আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

নির্যাতিত ও ক্লিন ইমেজের তরুণরা কি ১৪ দলে মনোনয়ন পাচ্ছে?

এখলাসুর রহমান  

ওরে আমার সবুজ, ওরে আমার কাঁচা আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনী রাজনীতিতে রবী ঠাকুরের এই কবিতাটির বাস্তবায়ন খুবই দরকার। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত বিগত দিনে বিতর্কিত হয়ে পড়া ব্যক্তিদের মনোনয়ন হতে বাদ দিয়ে দেয়া।

সংবাদপত্র সূত্রে জানা গেল এবার আওয়ামী লীগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্লিন ইমেজের তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। এটা সত্যিই আশার কথা। দশম সংসদ নির্বাচনের মত একাদশ নির্বাচনে হয়তো আর ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ কেউ পাবেনা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ভোটব্যাংক বাড়ানোর জন্য গড়েছে মহাজোট হয়তো তারই পাল্টা হিসাবে ২০ দলীয় জোট গড়ল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি শত দ্বিমত থাকা সত্ত্বেও এবার আর নির্বাচন বর্জন করতে পারছে না। কারণ নির্বাচন বর্জন করলে তাদের দলীয় নিবন্ধন হারাতে হবে। সুতরাং এবারের নির্বাচন যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

ভোট চাইতে গেলে যাদের নানা দোষ ত্রুটি আলোচিত হবে এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন না দেয়া উচিত। আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদের উচিত যাদের গায়ে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি ও সিন্ডিকেটবাজীর কাদাপানি লেগেছে তাদের বাদ দেওয়া। নির্বাচনী মাঠে যেন প্রতিপক্ষ চোখে আঙুল দিয়ে কোন প্রার্থীর দোষ দেখিয়ে দিতে না পারে এবারের নির্বাচনে এমন প্রার্থীই প্রত্যাশিত।

ছাত্ররাজনীতিতে যাদের উজ্জ্বল ভূমিকা ছিল, বিরোধী রাজনীতি ও ওয়ান-ইলেভেনের বিরাজনীতিকীকরণের সময় যারা নির্যাতিত হয়েছে, তৃণমূলে যাদের ইতিবাচক ভূমিকা ও জনমত রয়েছে এমন প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেওয়া আজকের সময়ের দাবই। সংবাদপত্রে লিখেছে: মনোনয়ন দৌড়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা/ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নে তরুণদের প্রাধান্য দেবে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলেছেন, যারা যোগ্য, এলাকায় শক্ত অবস্থানে এমন সাবেক ছাত্রনেতাদের অবশ্যই দল বিবেচনা করবে। মনোনয়ন প্রার্থী এসব তরুণদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরব রাজনীতির মাঠ। দলীয় মনোনয়ন এখনও চূড়ান্ত না হলেও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা, তেমনি কেন্দ্রও মনোনয়ন চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছে। মনোনয়নের দৌড়ে আছেন চাঁদপুর-৩ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুজীৎ রায় নন্দী, চট্টগ্রাম-১৫ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ফরিদপুর-১ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, মাগুরা-১ এ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শিখর, গাইবান্ধা-৫ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, বাগেরহাট-৩ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, রংপুর-২ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি বিশ্বনাথ সরকার এবং ফেনী-৩ থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জহিরুদ্দিন মাহমুদ লিপটন রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনায় আছেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চাশ জনের অধিক ছিল নতুন মুখ, এবারও তাই থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। দুঃসময়ে যারা দল রক্ষায় নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সুবিধা নয় দলের প্রতি আদর্শিক আনুগত্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারাই যেন মনোনয়ন পায় এ দাবি সারাদেশের ত্যাগী নেতাকর্মীদের।

প্রতি আসনে যারা মনোনয়ন প্রার্থী হয়েছে তাদের অতীত আমলনামা ও যার বেশি ক্লিন ইমেজ তাকেই যেনো মনোনয়ন দেওয়া হয়। বিভিন্ন জেলায় পূর্বতন মনোনীত ব্যক্তি বাতিলের দাবিও উঠছে। সম্প্রতি সুনামগঞ্জে মনোনয়ন বদলের দাবিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এক মঞ্চে উঠতে দেখা গেছে। সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা-জামালগঞ্জ-তাহিরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের ৭ মনোনয়ন প্রত্যাশীর জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার সেলবরষ ও পাইকুরাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে বাদশাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি সৈয়দ রফিকুল হক সোহেল, ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল হাসান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম, সাবেক যুগ্ম সচিব বিনয় ভূষণ তালুকদার ভানু, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শামীমা শাহরিয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হায়দার চৌধুরী লিটন, সাবেক ছাত্রনেতা শক্তিপদ রায়। উল্লেখ্য এখানে দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন।

মনোনয়নকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলাতেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলীয় নেতাকর্মীরা এমপি পুত্র এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী খন্দকার মশিউজ্জামান রুবেলের বিরুদ্ধে পৌর শহরে জুতা মিছিল বের করে। এ সময় এমপি ও এমপিপুত্রের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। জানা যায়, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে গত ১৩ অক্টোবর উপজেলার হেমনগর কলেজ মাঠে এক নির্বাচনী জনসভা আহবান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি করা হয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান নিজ পুত্র খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলকে ওই জনসভায় দলীয় প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেবেন মর্মে প্রচার থাকায় দলে কোন্দল দেখা দেয়। পরবর্তীতে গত ১৬ অক্টোবর এবং ১৯ অক্টোবর জনসভার তারিখ দেওয়া হলেও জেলা আওয়ামী লীগ কোন্দল ফয়সালা করতে অপারগ হওয়ায় তৃতীয় দফা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মতি ছাড়াই স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামানের একক সিদ্ধান্তে জনসভার দিন ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে আওয়ামী লীগের অপর চার মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার জানান, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে অন্ধকারে রেখে স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান নিজপুত্র মশিউজ্জামান রুমেলকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য কৌশলে এ জনসভার আয়োজন করেছে। জনগণ এ ষড়যন্ত্রকে মেনে নেবে না। তাই এ জনসভাকে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনি জানান, স্থানীয় সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে নিজের অযোগ্য পুত্রকে দলের প্রার্থী হিসাবে কৌশলে ঘোষণা দেওয়ার জন্য একজন কেন্দ্রীয় নেত্রীকে মিসগাইড করে এই জনসভার আয়োজন করেছে।

নিকলি -বাজিত পুর আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েও পেলেন না বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন। এখানে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয় পাদুকা ব্যবসায়ী আফজাল হোসেনকে। তিনি আফজাল সুজের মালিক। তার কোন রাজনৈতিক অতীত নেই। অজয় কর খোকন একাদশ সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিতে এবারও গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন সংসদীয় এলাকায় এমপিদের সাথে দলীয় তৃণমূলের ও জনগণের সাথে দূরত্ব সৃষ্টির কথা শোনা যায়।

সংবাদপত্রের কয়েকটি শিরোনাম এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সেগুলো হল: আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সঙ্গে মন্ত্রী এমপিদের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে/ ২ কেন্দ্রীয় নেতা ও ৩ এমপি সহ জেলা নেতাদের শোকজ করল আওয়ামী লীগ/ বাঘার পাড়ার এমপির বিরুদ্ধে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন/ এমপি পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সংবাদ সম্মেলন। দলীয় মনোনয়নে দলের মার্কা নিয়ে এমপি হয়ে দলের সাথে অসদাচরণ খুবই আপত্তিজনক বটে। এব্যাপারে মনোনয়ন বোর্ডের নজর দেওয়া উচিত। বিগত দিনে মন্ত্রী এমপি হয়ে দলীয় আনুগত্য হারিয়েছেন ও জনমত হারিয়েছেন তাদের কোন অবস্থাতেই একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে তরুণ ও ক্লিন ইমেজের মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরকেই বিবেচনা করা উচিত। নেত্রকোনা ৪ এর বিএনপি আমলে এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন সম্প্রতি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবর। এই আসনে ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন পাচ্ছেন তার স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী। ভোটের জগতে লুৎফুজ্জামান বাবরের অবস্থান মজবুত। কারণ উচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নে জড়িত থাকলেও মসজিদ মাদ্রাসায় অনুদান, বিভিন্ন পরিবারে বেকার যুবকদের চাকরি প্রদান, দুঃস্থ মানুষকে সাহায্য প্রদান প্রভৃতির মাধ্যমে জনগণের মাঝে বেশ মজবুত অবস্থান সৃষ্টি করে ফেলেছেন।

বাবর ব্যবসায়ী হতে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মমিনকে দুইবার হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯১ ও ২০০১ সনে নৌকাকে হারিয়ে ধানের শীষ জিতে যায়। তখন নৌকা নিয়ে লড়ছিলেন আব্দুল মমিন ও ধানের শীষ নিয়ে লুৎফুজ্জামান বাবর। এই আসনে বর্তমানে সাংসদ হিসাবে আছেন আব্দুল মমিনের স্ত্রী রেবেকা মমিন। এ ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা, নব্বইয়ের গণআন্দোলনের অন্যতম রূপকার শফি আহমেদ, মদনের মমতাজ জাহান চৌধুরী। বাবরের বাড়ি ও মদনে ও শফি আহমেদ ও মমতাজ চৌধুরীর বাড়ি ও মদনে। মদনের অধিক সংখ্যক ভোট বাবরের স্ত্রীর দিকেই যাবে বলে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়। ১৪ দল প্রার্থীকে জিততে হলে এ ভোট ব্যাংক ভেঙে এগিয়ে যেতে হবে।

মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীতেও রয়েছে বাবরের শক্ত ভোট ব্যাংক। এ ভোটব্যাংক না ভাঙতে পারলে নৌকার বিজয় অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের একটা অংশ মনে করছে বাবরের ভোটব্যাংক ভাঙতে হলে শফি আহমেদকে মনোনয়ন দেওয়া উচিত। উল্লেখ্য শফি আহমেদ ২০০৬ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের আরেক অংশ ২ বার এমপি হওয়া রেবেকা মমিন কেই তৃতীয় বারের মত চাচ্ছে। ২০০৮ সালে বাবর বিএনপি হতে বহিষ্কৃত হয়ে নৌকা ও ধানের শীষ উভয়ের বিরুদ্ধেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী নৌকার সাথে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় তখন বাবরের। শোনা যাচ্ছে বাবরের স্ত্রী এবার আসছেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।

নেত্রকোনা -৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক ডিআইজিপি এম এ হানান, যুবলীগ নেতা তুহিন আহাম্মদ খান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এমপি বনাম ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে থাকায় সেখানে বিএনপি সুযোগ নিতে পারে। শোনা যায় আহমদ গ্রুপ ও বেলাল গ্রুপের মধ্যে কয়েকবার প্রকাশ্য সংঘর্ষও হয়েছে। যা বিভিন্ন সংবাদপত্রে শিরোনাম হয়েছে। এখানে ক্লিন ইমেজের তরুণ প্রার্থী তুহিন আহম্মদ খান। তিনি যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক। ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল জাসদ নেতা কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই। তিনি জাসদ গণবাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। কর্নেল তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের একই এলাকার সংরক্ষিত মহিলা এমপি। এখানেও পরিবর্তনের সুর উঠছে। এম, এ হান্নান সাহেব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরের দায়িত্বে আছেন। তরুণদের প্রাধান্য দিলে এই আসনের মনোনয়নের দাবিদার তুহিন আহম্মদ খান। এলাকায় গণসংযোগ করে তিনি ইতোমধ্যেই সজ্জন তরুণ রাজনীতিকের স্বীকৃতি পেয়েছেন। নেত্রকোনা সদর-বারহাট্টা আসনে তরুণ মনোনয়ন প্রার্থী শামছুর রহমান। তিনি এলাকায় ভিপি লিটন হিসেবেই পরিচিত। তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। বিএনপি জামায়াতের শাসনামলে ভিপি লিটনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়। নির্যাতিত ছাত্রনেতা হিসাবে তাকেও অনেকেই অন্যতম দাবিদার মনে করছেন। ভিপি লিটন বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মেহেরপুর ২ আসনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হচ্ছেন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী ও বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূর আহমদ বকুল। তিনি নব্বইয়ের ছাত্র গণ আন্দোলনের একজন অন্যতম রূপকার। এই আসনে আওয়ামী লীগ হতে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান এমপি মকবুল হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেকসহ আরও বেশ কয়েকজন। উল্লেখ্য মকবুল হোসেন দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। স্বাধীনতার পরে মাত্র দুইবার এই আসনে আওয়ামী লীগের নূরুল হক এমপি ছিলেন। দলীয় কোন্দলের কারণে দশম সংসদ নির্বাচনেও নৌকা হেরে যায়। এই আসনটি পুনরুদ্ধার করতে হলে ১৪ দলের প্রার্থী হিসাবে তাই ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য নূর আহমেদ বকুলকেই প্রয়োজন বলে মনে করছেন খোদ আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীরা। মেহেরপুরে ওয়ার্কার্স পার্টির সাংগঠনিক অবস্থাও ভাল। ওয়ার্কার্স পার্টিও যে কয় জনকে ১৪ দলীয় জোট হতে মনোনয়নের তালিকাভুক্ত করেছেন এতে নূর আহমদ বকুল রয়েছেন।

যেসব এলাকায় পরিবর্তনের সুর বাজছে সেসব এলাকায় মনোনয়ন খুব ভেবেচিন্তে দেওয়া উচিত। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নির্যাতিত, ওয়ান-ইলেভেনে নির্যাতিত ও রাজনীতি করে বেড়ে ওঠাদের প্রাধান্য দেওয়া হোক। প্রাধান্য দেওয়া হোক যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের তরুণদের। তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। একাদশ সংসদ নির্বাচনে যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের তরুণদের মনোনয়ন দেয়া হোক এই প্রত্যাশা সকলের।

এখলাসুর রহমান, লেখক ও কলামিস্ট

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ