আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

Advertise

আমি নদীর কথা বলিতে ব্যাকুল...

আব্দুল করিম কিম  

১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস (ইন্টারন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন ফর রিভারস) । নদীর প্রতি জবাবদিহি করার দিন । নদী আমাদের প্রতিনিয়ত দান করে চলেছে, সেই দানের প্রতিদান আমরা কীভাবে দিই, আজ তার হিসাব-নিকাশের দিন । দিবসটি মানুষকে নদী সম্পর্কে জানায়। প্রতি বছর নানান আয়োজনে বিশ্বের দেশে দেশে এই দিনে নদী রক্ষায় নতুন করে শপথ নেয় মানুষ । নদীর সাথে সংগঠিত অন্যায়ের প্রতিবাদ হয় । নদী সংগ্রামের অর্জিত সাফল্যে উৎসব হয় ।

১৯৯৭ সালে ব্রাজিলে কুরিতিবা শহরে এক সমাবেশ থেকে নদীর প্রতি দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দেওয়া এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেখানে একত্র হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা । তাইওয়ান, ব্রাজিল, চিলি, লেসোথো, আর্জেন্টিনা, থাইল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঐ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা ১৪ মার্চকে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেন। এবার পালিত হচ্ছে ১৯তম নদীকৃত্য দিবস। বাংলাদেশে নদীকৃত্য দিবস উদযাপন শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকে । সিলেটে ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এই দিবস উদযাপন করে যাচ্ছে ।

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উদযাপনের দিনে সিলেটের প্রাণ সুরমা নদীর কাছে আমাদের দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করা প্রয়োজন । উৎসমুখ ভরাটের কারণে বরাক নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে সুরমা নদী । ভারতের মণিপুর রাজ্যের মাও সংসাং হতে উৎপন্ন বরাক নদী বাংলাদেশ সীমান্তে দুটি শাখায় বিভক্ত হয় । এর উত্তরের শাখাটি সুরমা, আর দক্ষিণের শাখার নাম কুশিয়ারা । জকিগঞ্জ উপজেলার উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অমলসিদ নামক স্থানে বরাক, সুরমা ও কুশিয়ারার ত্রিমোহনা । বরাক অমলসিদে ইংরেজি ইউ অক্ষরের মত ডান দিকে বাঁক নিয়ে সুরমা নদী নামে একটি শাখায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তরেখা ধরে উত্তর দিকে প্রবাহিত, আর অন্য শাখা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তরেখা ধরে পশ্চিম-দক্ষিণ দিকে কুশিয়ারা নদী নামে প্রবাহিত হয়েছে ।

অমলসীদে সুরমার উৎসমুখ দীর্ঘ এক দশক ধরে ক্রমান্বয়ে ভরাট হচ্ছে ।  সুরমার তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে বরাকের প্রায় ৮৫% পানি কুশিয়ারা দিয়ে প্রবাহিত হয় । এবারের শুষ্ক মৌসুমে সুরমার উৎসমুখ বরাক থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে । ফলে বরাক নদীর সমস্ত পানি এখন কুশিয়ারা নদী দিয়ে বয়ে যাচ্ছে । তাই জকিগঞ্জের আমলসীদ থেকে কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়ার সংযোগস্থল পর্যন্ত সুরমা এখন মুমূর্ষু । প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকায় মুমূর্ষু সুরমায় ৩৫টির মতো চর জেগেছে। এসব স্থান দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে লোকজন।নদীর মাঝ বরাবর চলছে ফসল ফলানোর চেষ্টা ।

সুরমা বেঁচে আছে কানাইঘাটের লোভাছড়া নদীর দয়ায় । ভারত থেকে প্রবাহিত পাহাড়ি ছড়া লোভা । যা কানাইঘাটের লোভাছড়া চা বাগানের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে । এই ছড়া বা পাহাড়ি ছোট নদী সুরমার শুষ্ক দেহে পানি পৌঁছে দিচ্ছে । যা ধারণ করে শুষ্ক মৌসুমে সুরমা ক্ষীণকায় স্রোতে সিলেট মহানগর অতিক্রম করে । সিলেট মহানগরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা শুষ্ক মৌসুমের সুরমা মূলত লোভা নদীর পানি বয়ে চলছে । লোভার সাথে মিলনের পরে সুরমা বিশ্বনাথ থেকে মিলিত হওয়া বাসিয়া নদী, ছাতকের আফজলাবাদ ইউনিয়নে ডাউকা নদী, জৈন্তা-গোয়াইনঘাট থেকে আসা সারি-গোয়াইন নদী, পিয়াইন নদী, দোয়ারাবাজার থেকে আসা জালিয়া নদী ও মেঘালয় পাহাড়ের  ছোট বড় বিভিন্ন খাল ও ছড়ার মিলনে শক্তি সঞ্চয় করে ছাতক উপজেলা থেকে সুনামগঞ্জের দিকে এগিয়ে যায় । সুনামগঞ্জে সুরমার সাথে মিশেছে বোগাপানি, জাদুকাটা, সোমেশ্বরী এবং কংস নদী । দীর্ঘ পথ পরিক্রম শেষে সুরমা অমলসীদে পৃথক হওয়া বোন কুশিয়ারার সাথে পুনরায় মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয় ।

উৎসমুখ থেকে লোভা নদীর মিলনে মৃত সুরমা কানাইঘাটে আবার প্রাণ ফিরে পেলেও আত্মপরিচয়  হারাতে বসেছে । কিংবদন্তীর নদী সুরমা উৎসমুখ ভরাটের কারণে মাতৃনদী বরাক থেকে ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরছে । যা এই ঐতিহাসিক নদীর অস্তিত্বকে করছে বিপন্ন । লোভা নদী সুরমায় পতিত না হলে সুরমা একেবারেই পানিশূন্য থাকতো । পানিশূন্য নদীতে সৃষ্ট চর মানুষ দখলে নিতে চায় । দখল হওয়া চরে শুরু হয় কৃষি কাজ । এতে নদীর মাটি শক্ত হয়ে বর্ষায় প্লাবনের সৃষ্টি করে । সুরমার শুষ্ক চরেও এখন দখলদারি শুরু হচ্ছে । অমলসীদ থেকে লোভা নদীর মিলন স্থল পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার এলাকা খনন করা না হলে ভবিষ্যতে নদীর কোন চিহ্ন থাকবে না । ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সুরমার উৎসমুখ খননের প্রয়োজনীয়তা যৌথ নদী কমিশনে জরুরীভাবে উত্থাপন করা জরুরী । সিলেটের মানুষের আবেগ অনুভূতির সাথে সম্পর্কযুক্ত সুরমা । তাই সুরমা নদীর আত্মপরিচয় বিলুপ্তির এ সংকটকালে সিলেটবাসীর জেগে ওঠা প্রয়োজন । সুরমার আত্মপরিচয় রক্ষা ও সিলেটের হাজার বছরের সুরমাকেন্দ্রিক ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষায় অবিলম্বে সুরমার উৎসমুখ খনন করা প্রয়োজন ।

সুরমা নদী সিলেটের প্রাণ । সিলেট নগরী সুরমা নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠেছে । সিলেটবাসীর ঠিকানা সুরমা । তাই 'সুরমা নদীর তীরে আমার ঠিকানারে...' আমরা অবলীলায় গেয়ে যাই । কিন্তু সেই সুরমা নদীর সাথে অত্যন্ত অন্যায় চলছে । নগর জীবনের সমস্ত আবর্জনা সুরমা নদীতে ফেলা হচ্ছে । সুরমার সাথে সংযুক্ত খাল ও ছড়াগুলোতে গৃহস্থালি আবর্জনা, হোটেল-রেস্তোরা, হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ।

সিটি কর্পোরেশন মহানগরীর খাল ও ছড়া থেকে নিয়মিত আবর্জনা অপসারণের চেষ্টা করছে । কিন্তু আবর্জনা ফেলা বন্ধ হচ্ছে না । ফলে অপসারণের কিছুদিন পরেই খাল ও ছড়া আবর্জনায় ভরে ওঠে । আর এই আবর্জনার গন্তব্য হয় ঐতিহ্যবাহী সুরমা নদী । এভাবে যদি দূষণ অব্যাহত থাকে তবে বুড়িগঙ্গা বা তুরাগের মত অবস্থা হবে সুরমার । তাই সুরমাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে । সিটি কর্পোরেশনকে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে । একই সাথে নগরবাসীকে খাল, ছড়া, জলাশয় ও নদীতে আবর্জনা ফেলার বদ অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে ।

বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল এই সিলেট বিভাগে এক সময় শত নদীর প্রবাহ ছিল । অনেক নদী হারিয়ে গেছে । অবশিষ্ট নদীর অস্তিত্ব হুমকিতে । সিলেট বিভাগের অনেক নদী আন্তঃ সীমান্তের । যা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের আসাম,মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্য থেকে সিলেতে প্রবেশ করেছে । আন্তঃ-সীমান্ত এ নদীগুলো হচ্ছে সুরমা, কুশিয়ারা, ধলা, পিয়াইন, সারী-গোয়াইন, লোভা, সোনাইবরদল, মনু, ধলাই, জুরি, লংলা, গোপলা, যাদুকাঁটা, জালিয়াখালী, ধামালিয়া, খাসিয়ামারা, উমিয়াম, সোমেশরী, খোয়াই, সুতাং ও সোনাই । এই নদী গুলোর অনেক শাখা নদী ও উপনদী রয়েছে সিলেট বিভাগের চার জেলায় । আন্তঃ-সীমান্ত এই নদীগুলোর অবস্থা ভালো নয় । নদীগুলোকে ভারত শাসন ও শোষণ করে চলেছে । সিলেট বিভাগের প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার উজানে বরাক নদীতে ভারত সরকারের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প 'টিমাইমুখ ড্যাম' ও ফুলেরতল ব্যারেজ এমনই এক শাসন-শোষণের প্রক্রিয়া । বাংলাদেশ ও ভারতে এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জোরালো হয়ে উঠলে প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে এগুতে থাকে । যা এখনো বাতিল করা হয় নাই । এরই মধ্যে মনু, ধলা, পিয়াইন, খোয়াই ও ধলাই নদীতে বাঁধ ও স্লুইসগেট বসিয়ে শুকনো মৌসুমে একতরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার চলছে । মনু নদীর উজানে ত্রিপুরা রাজ্যের কেলা শহরের কাছে কাঞ্চনবাড়িতে একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত। ওই বাঁধ থেকে তারা মনু নদীর পানি একতরফা নিয়ন্ত্রণ করছে। ধলাই নদীর উজানে ত্রিপুরার কুলাইয়ে একটি বাঁধ নির্মাণের ফলে মনু ও ধলাই শুকনো মৌসুমে প্রায় পানিশূন্য হয়ে যায় । পিয়াইন নদীর মাতৃনদী ডাউকি নদীর পশ্চিম তীরে ভারত ৪৩ মিটার লম্বা, ৯ মিটার চওড়া ও ৯ মিটার উঁচু গ্রোয়েন নির্মাণ করেছে। এ গ্রোয়েনের কারণে জাফলং কোয়ারিতে পাথর আসার পরিমাণ কমে গেছে। খোয়াই নদীর উজানে ত্রিপুরা রাজ্যের চাকমাঘাটে ও কল্যাণপুরে দুটি বাঁধ নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে।

সীমান্ত নদী সারি বা সারি-গোয়াইনের উজানে বাঁধ নির্মাণ করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে ভারত । ভারতের মাইনটডু এবং লিমরিয়াং নদীর মিলিত স্রোত সারি নামে সিলেটের জৈন্তাপুরের লালাখাল চা বাগানের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে । মাইনটডু-লেসকা ড্যামটি ওমশাকিন, মাইনটডু এবং লামু নদীর সংযোগস্থল লেসকার ১শ’ মিটার উজানে অবস্থিত। এটি জৈন্তিয়া হিলস জেলার আমলারেম ব্লকের দেংশাকাপ গ্রামের কাছে তৈরি হয়েছে। মেঘালয় রাজ্য বিদ্যুৎ বোর্ড এ প্রকল্পের ৩টি ইউনিট থেকে ৪২ মেগাওয়াট করে মোট ১২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ করার জন্য বাঁধ দিচ্ছে। ড্যামটির উচ্চতা ৫৯ মিটার। ড্যামের স্থাপনার মধ্যে রয়েছে লেসকা পয়েন্টে জলাধার এবং এর সঙ্গে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কন্ডাক্টর সিস্টেম। যাতে আছে প্রেসার টানেল এবং পেনস্টেক পাইপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বাঁধের জলাধারে তারা ইচ্ছামত পানি ধরে রাখতে পারবে এবং প্রয়োজনে ছেড়ে দিতেও পারবে। ফলে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের সারি নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাব দেখা দেবে এবং বর্ষাকালে ভাটির দেশ বাংলাদেশ অতিপ্লাবনের মুখে পড়বে। এ বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। চলতি বর্ষা মৌসুমে সারি নদীতে উজানের ঢল নামেনি। ফলে সীমান্তবর্তী হরিপুর হাওরসহ জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল ও খালে পর্যাপ্ত পানি হয়নি। সিলেট বিভাগে প্রবেশকারী প্রায় প্রতিটি আন্তঃ-সীমান্ত নদীর উজানে ভারতের পানি নিয়ন্ত্রণ এ অঞ্চলের নদ-নদী তথা সার্বিক পরিবেশ প্রতিবেশের জন্য অশনি সংকেত । ভারতের এই নদী নিয়ন্ত্রণ আন্তর্জাতিক নদী আইনের চরম লঙ্ঘন ।


উজানে ভারতের এই বৈরি আচরণের পাশাপাশি স্বদেশেও নদীর সাথে নিপীড়ন চলছে । সিলেটে বিভাগে পিয়াইন, সারি, ধলাই, লোভা, যাদুকাটা, চলতি নদী, রাংপানি ইত্যাদি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত করে নির্মম পন্থায় পাথর উত্তোলন যেন স্বাভাবিক ঘটনা । অপরিকল্পিত পাথর উত্তোলনে ডাউকি নদী আজ হারিয়ে গেছে । সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই ও মনূ নদী নানাভাবে বর্জ্য দূষণের স্বীকার । সোনাই নদীর অভ্যন্তরে নির্মিত সায়হাম ফিউচার পার্ক নদীরক্ষায় প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতার নির্মম সাক্ষী । মাধবপুর-চুনারুঘাটে গড়ে ওঠা শিল্পাঞ্চল সুতাং, সুনাই, বলভদ্র নদীর পানি বিষাক্ত করছে । সিলেট বিভাগের অধিকাংশ নদী থেকে ইচ্ছে খুশি বালি উত্তোলন করা হয় । বালু ব্যবসায়ীদের কাছে নদী মুনাফার আঁধার । নদীতে ইচ্ছে খুশি বাঁশের বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা এখন অপরাধের পর্যায়ে পরে না । সিলেট বিভাগের অধিকাংশ নদীতে বর্ষা শেষ পানি কমে যাওয়ার সময় বাঁশের বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালীরা মাছের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে । শুষ্ক মৌসুমে নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি সেঁচে মাছ ধরার ঐতিহ্য সৃষ্টি হচ্ছে ।

এভাবে চলতে থাকলে সিলেট তথা দেশের জন্য ভয়াবহ দুঃসময় অপেক্ষা করছে । সিলেটের পরিবেশ প্রতিবেশ সুরক্ষায় প্রতিটি নদীকে বাঁচাতে হবে । নদীর পাশে দাঁড়াতে হবে । নদীর সাথে হওয়া অন্যায় চিহ্নিত করে প্রতিরোধে নামতে হবে । আন্তঃ-সীমান্ত নদীর সমস্যা সমাধানে ভারতকে চাপে রাখতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে । মৃত ও ভরাট নদী ড্রেজিং করে তার প্রবাহ ও নাব্যতা পূনরোদ্ধার এবং নদীর মাটি/পাড় ইজারা দেয়া বন্ধ করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসমূহ, নগর উন্নয়ন সংস্থাসমূহ, বিআইডব্লিটিএ,নদী কমিশন, নদী টাস্কফোর্সকে দৃঢ়ভাবে নদী-বান্ধব নীতি অনুসরণ করতে হবে। নদীতে বাঁধ-ব্যারেজ-রেগুলেটর বসানোর ‘বেষ্টনী নীতি’ ভিত্তিক  ভুল নদী ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বন্ধ এবং ‘বাংলাদেশ ডেল্টা পরিকল্পনার ২১০০’ নামে সেই একই ভুল ব্যবস্থাপনা চালুর সাম্প্রতিক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশকে জাতিসংঘ প্রণীত পানি প্রবাহ আইন ১৯৯৭ অবিলম্বে স্বাক্ষর ও সে অনুযায়ী নদীরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতকে উক্ত আইন অনুস্বাক্ষরে রাজী করাতে হবে ও তার ভিত্তিতে একটি আঞ্চলিক পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা নীতি ও কৌশল প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে সকল আন্তঃ-সীমান্ত নদী ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।



আব্দুল করিম কিম, সমন্বয়ক, সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও প্রকৃতি রক্ষা পরিষদ।

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪১ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬২ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ১৯ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩০ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৫ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ