আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা

মুহম্মদ জাফর ইকবাল  

১.
আমি ছোট ছেলেমেয়েদের জন্যে লেখালেখি করি তাদের সাথে আমার এক ধরনের যোগাযোগ আছে। তাদের দুঃখ কষ্টের অনেক কাহিনী যেগুলো অন্যরা কখনো জানতে পারে না, আমি সেগুলো মাঝে মাঝে জেনে যাই। চিঠি লেখার সময় টপ টপ করে চোখের পানি পড়ে চিঠির লেখা লেপটে গিয়েছে সেরকম অনেক চিঠি আমি পেয়েছি। মৃত্যুপথ যাত্রী কোনো এক কিশোরীর কাছ থেকে নিয়মিত চিঠি আসতে আসতে হঠাৎ করে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অর্থ কী সেটিও আমি জানি।

একটুখানি উৎসাহ দেয়ার কারণে পুরোপুরি হতাশাগ্রস্ত একজন নতুন করে জীবন শুরু করেছে সেই আনন্দটুকুও আমি অসংখ্যবার উপভোগ করেছি। সবাই বিষয়টা লক্ষ করেছেন কী না আমি জানি না, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের অনেকের জীবনে এখন প্রতিযোগিতার মতো কিছু বিষয় বুকের উপর ভারি পাথরের মতো চেপে বসতে শুরু করেছে।

আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করা এবং বাকি সময় মাঠে ঘাটে ছোটাছুটি করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না। একবারও মনে হয়নি জীবনটা অপূর্ণ রয়ে গেছে। মাঝে মাঝে স্কুলে যে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা হতো না তা নয়, রচনা প্রতিযোগিতায় লম্বা লম্বা রচনা লিখেছি, আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় (আঞ্চলিক উচ্চারণ) আবৃত্তি করার চেষ্টা করেছি, দৌড় প্রতিযোগিতায় সবার পেছনে পেছনে দৌড়ে গিয়েছি- কখনো কোথাও কোনো পুরস্কার পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। সে কারণেই কী না জানি না প্রতিযোগিতার বিষয়টা আমার কাছে কখনোই

আনন্দময় ছিল না। এখনো নিশ্চয়ই শিশু কিশোরদের অনেকের কাছে বিষয়টা মোটেও আনন্দময় নয়!

আমাদের দেশে গণিত অলিম্পিয়াড শুরু করার আগে আমরা প্রথমবার বিষয়টা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিলাম। বিশ্ব গণিত অলিম্পিয়াডে টিম পাঠাতে হলে আমাদেরকে এই দেশের বাচ্চা বাচ্চা গণিতবিদদের খুঁজে বের করতে হবে এবং সেটা করতে হলে কোনো এক ধরনের প্রতিযোগিতা করেই সেটা বের করতে হবে। তারপরও আমরা কোনোভাবেই পুরো প্রক্রিয়াটি শুধু একটা প্রতিযোগিতা হিসেবে শুরু করতে চাইনি। তাই অনেক ভেবেচিন্তে আমরা নাম দিয়েছিলাম গণিত উৎসব। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় মাত্র অল্প কয়জন কিন্তু উৎসবে যোগ দেয় সবাই। শুধু যে উৎসব নাম দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে ফেলা হয়েছে তা নয়, গণিত অলিম্পিয়াডের পুরো ব্যাপারটা যে আসলেই একটা উৎসব সেটা প্রমাণ করার জন্যে সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেছে- এবং আমার ধারণা আমরা বেশ সফলও হয়েছি।

আমি যখনই কোনো একটা গণিত অলিম্পিয়াডে হাজির থাকার সুযোগ পাই এবং যদি বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে আমি পুরো সময়টুকু ব্যয় করি তাদেরকে বোঝানোর জন্য যে এই উৎসবে প্রতিযোগিতার অংশটুকুর গুরুত্ব নেই- শুধুমাত্র প্রয়োজনের কারণে করতে হচ্ছে এবং উৎসবটুকুই হচ্ছে আসল ব্যাপার।

যখন পুরস্কার দেওয়ার সময় হয় তখন শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়ন রানার্স আপ পুরস্কার না দিয়ে পঞ্চাশ ষাট সত্তুরটি পুরস্কার দেওয়া হয়।( এ ব্যাপারে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের তুলনা নেই, তাদের পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে হাজির থাকে এবং সবাই পুরস্কার পায়। শুধু তাই নয় বিশাল বিশাল বইয়ের বান্ডিলের বড় পুরস্কারগুলো দেওয়া হয় লটারি করে। লটারিতে নাম না ওঠার আফসোস হয়তো থাকে, কিন্তু পরাজিত হওয়ার গ্লানিটুকু থাকে না!)

২.
আমরা যখন সত্যিকারের জীবন শুরু করি সেখানে কিন্তু প্রতিযোগিতার কোনো চিহ্ন থাকে না, সবকিছু করতে হয় সহযোগিতা দিয়ে। আমি যখন আমার ছাত্রছাত্রীদের পড়াই তখন আমি আমার বিভাগের অন্য শিক্ষকদের বলি না, “তুমিও পড়াও আমিও পড়াই, দেখি কে ভালো পড়াতে পারে।” প্রশ্ন করার সময় আমি সবাইকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলি না, “দেখি কে আমার থেকে ভালো প্রশ্ন করতে পারে!” পরীক্ষার খাতা দেখার সময় সবাই মিলে একটি খাতা দেখে নিজেদের মাঝে প্রতিযোগিতা করি না!

যখন সত্যিকারের কাজ করতে হয় তখন সবাই মিলে সেটি করতে হয়, যে যেটা ভালো পারে তাকে সেটি করতে দেওয়া হয়। সব কাজ যে আনন্দময় হয় তা নয়, আনন্দহীন কাজগুলো সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নেয়া হয়। কেউ কোনো একটা কাজ করতে না পারলে অন্যেরা সেটা করে দেয়। একটা কাজ কতো সুন্দর করে শেষ হবে তার পুরোটা নির্ভর করে সবাই মিলে কতো চমৎকারভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে তার উপর!

যদি সহযোগিতাটাই জীবনের সাফল্যের আসল কথা, তাহলে আমরা কেন প্রতিমুহূর্তে আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দিই? আমরা সত্যিকারের জীবনের জন্যে প্রস্তুত না করে কেন তাকে স্বার্থপর হতে শেখাই? প্রতিযোগিতায় আসল কথাটিই কী অন্য সবাইকে ঠেলে, কনুই দিয়ে গুতো দিয়ে পেছনে ফেলে নিজে সামনে এগিয়ে যাওয়া নয়? আমরা বিজয়ীর আনন্দটুকু দেখি পরাজিতদের দুঃখটা কেন দেখি না?

শুরুতেই বলেছিলাম যে ছোট ছেলেমেয়েদের অনেকের মনের দুঃখ বেদনা আর হতাশার কথা আমি জানি। সেই দাবিটুকু থেকে আমি বলতে পারি তাদের দুঃখ, বেদনা এবং হতাশার একটা বড় কারণ হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যে পুরস্কার পাচ্ছে না তার মনে স্বাভাবিকভাবে একটা দুঃখ হয়। তখন তার আপনজনের দায়িত্ব হচ্ছে তাকে উৎসাহ দিয়ে সেই দুঃখ থেকে তুলে আনা। কিন্তু আমাদের দেশে এখন অতি বিচিত্র এক ধরনের অভিভাবক প্রজাতির জন্ম হয়েছে তাদের কাজ হচ্ছে ছেলেমেয়েদের সব ধরনের প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দেওয়া। শুধু তাই নয় সেই প্রতিযোগিতায় সফল হতে না পারলে নিজের ছেলে কিংবা মেয়েটিকে অপমান করা, লজ্জা দেওয়া, অন্যদের সাথে তুলনা করে তাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া! মা-বাবারা জানেন না কখনো কখনো তারা তাদের ছেলেমেয়েকে এমন এক জায়গায় ঠেলে নিয়ে যান যে লজ্জায় দুঃখে অপমানে তারা আত্মহত্যার কথা চিন্তা করে। কৈশোরের একটা বয়স হয় আবেগের বয়স সেই সময় লজ্জা দুঃখ অপমানে সত্যি সত্যি যদি কেউ গলায় দঁড়ি দিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মা বাবার চাপের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাও এখন তাদের স্বাভাবিক করে তুলতে পারছেন না, এরকম উদাহরণ আমি অনেকবার দেখেছি!

আমি টেলিভিশন দেখি না বলে অনেক ধরনের নিষ্ঠুরতা আমাকে দেখতে হয় না। একবারে শিশুদের গানের একটা প্রতিযোগিতা হয় বলে জানতাম ঘটনাক্রমে কারো একজনের বাসায় আমার সেই প্রতিযোগিতার অংশ বিশেষ দেখতে হয়েছিল। ছোট ছোট শিশুদের কী চমৎকার গানের গলা, সুরের উপর কী অবিশ্বাস্য দখল আমি মুগ্ধ হয়ে দেখেছিলাম। কিন্তু একপর্যায় হতচকিত হয়ে আবিষ্কার করলাম প্রতিযোগিতার কোনো কোনো শিশু ছিটকে পড়ছে এবং সেই শিশুগুলোর কান্না দেখে আমার বুকটা ভেঙে গিয়েছিল। টেলিভিশনের বড় বড় হর্তা কর্তা বিধাতাদের কে অধিকার দিয়েছে ছোট ছোট শিশুদের ডেকে নিয়ে তাদের ছোট হৃদয়টুকু দুমড়ে মুচড়ে দেওয়ার?

আমাকে নানা অনুষ্ঠানে ডাকা হয়। মাঝে মাঝে বড় বড় প্রতিযোগিতার বিচারক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমি কখনো সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করি না। আমি বিচারক হয়ে একজনকে ভালো অন্যজনকে খারাপ বলতে পারি না। আমার কাছে সবাই ভালো। বিচারক হওয়ার সব চাইতে বিচিত্র আমন্ত্রণটি ছিল কোনো এক ধরনের সুন্দরী প্রতিযোগিতার। আমার ছাত্রীদের কিংবা ছাত্রীর বয়সী মেয়েদের সৌন্দর্য বিচার করা যে আমার কাজ হতে পারে না সেটা আয়োজকদের বোঝাতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল। তারপরেও পাকচক্রে আমাকে বিচারকের জায়গায় ঠেলে দেওয়া হয় না তা না। একটি ঘটনার কথা মনে আছে- সিলেটে কোনো একটি টেলিভিশনে গানের প্রতিযোগিতায় আমাকে দর্শক হিসেবে নিয়ে যাওয়া হলো। প্রতিযোগীরা শিশু নয় কাজেই এটা শিশু নির্যাতন ক্যাটাগরিতে ফেললে হবে না তাই আমি রাজি হয়েছিলাম। আমাকে বিচারকদের পাশে বসিয়ে দেয়া হল এবং প্রতিযোগীরা একজন একজন করে মঞ্চে এসে গান গাইতে লাগলো। একজন গান গাওয়া শেষ করা মাত্রই বিচারকেরা ভদ্রতা করে আমার মন্তব্য শুনতে চাইলেন। আমি সারাজীবনই অল্পতে খুশি হয়ে এসেছি তাই একেবারে উচ্ছ্বাসিত হয়ে প্রশংসা শুরু করে দিলাম। আমার এরকম উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা শুনে সেই গায়ককে নির্বাচিত করা ছাড়া বিচারকদের আর কোনো উপায় ছিল না। এবং সেটা ঘটতেই থাকলো। প্রতিবার একজন গান গায় এবং আমি গায়ক কিংবা গায়িকার প্রশংসায় উচ্ছ্বাসিত হয়ে উঠি। এবং আমার উচ্ছ্বাস দেখে বিচারকরা চক্ষুলজ্জার খাতিরে একজনের পর একজনকে নির্বাচিত করে যেতে লাগলো। ভাগ্যিস আমার বেশি সময় ছিল না তাই যখন বিদায় নিতে চাইলাম সবাই খুব আগ্রহ এবং উৎসাহ নিয়ে আমাকে বিদায় দিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের প্রচলিত  নিষ্ঠুরতায় ফিরে গেল!

৩.
আজকাল জিপিএ ফাইভ কিংবা গোল্ডেন ফাইভ নামে নতুন এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমি অস্বীকার করছি না সবাই পরীক্ষায় ভালো করতে চায় এবং কেউ গোল্ডেন ফাইভ পেলে সেটা নিয়ে একশ বার আনন্দ করা যায়। কিন্তু গোল্ডেন ফাইভ না পেলে যখন একটি ছেলে বা মেয়েকে তার বাবা মা রীতিমতো নির্যাতন করতে শুরু করেন তার থেকে ভয়াবহ আর কিছু হতে পারে না। যে ছেলে বা মেয়েটি পরীক্ষায় একটা ভালো ফলাফল আশা করছে যদি সেটা তার মনোমত না হয় তার মন খারাপ হয়। তখন অভিভাবক, আপনজন, বন্ধুবান্ধবদের দায়িত্ব তাকে উৎসাহ দিয়ে স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা কিন্তু যখন তার উল্টো ব্যাপারটি ঘটে, বিষয়টাকে ব্যর্থতা হিসেবে ধরে নিয়ে তাকে শাস্তি দেয়া শুরু হয়ে যায় তার চাইতে হৃদয়বিদারক আর কি হতে পারে? আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতিটি ভালো নয়, এখনো আমরা ছেলেমেয়েদের ঠিক করে মূল্যায়ন করতে পারি না। তাই আমি এতটুকু অবাক হই না যখন দেখতে পাই দেশ সমাজ কিংবা পৃথিবীকে যারা কিছু একটা দিচ্ছে তারা পাইকারিভাবে গোল্ডেন ফাইভ পাওয়া ছেলেমেয়ে নয়। মানুষের জীবনে অনেক ধরনের বুদ্ধিমত্তা থাকে, অনেক ধরনের প্রতিভা থাকে অথচ আমরা শুধু লেখাপড়ার বুদ্ধিমত্তাটুকু যাচাই করে একজনকে বিচার করে ফেলি। একটি মেয়ের জিপিএ ফাইভ হয়নি বলে তাকে হয়তো সেরা ছাত্রী হিসেবে বিবেচনা করি না। কিন্তু আমরা হয়তো কখনো খোঁজ নিয়ে জানতে পারিনি, এই মেয়েটির মা মারা গিয়েছে, ছোট বোনগুলোকে বুকে আগলে বড় করেছে। সংসারের অনেক দায়িত্ব পালন করছে। যদি তার এই বাড়তি বিষয়গুলোও তার মেধা হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ থাকতো তাহলে কী তাকে অন্য সবার তুলনায় সবচেয়ে সেরা ছাত্রী হিসেবে গ্রহণ করা হতো না? শুধুমাত্র লেখাপড়ার প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের আমরা পুরস্কার দিচ্ছি কিন্তু লেখাপড়া ছাড়াও সবারই যে একেবারে নিজস্ব এক ধরনের মেধা রয়েছে সেই মেধাটা কেন আমরা খোঁজ করি না? কেন সেটা বিকশিত করার চেষ্টা করি না?

আমি যতই প্রতিযোগিতার বিপক্ষে কথা বলি না কেন সবাই আমার কথা মেনে নেবে না। পৃথিবীতে অসংখ্য প্রতিযোগিতা, তাই এখন আমরা সবাইকে প্রতিযোগী হতে উৎসাহ দেই, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য নিয়ম কানুন শেখাতে থাকি। অনেকেই বিশ্বাস করেন শুধুমাত্র প্রতিযোগিতা করেই বিশাল একটা দলকে খুব দ্রুত অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়া যায় এবং তাদের কথাতে সত্যতাও আছে।

তাই আমি যখন সুযোগ পাই তখন ছেলেমেয়েদেরকে বলি, অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করো না। যদি প্রতিযোগিতা করতে হয় সেটি করো নিজের সাথে। অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করলে হেরে গেলে মন খারাপ হয়। নিজের সাথে প্রতিযোগিতায় কেউ কখনো হেরে যায় না। সত্যিকারের প্রতিযোগিতা থেকে সেটি ভালো, সেই প্রতিযোগিতা করে সবাই সামনে এগিয়ে যায়, কেউ হেরে যায় না। কেউ মন খারাপ করে না।

আমি জানি না আমার এই লেখাটি অভিভাবকেরা পড়বেন কি না। যদি পরেন তাহলে তাদের কাছে করজোড়ে কাতর গলায় বলব আপনারা আপনাদের ছেলেমেয়েদের অর্থহীন প্রতিযোগিতার মাঝে ঠেলে দেবেন না। তারা নিজেরা যদি কোনো কিছুতে অংশ নিতে চায় তাদেরকে অংশ নিতে দিন। তারা যদি ভালো করে আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে যান কিন্তু যদি পুরস্কার না পায় তাদেরকে তিরস্কার করবেন না। উৎসাহ দিন। তাদের শৈশবটি আনন্দময় করে রাখুন। শৈশবে কোথাও আমি কোনো প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছি বলে মনে পরে না। কিন্তু সে জন্য আমার শৈশবের আনন্দটুকু কোথাও এতটুকু ম্লান হয়নি।

আপনারা অনেকেই জানেন না আপনাদের অসহায় ছেলেমেয়েদের অর্থহীন প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিয়ে তাদের জীবনটাকে কতটুকু বিষময় করে তুলছেন। তারা আপনাদের সেটা বলতে সাহস পায় না। চোখের পানি ফেলতে ফেলতে আমাকে বলে শৈশবটা যদি আনন্দময় না হয় তাহলে সেই জীবনটা কি পরিপূর্ণ একটা জীবন হতে পারে?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ