আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ: একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি

রণেশ মৈত্র  

গত ২৩ আগস্ট, ২০১৯ রাত নয়টার দিকে চোখে পড়ল চরম দুঃসংবাদটি। বাংলাদেশের তথা উপমহাদেশের বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ, ১৯৭১ এর মুজিবনগর সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং ১৯৬৭ সাল থেকে (রুশপন্থী বলে তখন পরিচিত) ন্যাপের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ পরলোক গমন করেছেন। খবরটি শোকাবহ এবং বাংলাদেশের সকল বামপন্থী শক্তির জন্যই বেদনাদায়ক।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ যদিও অকালে মৃত্যুবরণ করেননি, মারা গেছেন ৯৭ বছর বয়সে, তবুও তাঁর পূর্ণতা আরও বহুদিন আমরা উপলব্ধি করবো। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি যখন দেশের সমগ্র রাজনৈতিক অঙ্গনকে গ্রাস করেছে, যখন প্রায় সমগ্র রাজনীতিই হয়ে পড়েছে চরমভাবে স্বার্থান্ধ ও দুর্নীতি পরায়ণ তখন অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের মত নির্লোভ, সৎ, আদর্শনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতার দৈহিক অনুপস্থিতি সত্ত্বেও সদর্প রাজনৈতিক বিচরণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন কুমিল্লা জেলা দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান ও অর্থনীতির মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। ছাত্র থাকাকালীন তিনি ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন ও ধীরে ধীরে দেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ ১৯৫৪ সালে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গঠিত যুব ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তৎকালীন মুসলিম লীগ মন্ত্রীসভার প্রভাবশালী সদস্য শিক্ষামন্ত্রী মফিজুল ইসলামকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশেও তিনি দলীয় প্রতীক কুঁড়ে ঘর নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্যপদে নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

১৬৫৪ সাল থেকেই রাজনীতির অঙ্গনে অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ প্রকাশ্য বিচরণ শুরু করেন। সেই যে শুরু তারপর থেকে তা চলেছে তীব্র বেগে, তীব্র গতিতে অবিরাম যার সমাপ্তি হলো ২৩ আগস্ট সন্ধ্যারাতে ঢাকার এপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত দলীয় সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত থেকে। অবশ্য মৃত্যু পূর্ববর্তী অন্তত দুই দশক পর্যন্ত স্বীয় স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি ঢাকার বাইরে তেমন একটা দৌড় ঝাঁপ করতে পারেননি। শেষ তিন বছর তো গুরুতর অসুস্থ হয়ে বেশীর ভাগ সময় হাসপাতালে কাটাতেই বাধ্য হয়েছেন।

দৌড়-ঝাঁপের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা গড়ে ওঠে তাঁর দলটির দফায় দফায় ভাঙ্গনে। রাজনৈতিক বা আদর্শিক কোন কারণে নয়, সাংগঠনিক ক্ষেত্রে আভ্যন্তরীণ বিরোধই একের পর ঐ ভাঙ্গনগুলি দলটির সকল ভগ্নাংশকেই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আকৃতিতে নামিয়ে আনে-পরিণতিতে বাংলাদেশের বামপন্থী আন্দোলন হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত। কর্মীরা-যারা নানা জেলায়, নানা উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন ক্ষুব্ধ চিত্তে তাঁরা হয়ে পড়েন নিষ্ক্রিয় ও হতাশাগ্রস্ত। আজ তো ন্যাপের সিংহভাগ নেতা-কর্মীই হয়ে পড়েছেন বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। পরিস্থিতি যেন দিনে দিনে সামলানোর অতীত রূপ নিচ্ছে।

বাংলাদেশের সংকটাপন্ন বাম আন্দোলনের সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নতুন করে গড়ে তুলেই অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদকে মরণোত্তর শ্রদ্ধা জানানোর সর্বোৎকৃষ্ট পথ। ভাল হতো সুস্থ থাকাকালে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ নিজেই এই ঐক্য গড়ার কাজে উদ্যোগী হলে। হয়ত অভিমানবশত এবং শারীরিক দুর্বলতাজনিত কারণে তিনি উদ্যোগী হননি।

অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদতো সবে মাত্র চলে গেলেন। তাঁর বিশ্বস্ততম সহকর্মী সহযোদ্ধা ডা. এমএ ওয়াদুদ, চৌধুরী হারুনুর রশিদ, পীর হাবিবুর রহমান, সৈয়দ আলতাফ হোসেন, পটুয়াখালীর আশরাফ হোসেনসহ আরও অনেকে তো বহুদিন আগেই এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। আর যারা উদ্যোগ নিতে পারতেন তাঁদের মধ্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ। কিন্তু তাঁরা তো অনেক আগেই ভিন্ন স্রোতে গা ভাসিয়েছেন। সুরঞ্জিত ও আরও দুইবছর আগে চলে গেলেন।

ঢাকা ও অন্যান্য জেলাগুলির দিকে তাকালে ন্যাপের প্রধান নেতাদের মধ্যে বেগম আমেনা আহমেদ, ১৯৭২ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করে যাওয়া জননেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য এই দু’জনের মিলিত উদ্যোগই মাত্র পারে ন্যাপকে পুনরএকত্রিত করে একটি বৃহত্তর ও কার্যকর সংগঠনের রূপ দিতে।

এখন ন্যাপ বা বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল অতীতের দিকে ফিরে তাকালো যাক সাদুর পঞ্চাশের দশকে। তখন পাকিস্তানের কেন্দ্রে ও পূর্ববাংলায় আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন সরকার। কেন্দ্রে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ও পূর্ব বাংলায় আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে। কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মাত্র ১২ জন এমপি ছিলেন। কিন্তু পাঞ্জাবী ভূস্বামীদের দল রিপাবলিকান পার্টির যোগসাজশে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রীত্বে অধিষ্ঠিত হন। তখন আওয়ামী লীগের গৃহীত পররাষ্ট্রনীতি ছিল সাম্রাজ্যবাদ, সিয়াটো, সেষ্টো ও পাক-মার্কিন-সামরিক চুক্তির বিরোধিতা করে স্বাধীন নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করা ও বিশ্বশান্তির প্রতিষ্ঠার সপক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর গদিতে আসীন হয়েই সোহরাওয়ার্দী ঐ সকল চুক্তির প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন ঘোষণা করলেন যার ফলে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হচ্ছিল। আবার পাকিস্তানের গঠনতন্ত্রের বিন্দুমাত্র সংশোধন না করেই প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ঘোষণা করলেন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবী ৯৮ ভাগ পূরণ হয়েছে। ফলে আওয়ামী অভ্যন্তরে গভীর মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে দলের সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী কাগমারীতে ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন আহবান করেন। ইতিহাসে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের এই কাউন্সিল অধিবেশনে বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।

কাগমারীতে ঐ কাউন্সিল অধিবেশনের প্রাক্কালে মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের  ওয়াকিং কমিটির অধিবেশনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীবৃন্দ পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক মন্ত্রীবৃন্দ ও কমিটির সদস্যবৃন্দ যোগদেন। সভায় মওলানা ভাসানী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে পররাষ্ট্রনীতি ও পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন প্রশ্নে তুমুল বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাঁর ঘোষিত পররাষ্ট্র ও স্বায়ত্তশাসন বিষয়ক মতে অটল থাকেন। অপর পক্ষে মওলানা ভাসানীও দলের গৃহীত নীতির প্রশ্নে অনড় অবস্থান গ্রহণ করায় চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

পরদিন সকালে কাউন্সিল অধিবেশনেও বিষয় দুটি নিয়ে তুমুল বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। আগের দিন রাতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কিং কমিটির সভায় একটি সমঝোতা হয়েছিল যে বিতর্কিত বিষয় দুটি সম্পর্কে দলের বিগত কাউন্সিল অধিবেশনের গৃহীত প্রস্তাবগুলো পঠিত ও গৃহীত বলে কাগমারী কাউন্সিলে প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। কিন্তু রাজনৈতিক বিতর্ক কাউন্সিল সভাতেও তীব্র হয়ে ওঠায় শেষ পর্যন্ত ঐ দুটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে দলীয় নীতির ভিত্তিতে সরকার পরিচালনার দাবী সম্বলিত একটি প্রস্তাব তুমুল ভোটাধিকারের মাধ্যমে গৃহীত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সদলবলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তৎক্ষণাৎ ঢাকা চলে যান।

অতঃপর কাউন্সিল সভা শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়। ঢাকায় গিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাল্টা বিশেষ কাউন্সিল ডাকেন দলীয় সভাপতির সাথে বিন্দুমাত্র আলোচনা না করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মওলানা ভাসানী আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। দিন কয়েকের মধ্যেই অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, আব্দুল মতিন, সেলিনা বানুসহ বামপন্থী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও দল থেকে পদত্যাগ করেন।

মওলানা ভাষানী তখন গোটা পাকিস্তান ব্যাপী প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, জাতীয়তাবাদী নানা দল ও নেতার সাথে আলোচনা করে ১৯৫৭ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই তারিখে ঢাকাতে নিখিল পাকিস্তান গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলন আহবান করেন।

মওলানা ভাসানী ও অপরাপর নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করার পরপরই পাবনাতেও আমরা বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করি। পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায় ঢাকাসহ পূর্ব বাংলার সকল জেলায়।

যথারীতি আমরা বিপুল উৎসাহে দলে দলে ঢাকা রওনা হলাম। সমগ্র পূর্ব বাংলার ছাত্র ইউনিয়ন নেতাকর্মীরও যোগ দিয়ে সম্মেলনের ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ আওয়ামী লীগ, কংগ্রেস, গণতন্ত্রী দলসহ পূর্ব বাংলার প্রগতিশীল দলগুলির সাম্রাজ্যবাদ সামন্তবাদ বিরোধী স্বায়ত্তশাসন কামী নেতাকর্মীরাও বিপুল উৎসবে ঐ গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনে যোগ দিলেন। অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ মওলানা ভাসানীর দক্ষিণ হস্ত হিসাবে সম্মেলন  সংগঠিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।

আকাশ ও রেলপথে (ভারতের অভ্যন্তর দিয়ে) পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান, সিন্ধু ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ থেকে বিভিন্ন প্রগতিশীল দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীও সম্মেলনে যোগ  দিলেন সহস্র কণ্ঠে “মালরেকি আউর মাগবেরী পাকিস্তান কী আওয়াম কি ইত্তেহাদ” স্লোগানে ঢাকার রাজপথ সমূহ প্রকম্পিত করে।

ঢাকার সদর ঘাটে অবস্থিত রূপমহল সিনেমা হলে দুদিন ব্যাপী নিখিল পাকিস্তান গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলন বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলায় ক্ষমতাসীন থেকে বেশ কিছু জনকল্যাণমূলক ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ করে প্রশংসিত হলেও, তাদের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে নতুন একটি দলের সম্ভাব্য আত্মপ্রকাশকে সুনজরে দেখেননি বিশেষ করে দলটির উগ্র দক্ষিণপন্থী অংশ। তাই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল আউয়াল (ইত্তেফাকের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার জামাতা ও পরবর্তীতে জাসদ নেতা) সদর ঘাটে বসে ঐ সম্মেলনকে বা তাতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদেরকে আক্রমণ করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

সভাপতি করা কালে মওলানা ভাসানীর কাছে একটি খবর এসে পৌঁছায় যে সম্মেলনে আগত ডেলিকেটরা আক্রান্ত হবেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ডেলিকেটদেরকে বললেন, আজ দিবারাত্র এবং কাল দুপুরে সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকলে হলের মধ্যেই অবস্থান করবেন। পানাহার ও টয়লেটের ব্যবস্থা হলেই করা হবে।

বিমানে লাহোর থেকে আসছিলেন পাঞ্জাবের বিখ্যাত জননেতা মিয়া ইফতেখার উদ্দিন। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি যোগে রূপমহল সিনেমা হলে আসার পথে তাকে আক্রমণ করে গাড়ীর কাচ ভেঙ্গে তাহাকে আহত রক্তাক্ত করা হয়। উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ থেকে সীমান্ত গান্ধি খান আব্দুল গফফার খান, খান আব্দুল ওয়ালি খান, করাচী থেকে মাহমুদুল হক ওসমানী, বেলুচিস্তানের গাউস বক্স, খায়ের বক্স মারী প্রমুখ সহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী যোগ দেন। গঠিত হয় পাকিস্তান ন্যাপ ও পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা ভাসানী এবং কেন্দ্রে যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ।

ন্যাপ গঠিত হওয়ার পর পাকিস্তান ব্যাপী দলটি বৃহত্তর অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে যার বিস্তার ঘটে পাকিস্তানের সকল অঞ্চলে। আর আওয়ামী লীগ তখন অসাম্প্রদায়িক দল হলেও পশ্চিম পাকিস্তানের কোথাও তার কোন অস্তিত্ব ছিল না।

কিন্তু ন্যাপ গঠনের পাঁচ বছর পরে তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের দুই নেতা সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মধ্য আদর্শিক দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে ওঠে। চীন আইউবের পক্ষ নিলো মাওলানা ভাসানীও সেই দিকে ঝুঁকলেন। তখন ১৯৬৭ সালে রিকুইজিশন কাউন্সিল ডেকে নতুন ন্যাপ গঠন করা হয় অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের নেতৃত্বে। সভাপতি হওয়ার পর তাঁর রাজনীতি নতুন ঐতিহ্যমন্ডিত হয়। সমাজতন্ত্রকে তিনি আঁকড়ে ধরে থাকলেন আজীবন আজ তাঁকে জানাই শ্রদ্ধা জানাই, লাল সালাম।

রণেশ মৈত্র, লেখক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক; মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। ইমেইল : [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ