশের মত সম্ভাবনায় একটি দেশে বেকার তৈরির কারখানা প্রতিনিয়তই গড়ে উঠছে। বিবিএসের শ্রমশক্তির জরিপের তথ্য অনুযায়ী দেশে বেকার ৪ কোটি ৮২ লক্ষ। এর মধ্যে ২৬ লাখই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার। বাকিরা অলস, অদক্ষ এবং মৌসুমি বেকার। জাপান এবং চীনের শিক্ষা ব্যবস্থার আদলে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় জাতি গঠনে গতানুগতিক শিক্ষা পরিহার করে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সুদক্ষ জাতি গঠনে শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা যায় তবেই বাংলাদেশ অতি দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ববাজারে একতরফাভাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে।

এক্ষেত্রে আর কালক্ষেপণ নয়, শিক্ষা, বেকার, কর্ম এবং কর্মী সৃষ্টির গবেষণালব্ধ ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’ চালু এখন সময়ের দাবি।

রহিম আব্দুর রহিম, শিক্ষক, কলামিস্ট, নাট্যকার ও শিশু সাহিত্যিক। ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ