প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
জহিরুল হক বাপি | ৩১ মার্চ, ২০১৭
ছোট বেলায় একটা খেলা খেলতাম। খেলাটা মাঠহীন-মায়াহীন এ শহরের ছোট জায়গায় খেলা যেত। আমাদের এক বন্ধু বলত ‘মোরগ ফাইট’, আর আমরা ‘কক ফাইট’। কুমিল্লার নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নিজেদের ভিতর ‘কক ফাইট’ শুরু করছে। ‘কক ফাইট’ খেলার কারণে পায়ে ব্যথা পেতে পারি ভেবে বাপ-মায়ের এমন ছেঁচা খাইছি যে এর তুলনায় ‘কক ফাইটের’ ব্যথা তো ছিল আট আনা/.৫০ পয়সা দামের কাঠি আইসক্রিমের মতো টেস্টি। বাপ-মা যদি বুঝতো...? আফসোস!
কুমিল্লার নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ (কুমিল্লা) নিজেদের ভিতর ‘কক ফাইট’ বন্ধ করে যদি ‘বিন্দুগুলো’ বুঝতো! কেন্দ্রীয় ভাবেই ভুল সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা করতো!
মাত্র ৩ মাস আগে হেফাজতে ইসলামের চাপে পাঠ্যপুস্তক ‘হেফাজতি মার্কা’ করলেন। কুমিল্লায়ও মুসলমান বেশি দেশের অন্যান্য স্থানের মতো কিন্তু লাভ হলো কি? সাধারণ মুসলমান দূরে থাক যাদের চাপে পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন করলেন তারাই নৌকায় ভোট দেয় নাই। স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি আর হঠাৎ ধর্মীয় রাজনৈতিক ব্যবসায়ীরা চান্স পেলেই আপনাদের ‘কোঁত’ করে গিলে ফেলবে। সব স্কুলকে মাদ্রাসা করে দিলেও লাভ হবে না- কুমিল্লা দৃষ্টান্ত। ৩ মাস আগের কথাই মনে রাখে নাই। সংসদ নির্বাচন তো আরো ২ বছর!
মিনমিনেয়ে ব্লগার হত্যা মেনে নিয়েছিলেন। লাভ হয় নাই। একটা ভোটও বাড়ে নাই। উলটা পুরো দেশে “জঙ্গি বোমা” মারছে পরিচিত শত্রুই। ৩২ বিঘায় লাভ নাই। এরা সুযোগ পেলে সব মানুষ মেরে ১ বিঘায় পুতে ফেলবে, এবং সবার আগে আওয়ামী লীগকেই।
ফুলে মালা, ফুলের তোড়া হাতে দিয়ে, সুন্দর করে দাঁত ভেটকিয়ে, ক্যামেরার দিকে হাসি সহ তাকিয়ে লক্ষ লক্ষ জামাত বিএনপি উঠিয়েছেন নৌকায়। কি ভাবছিলেন নৌকায় উঠা মানে সোনা বান্ধব? নৌকায় চোরাকারবারি, খুনিও উঠে ভেক ধরে। সহযাত্রী হয়। আর আপনারা তো জেনে শুনেই ডাকাত উঠিয়েছেন। নৌকায় ভার বেশি নিলে ডুবে যাওয়াটাই তো শতভাগ বিজ্ঞানসম্মত। নদীও আবার বড়। নায়ের নব্য যাত্রীরা আপনার টোঁডায় পরানো মালা দিয়েই আপনারে মারার জন্য টোঁডায় মালা পরিয়েছে। যতদূর মনে পড়ে কুমিল্লায় ২০০০ বিএনপি-জামায়াত নৌকায় উঠেছে। তার কোন নগরে ‘ড্যান্স’ করছে ইলেকশনের সময়? ও টোঁডা মানে জানেন তো? গলা। নোয়াখালীর খুব গ্রামীণ ভাষা।
আরামে বসে বিএনপি-জামায়াতিদের চাকরী দিছেন। নিজের দলের ত্যাগী, যোগ্য কিন্তু আর্থিক দুর্বল কর্মীটাকে চাকরী দেন নাই; খাম নাই বা চিকন বলে। এর সাথে ভাবছিলেন অনেকে তো টাকা নিয়েও কাজ করে না, আপনি করে দিয়েছেন তাই সে আপনার প্রতি নমনীয়ও হবে যেটা হতো দলীয় কর্মীও। এরা কখনও আপনার হবে না । সাপ-সাপই। যে টাকা খেয়ে তাহারে আপনি বন্ধু বানাইছেন সে টাকার দাম স্বরূপ মরার জন্য তৈরি হোন। সে সব সময়ই আপনার যমদূত। কুমিল্লা থেকে বুঝে নিতে পারেন।
কি ভাবছেন? পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভার, সারাক্ষণ নৌকা নৌকা, কিছু তোষামোদকারীর বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু, মুখে মুখে স্বাধীনতা, প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি বানালেই জনগণ নৌকায়- হেইও। হয় নাই। কুমিল্লায় নমুনা। আপনাদের প্রচার সেলে শতভাগ তো বটেই সাথে আর কয়েকশত ভাগ ফেল। সব দিক দিয়াই ফেল। দেখেন নির্বাচনকালীন সময়ও কুমিল্লায় জঙ্গি আস্তানা পুলিশ ঘিরে রেখেছিল। কিন্তু মানুষ সে জঙ্গি-পোষকদেরই ভোট দিল। তারমানে কে কুমিল্লার ঐ ভোটাররা সব আত্মঘাতী। মোটেও না। এরা বিভ্রান্ত আগের চেয়ে বেশি। কারণ শত্রুপক্ষের আধুনিক সফল প্রচার আর আপনাদের প্রচার সেলে অন্য কিছুর প্রসার। নাকি এমন কোন বিভাগই নাই? নতুন মাথা, নতুন পলিসিমেকার নিয়োগ দিতে পারেন।
খেয়াল করেন বিএনপি-জামায়াত ইলেকশনের সারাদিনই বয়ান দিচ্ছে আওয়ামী লীগ ভোট-চুরি-ডাকাতি করছে। যদি তাই হয় তবে আওয়ামী লীগাররা কি সারাদিন চুরি করে ধানের শীষে ভোট দিছে।
মজার বিষয় হলো সাধারণ জনগণের মনে একবারও আসে নাই বিএনপি-জামায়াত সারা দিন চুরি অভিযোগ করলো অথচ রাতে তারা জিতল। তবে কি তারা মিথ্যুক? কিন্তু ভোটে যদি হারতো তখন জনগণ সহজেই বিশ্বাস করতো আওয়ামী লীগ চুরি করছে।
এমন বিভ্রান্তি দূর না করলে উন্নয়নের রাস্তা দিয়ে কালো পতাকার গাড়ি যাবে।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য