আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

Advertise

পাকিস্তান : বদলায় দিন, বদলায় না পরাজয়

কবির য়াহমদ  

একাত্তর থেকে দুই হাজার পনেরো- এরই মাঝে কেটে গেছে চুয়াল্লিশ বছর। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার দশকের ইতিহাসে পূর্ব পাকিস্তান থেকে রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণিয়। মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্থান করে নিচ্ছে। দেশব্যাপী ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। কিছু ব্যতিক্রম আর কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বাদে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমীক্ষা, জরিপ, প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নিরাপদ, ঝুঁকিবিহীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে আগের সে পশ্চিম পাকিস্তান যা একাত্তরের ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করেও অদম্য বাঙালিকে দমিয়ে রাখতে পারে নি তারা হাঁটছে পেছনের দিকে। একাত্তরে নয় মাস পর তাদেরকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিদেয় করে দেওয়া হয়েছিল।

দেশটির সেই জন্ম ইতিহাস থেকে শুরু করে অদ্যাবধি ধর্মীয় সন্ত্রাস, ধর্মভিত্তিক বিভাজন-হানাহানি চরমে। ফলে মুসলিম প্রধান দেশ হলেও সেখানে শিয়া-সুন্নী বিভেদ, সন্ত্রাস নিত্যকার ঘটনা। দেশটির ভ্রান্তনীতির কারণে এখন ব্যর্থ ও অনিরাপদ রাষ্ট্রের তালিকায় উপর দিকেই অবস্থান।

একাত্তর থেকে এ সময় পর্যন্ত আমাদের এগিয়ে যাওয়ার বিপরিতে তারা হাঁটছে পেছনের দিকে। তাদের সঙ্গে আমাদের আছে জন্মশত্রুতার ইতিহাস। আমরা যেমন ভুলিনি ঠিক একইভাবে তারাও ভুলতে পারে নি। আমাদের স্মরণের সঙ্গে থাকে যেখানে গর্ব করার মত ইতিহাস, সেখানে তাদের পরাজয়ে গ্লানি।

একাত্তরের নয় মাসে পাকিস্তান বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছিল। তাদের সে গণহত্যার সরাসরি অংশীদার হয়েছিল এদেশের জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, ফজলুল কাদের চৌধুরী, শাহ আজিজুর রহমান, মাওলানা মান্নান, দেলাওয়ার হোসেইন সাঈদী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলী আহসান মুজাহিদ, কামারুজ্জামানরা ছিল সে অংশের অংশীদার। এর বাইরে অগণন লোক ছিল যারা সারাদেশে রাজাকার, আল বদর, আল শামস, শান্তি কমিটি গঠন করে বাঙালি নিধনে পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিল।

এরা যারা তারা কোন অংশেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চাইতে কম ভয়ঙ্কর ছিল না। উলটো অনেক ক্ষেত্রে তারা পাকিস্তানিদের চাইতেও বেশি ভয়ঙ্কর ছিল- এটা ইতিহাসের পাঠ। একাত্তরের সে সময়ে যদি পাকিস্তানিরা জিতে যেত তাহলে এসব স্বাধীনতাবিরোধীরা হতো ‘জাতীয় বীর’ আর মুক্তিযোদ্ধারা হয়ে যেত ‘দুস্কৃতিকারী’। ফলে নির্যাতনই কেবল নয়, মুখোমুখি হত শাস্তির।

মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন। ট্রাইব্যুনাল কাজও শুরু করেছিল। যুদ্ধাপরাধের বিচারের ইতিহাসে প্রথম শাস্তির মুখোমুখি হয় চিকন আলী রাজাকার নামের এক ব্যক্তি। এরপর পঁচাত্তরের পনেরো আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের আমলে চিকন আলী রাজাকার মুক্তি পায়। আস্তে আস্তে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা পুনর্বাসিত হতে শুরু করে, গোলাম আযমের মতো ঘাতক বাংলাদেশে আসে। জিয়ার পর এরশাদও রাজাকারদের রাষ্ট্রের-সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আসনে আসীন করে। বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে গোলাম আযম নাগরিকত্ব পায়, যুদ্ধাপরাধী নিজামী-মুজাহিদ মন্ত্রীত্ব পায়; তাদের বিচারের বিষয়- সে ত ছিল অনেক দূরের পথ।

এরপর শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণ-আলন্দোলন গড়ে তুলেন। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যে অঙ্গীকার করে। ২০১০ সালে শুরু হয় বিচার কাজ। এবং এরপর গত ৫ বছরে মোট ছয় জন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুর মাধ্যমে শাস্তি কার্যকর হয়েছে। তন্মধ্যে চার জনের ফাঁসির মাধ্যমে দণ্ড কার্যকর হয় আর যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম ও আবদুল আলিম আমৃত্যু কারাদণ্ডভোগরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।

লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, প্রতি যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকরের সময়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে অতি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পরেও সে দেশের প্রতিক্রিয়া উল্লেখ করার মত। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর সে দেশের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পর্যন্ত গৃহিত হয়। কয়েকটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে আক্রমণ করার মত স্পর্ধামূলক আহ্বান জানিয়েছিল তাদের সরকারের প্রতি।

কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানের পর এ মাসের ২২ তারিখে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তারা। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ''গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এতে আমরা খুবই অসন্তুষ্ট।

১৯৭১ সালের ঘটনাবলি নিয়ে বাংলাদেশে যে 'ত্রুটিপূর্ণ' বিচার চলছে সে বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছি এবং এ নিয়ে আগের মতো আবারও গুরুত্ব দিচ্ছি।''

এ দিনই সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খান ফাঁসি কার্যকর হওয়ার বিষয়টিকে 'ন্যায়বিচার হত্যা' বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। দুই দেশের জনগণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়, কিন্তু বাংলাদেশে একটি 'গ্রুপ' বিপরীত অবস্থান নিয়েছে। ১৯৭১ সালে যা ঘটেছে তা ইতিহাসের খুবই নিন্দনীয় অধ্যায়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বিবৃতির পর বাংলাদেশ সরকার কড়া ভাষায় এর প্রতিবাদ করেছে, এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সুজা আলমের কাছে বাংলাদেশের বার্তা ও প্রতিবাদপত্র (নোট ভারবাল) হস্তান্তর করে। এবং এ সাক্ষাতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব মিজানুর রহমান স্পষ্টই জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের এ ধরনের মন্তব্যের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে।

বাংলাদেশের প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্তদের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান আবারও স্বীকার করেছে যে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা ছিল। এতে আরো বলা হয়েছে, ‘গায়ে পড়ে করা মন্তব্যগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। এসব মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ বাংলাদেশের এ প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক ও জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন সন্দেহ নেই।

একটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায়, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে বরাবরই পাকিস্তান বিরূপ মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আসছে। এ কারণে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সর্বপ্রথম ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়ার পর কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভুলে ক্ষোভ দেখিয়েছিলেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ সদস্যরা। একাত্তরের ষোল ডিসেম্বর তাদের ঐতিহাসিক পরাজয়ের দিনেই তারা তাদের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করে।

এরপর অপর এক যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর বিচার নিয়েও পাকিস্তান বিরূপ মন্তব্য করার পর আবারও পাকিস্তানি হাইকমিশনার ডেকে পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর একই ঘটনার জন্ম হয়েছিল। অবশ্য অপরাপর যুদ্ধাপরাধীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে শাস্তি ঘোষণার পর একইভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকারের মন্ত্রীরা। ফলে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশে যাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে তারা প্রকৃতই ছিল পাকিস্তানের বন্ধু।

অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, মানবতাবিরোধী বিচার এগুলো বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও পাকিস্তান বরাবরই এসবে নাক গলিয়েছে। তাদের বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে এ প্রমাণ পাওয়া যায়। কেবল তা-ই নয়, ঢাকার বিভিন্ন সড়ক মুক্তিযোদ্ধাদের নামে রাখার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যখন পাকিস্তান হাইকমিশনের পাশের সড়কের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছিল তখনো আপত্তি জানিয়েছিল পাকিস্তান।

পাকিস্তান যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর অংশ হিসেবে ২০০০ সালে পাকিস্তানের উপহাইকমিশনার ইরফান রাজা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় বাংলাদেশ সরকার তাকে বহিষ্কার করেছিল। এটা এখন পর্যন্ত একমাত্র উদাহরণ। এদিকে, একাত্তরের গণহত্যা, ধর্ষণ সহ নানাবিধ অপরাধের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি-সংগঠন যখন তাদের প্রতি বারবার ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানাচ্ছে বিভিন্ন ফোরামে তখন সে আহ্বানেও ভ্রুক্ষেপ নেই ইসলামাবাদের। উলটো তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফোরামে একাত্তরকে ভুলে যাওয়ার নসিহত প্রদান করে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে দোষী স্যাব্যস্ত হওয়া পাকিস্তানের বন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থা নেওয়া কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বহির্ভূত আচরণ এবং অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। জাতিসংঘ সনদে উল্লেখ আছে এক দেশ অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না। পাকিস্তান এ সনদে সাক্ষরকারী দেস হিসেবে সে শর্ত মানতে বাধ্য, একইভাবে বাংলাদেশ সহ অপরাপর দেশগুলোও। বাংলাদেশ কারও আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে না বলে এ অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার সুযোগ নাই।

পাকিস্তান বাংলাদেশের বিচারিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্পষ্টত সে সনদ লঙ্ঘন করেছে। বাংলাদেশ চাইলে এ বিষয়ে জাতিসংঘে নালিশ জানাতে পারে। এবং সেক্ষেত্রে জাতিসংঘ যদি ন্যায়বিচার করে তাহলে তাদের সদস্যপদ নিয়ে টানাটানিও শুরু হয়ে যেতে পারে। তবে এখানে প্রশ্ন আছে কারণ জাতিসংঘ খোদ যে কোন বিচারের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী। তবে পাকিস্তান যেহেতু কেবল দণ্ডই নয়, পুরো বিচার প্রক্রিয়ার বিরোধীতা করছে সেক্ষেত্রে সেখান থেকে তারা শাস্তির মুখোমুখি হতেও পারে। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে বাংলাদেশ জাতিসংঘে নালিশ জানাবে কিনা তার উপর। তবে আমরা মনে করি নালিশ জানানো উচিত। অথবা এই মুহুর্তে সে দেশটির বিরুদ্ধে এমন কঠোর অবস্থানে না গেলেও তাদের বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া উচিত।

একাত্তরের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী বাংলাদেশ। এই বিশ পনেরোতে এসে তাদের বিপক্ষে জয়ের জন্যে এখন আর আমাদেরকে যুদ্ধ করতে হয় না। তাদের পরাজয়ের ক্ষত হিসেবে এখানে-ওখানে যা কিছু জঞ্জাল রেখে গেছে সেগুলো সাফ করে আমাদের কলঙ্কমোচনের পথ ঠিক করতে গেলেই একাত্তরের সে পরাজয়ের গ্লানি এখন তাদের কুরে-কুরে খাচ্ছে।

বাংলাদেশে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার যেখানে আমাদের কলঙ্কমোচনের অধ্যায় সেখানে এটাই তাদের নবতর অন্য পরাজয়। দিন বদলায়, বিশ্ব বদলায় কিন্তু বদলায় না পাকিস্তান আর তাদের পরাজয় মানসিকতা। আমরা বাংলাদেশ যুদ্ধংদেহী মানসিকতার না, আমরা কেবল আমাদের দায়মোচনের পথে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করছি চূড়ান্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে, এখানে পরিস্কার করে পাকিস্তান না থাকলেও তারা প্রতি এদেশে বাস করা প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি ভোগকারীদের নিজেদের লোক জ্ঞান করে এখনও কেঁদে ওঠে।

পাকিস্তানিদের এ পরাজয় আমাদের জন্যে বিজয় স্মারক নয় আর, কারণ তারা পিছিয়ে যাওয়াদের দলে। আর আমরা কলঙ্কমুক্তির পথ ধরে অর্জন পথের পথিক। যারা সামনে তাকায় তারা পিছিয়ে যাওয়াদের গুরুত্ব দেয় না। আমরাও দিতে চাই না। তবে বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে যা কিছু সম্পর্কিত তার বিরুদ্ধে কিছু হলে আমরা ছেড়ে দিতে রাজি নই। 

পাকিস্তানের প্রকৃত বন্ধুদের যারা একাত্তরে গণহত্যাকারী, ধর্ষক আর লুটপাটকারী তাদের কৃতকর্মের ফল হাতে ধরিয়ে দিচ্ছি যখন তখন তারা আহাজারিতে মত্ত, প্রতিবাদে উন্মত্ত। তাদের এ আহাজারি-প্রতিবাদ দেখে অন্তত আমরা বুঝতে পারছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভুল করছে না, ভুল করছে না বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, সরকার ও বিচার ব্যবস্থা।

কবির য়াহমদ, প্রধান সম্পাদক, সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর; ইমেইল: [email protected]

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ