আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

অন্ধকারের উৎস হতে

ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী  

বিজয়ের ক্ষণটি আমার এখনো মনে পড়ে। ৬ ডিসেম্বর যখন যশোর শত্রুমুক্ত হয়, তখন থেকেই প্রতিদিন আমাদের ঘুম ভাঙতো একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্নে। আমরা জানতাম না, সেই দিনটি কবে। বিজয়ের খবর যখন জানতে পারলাম, আমার প্রথম অনুভূতি হয়েছিল, এখন আমি কোথায় যাব? দীর্ঘ অনাহারের পর রাজকীয় খাবার সামনে পেলে একজন বুভুক্ষু মানুষ যেমন হকচকিয়ে যায়, আমার অবস্থা ঠিক সেরকম হয়েছিল। প্রকাণ্ড রক্তসমুদ্র সাঁতরে, উজাড় হওয়া অজস্র শহর-বন্দর-গ্রাম পেরিয়ে সম্ভাবনার বেলাভূমিতে মুক্তির যে সূর্য উদিত হলো তার আলোর ছটায় আমার চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল। আমি বাকহারা হয়ে পড়েছিলাম।

আজ ৪৫ বছর পর ঠিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে স্মৃতির দখিন জানালা খুলে বসাটা আমার জন্যে কঠিন। আয়নার উপরে জমা ধুলোর পরত সরালে তবু এখনো ঝকঝকে সেই স্বর্ণালী দিনের ছবি। আয়নার সুবিধা এই, তাতে কেবল বাইরের প্রতিবিম্ব ভাসে; ভেতরের জমাট রক্তের ছবি আড়ালেই রয়ে যায়। আজ এই দিনে যখন ফিরে দেখছি, প্রাপ্তির বিপরীতে অপ্রাপ্তি, মুক্তির বিপরীতে বন্ধনের নাগপাশ, স্বপ্নের বিপরীতে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা এমন এক দোলাচলে এনে দাঁড় করিয়েছে যেখান থেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছোনোর কিছু নেই। ছোট্ট এই লেখা তাই যাপিত জীবনের আখ্যান, ফিরে ফিরে দেখার গল্প।


নয় মাসের সেই মহাকাব্যিক যুদ্ধ আমার মতোই ওলটপালট করে দিয়েছিল এই জনপদের কোটি মানুষের জীবনকে। মহাকাব্য আক্ষরিক অর্থেই; এর পৃষ্ঠান্তরে এতো কান্না, এতো স্বপ্ন আর এত সম্ভাবনার টুকরো টুকরো গল্প ছড়িয়ে আছে, সভ্যতার ইতিহাসেই যার তুলনা দুর্লভ। মুক্তিযুদ্ধ কারো কাছে অস্ত্র হাতে বনজঙ্গল দাপিয়ে বেড়ানো, কার কাছে শেষ গুলি পর্যন্ত দাঁত কামড়ে থাকার প্রতিজ্ঞা, কারো কাছে গুলিবিদ্ধ বাবা কিংবা ধর্ষিতা মায়ের রক্তছোঁয়া শপথ। আমার মুক্তিযুদ্ধের বহু রূপ। এই মুক্তিযুদ্ধ যেমন আমাকে একা করে দিয়েছিল তেমনি এটাও শিখিয়েছিল একা কিভাবে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে হয়। নয় মাসে আমি অসংখ্য মানুষের মুখোশের আড়ালের মুখ দেখেছিলাম, জেনেছিলাম কেবল দুঃসময়ই মানুষকে আলাদা করতে শেখায় বন্ধু আর বন্ধুবেশীদের।

যুদ্ধের নির্মমতার চূড়ান্ত রূপের সাথে আমি পরিচিত হই অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। রাত তিনটার দিকে ছয়টি মিলিটারি জিপ আমার বাড়ি ঘিরে ফেলে। তারা চিৎকার করে আমার নাম ধরে ডেকে ডেকে আমাকে বাড়ি থেকে নামতে বলে। বিপদ বুঝতে পেরে আমি বলি, "ফেরদৌসি তো খুলনা গিয়েছে, আমি তার আয়া"। তাদের মধ্যে একজন তখন বলে, "আমি তোমাকে চিনি, তুমি ফেরদৌসি"। তারা বলে আমার নামে হত্যা মামলার ওয়ারেন্ট আছে। আমি তাদেরকে ওয়ারেন্ট দেখানোর কথাও বলতে পারছিলাম না, কারণ ওয়ারেন্ট দেখানোর কথা বলেও তারা আমার বাসায় উঠে আসতে পারে। আমি তখন কাতর স্বরে অনুরোধ করলাম, "আমার বাসায় একটি মেয়ে আছে। আমি তাকে তার বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে এরপর যাব। এতরাতে তোমরা আমাকে ধরে নিয়ে গেলে সে একা কোথায় যাবে?" এতে তারা চলে যায় কিন্তু পরদিনই আবার এসে হাজির হয়। কাজের মেয়ে আলেয়াকে আমি তার বাসায় রেখে এসেছিলাম।

পরদিন পাকিস্তানি সৈন্যরা আবার এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করলো। আমি দরজা খুলে দেখলাম প্রত্যেকেই মদ্যপ অবস্থায়। আমি তাদেরকে বললাম, “একটু অপেক্ষা করো, আমি ড্রেস চেঞ্জ করে আসছি”। তখন একজন জবাব দিল, “তার দরকার নেই, আমরাই তোমার ড্রেস চেঞ্জ করে দিব”। তারা আমাকে গাড়িতে তুলে নিলো। গাড়ি যখন নওয়াপাড়ার কাছাকাছি, আমি গাড়ির ভেতরেই গ্যাং রেপড হলাম। আমি বুঝতে পারছিলাম, তারা আমাকে ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ইংরেজিতে, উর্দুতে বারবার তাদেরকে অনুরোধ করে বলছিলাম, “তোমরা আমাকে রেপ করো, হত্যা করো কিন্তু ক্যাম্পে নিয়ে যেও না”। আমার মনে হচ্ছিল ঐ নরকে একবার ঢুকে গেলে আমি আর কখনো সেখান থেকে বের হতে পারবো না। ওরা আমার অনুরোধে কর্ণপাত করলো না, আমার আর্তনাদকে বয়ে নিয়ে গাড়িবহর ছুটলো ক্যান্টনমেন্টের দিকে।

ক্যান্টনমেন্টের বলছিলাম বাঁশের বেড়া দেয়া একটা ঘরে আমাকে ধাক্কা মেরে ঢুকিয়ে দেয়া হলো। আমি তখন চিৎকার করছিলাম, বারবার বলছিলাম আমাকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যাও। সেই বাঁশের বেড়া দেয়া রুমের পাশে আরো অনেকগুলো একইরকম রুম ছিলো যেখানে ধরে আনা মেয়েদের উপর পাশবিক অত্যাচার করা হতো। আমি সেইসব বন্দি মেয়েদের দেখলাম। কারো গায়ের কাপড় ছেঁড়া, কেউবা সম্পূর্ণ বিবস্ত্র। কেউ কেউ উন্মাদের মতো হাসছিলো, আমি বুঝতে পারছিলাম তাদের কেউ স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। আবছা অন্ধকারে আমি পুরোটা দেখতে পারছিলাম না কিন্তু এ এমনই এক নারকীয় পরিবেশ ছিল যার শব্দে-গন্ধে পাশবিকতা অনুভব করা যায়। আমি টানা ২৮ ঘন্টা অচেতন ছিলাম। একসময় আমার বন্দিত্ব আর বিভীষিকার দিন শেষ হয়, আমি ক্যান্টনমেন্ট থেকে ছাড়া পাই।


ক্যান্টনমেন্ট থেকে ছাড়া পেলাম কিন্তু ততদিনে আমার পুরো পৃথিবীটাই ক্যান্টনমেন্ট হয়ে গেছে। মাথার উপর প্রকাণ্ড অপমানের বোঝা নিয়ে আমি ন্যুব্জ হয়ে পড়েছিলাম।কারো সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতাম না। আমি আলো ভয় পেতাম, কারো সামনে দাঁড়াতে গেলে সংকোচে মাটির সাথে মিশে যেতাম। কলঙ্কের কালি আমাকে মানসিকভাবে মেরে ফেলেছিল। সেখান থেকে কিভাবে ফিরে এলাম আমি এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। হয়তো সেই বিভীষিকার দিনগুলো, যখন বেঁচে থাকার চেয়ে বড় কোনো স্বপ্ন ছিল না সেগুলোই আমাকে শক্তি যুগিয়েছিল; কেননা সর্বস্বহারা মানুষের হারানোর কিছু থাকে না, আমারও ছিল না। শুরু হলো আমার নতুন লড়াই। আমি তখন আর কারো মুখাপেক্ষী ছিলাম না, কারণ আমি জানতাম আমি একা এবং এই যুদ্ধে আমার হারানোর কিছু নেই।

আমার পরিবারে সবসময় সাংস্কৃতিক আবহাওয়া ছিল। আমার ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। আমার মাও সংস্কৃতিমনা ছিলেন। যুদ্ধের সময় একটা ছোট রুমে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। যুদ্ধটাকে তারা কেবল স্বাভাবিকভাবেই নেন নি, যুদ্ধে সাধ্যমতো অংশগ্রহণও করেছিলেন। কিন্তু তবুও আমাকে গ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের এক ধরনের আপত্তি ছিল। অবশ্য আমারও সংকোচ হতো ঐ বাড়িতে যেতে, মনে হতো আমার কাঁধের উপর কলঙ্কের বোঝা সবসময় চেপে আছে। সেই সময়টাতে আমার জীবনসঙ্গী আমাকে শক্তি যুগিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে যেদিন বাংলাদেশ সরকার আমাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়, সে দিনটি আমার জন্যে বড় আনন্দের। এখনো অনেক বীরাঙ্গনা এই স্বীকৃতিটুকুও পাননি, এ বড় লজ্জা!


মুক্তির যে সূর্যোদয়ের কথা বলেছিলাম, গ্রহণের অন্ধকারে বারবার ঢাকা পড়ে যাওয়ায় সেই জাতীয় মুক্তি আজো অর্জিত হয়নি। জাতির জনককে হত্যার মাধ্যমে রাজনীতি ও দেশের যে উল্টোযাত্রা শুরু হয়েছিল, ২১ বছরের অন্ধকারে সেই ভুলপথে বহুদূর হেঁটে গিয়েছিল দেশ। সে এক দুঃসহ সময় ছিল। চোখের সামনে দেখেছি পরাজয়ের লজ্জা মাথায় নিয়ে যারা আত্মগোপন করেছিল, দোর্দণ্ড প্রতাপে তারা ফিরে এসেছিল রাজনীতির ময়দানে। রাষ্ট্রক্ষমতার ছত্রছায়ায় গাড়িতে উড়িয়েছিল আমাদের প্রাণের পতাকা। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এরকম শব্দগুলো উচ্চারণে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল। পত্রিকা, টেলিভিশনে কোথাও কোনো সাড়াশব্দ ছিল না জাতীয় দিবসগুলোতে। মাঝে মাঝে খুব হতাশ লাগতো। যদি সেই একই জীবনেই থেকে যেতে হয়, তাহলে কী দরকার ছিল ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মদানের?

আমার সেই হতাশা এখন আর নেই। আমি এখন জানি অন্ধকারের এই সুড়ঙ্গ থেকে আমাদের পথ দেখিয়ে নেয়ার জন্য একদল যোগ্য তরুণ আছে, যারা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে, ভালোবাসে। ২০১৩ সালে শাহবাগের গণ আন্দোলন আবার আমাকে স্বপ্ন দেখার সাহস ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার সন্তানসম সেসব তরুণদের প্রতি আমার নিরন্তর ভালোবাসা।


মুক্তির যুদ্ধ নিরন্তর। নয় মাসের যুদ্ধ ছিল অস্ত্রের, লড়াইয়ের এ পর্ব মননের। আমাদেরকে তার জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি নিতে হবে। সাংস্কৃতিক জাগরণ হতে পারে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সাথে সর্বাত্মক সংগ্রামের অন্যতম হাতিয়ার। সবার আগে ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উজ্জ্বল অতীতকে। তার জন্য তরুণদেরই মুখ্য ভূমিকা নিতে হবে। আমি নিশ্চিত জানি, তারা পারবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ-মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রেরণা আর তারুণ্যের শক্তি আমাদেরকে সেই ভোর এনে দিবে যার জন্য দুই চোখে আকাশ ধরেছিল আমার মতো একাত্তরের প্রিয়ভাষিণীরা।
(অনুলিখন: সঞ্জীবন সুদীপ)

ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা ও ভাস্কর

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ