প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
জহিরুল হক বাপি | ২৬ এপ্রিল, ২০১৭
রমেল চাকমার মৃত্যু নিয়ে ক্ষুব্ধ সবাই। আমিও ক্ষুব্ধ। তার মৃত্যু নিয়ে পরস্পরবিরোধী খবর জানি। আমরা কথা যেই অপরাধ করুক তার বিচার হোক। সেটা যেই হোক। সবাই বিচার চান। কিন্তু অবাক বিষয় বিচার চাওয়ার চেয়ে দুইটা বিষয়ে মানুষ অনেক বেশি সোচ্চার। কিছু মানুষ জেনে বুঝেই এ বিষয়ে সোচ্চার তাদের ইস্যু নিয়ে। বাকীরা সম্ভবত রাজনৈতিক কূটচাল বুঝেন না বলেই স্বাভাবিক, মানবিক কারণে জানা বোঝা দলটি দ্বারা ব্যাপকভাবেই প্রভাবিত।
১) বিচারের চেয়ে বেশি সোচ্চার পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী সরানোর বিষয়ে।
২) পুরো সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার বিষয়ে।
পুলিশদের মধ্যে অনেক পুলিশ খারাপ, তাহলে আমরা কি পুরো পুলিশ বাহিনীকে সরিয়ে নিব? কোথায় নিব?
শিক্ষকদের ছাত্রী যৌন হয়রানির খবর তো অহরহ দেখি। আমরা কি সব শিক্ষককে অপসারণ করবো?
এমন সব পেশায় সার্ভিস রুল/ল ভাঙ্গার আমাদের দেশে অহরহ আছে। আগে বিচার হতো না। এখন হয়। উদাহরণ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিচার। যাই হোক গোটা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে চাওয়ার কারণ কি? অন্যান্য পেশার ক্ষেত্রে দেখেছি ব্যক্তির বিচার করার দাবির। এমন কি পুলিশের ক্ষেত্রেও তা হয়েছে, হয়। কিন্তু তনু হত্যা থেকে শুরু করে রমেল হত্যা পর্যন্ত পুরো সেনাবাহিনীকেই বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কেন?? অবস্থা দেখে মনে হয় সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা বাহিনী পাঠিয়েছে বিনোদনের জন্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম অবাধ পতিতা পল্লী সেনাবাহিনীর জন্য। তার সাথে নির্যাতন প্রশিক্ষণের ওপেন ফিল্ড। এমন যদি বছরের পর বছর চলতো সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার কথা।
আমাদের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে পারলে বড় লাভ বিদেশে সেনা বাহিনীর সম্মান ধ্বংস করা। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে আমাদের বড় একটা অংশ আছে। তারা ঐ খানে যে খুব আরামে আছেন তা না। অনেকেই নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন, হচ্ছেন। কিন্তু তার বদলে বাংলাদেশ যেমন বিশাল সম্মান পাচ্ছে তার সাথে পাচ্ছে বস্তা ভর্তি বিদেশী মুদ্রা। সেনাবাহিনীর সম্মান ধ্বংস করতে পারলে জাতিসংঘ থেকে সেনাবাহিনীকে ফেরত তো পাঠাবে। এতে বৈদেশিক আয় যেমন কমবে তেমনি বাংলাদেশ বিরোধীদের লবিস্ট ফার্মগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে ট্রাম্পকার্ড।
আল-জাজিরা, বিবিসির মতো সংবাদ মাধ্যমগুলো সরব হয়ে উঠবে। খেয়াল করে দেখেন ৫ ই মে হেফাজতের হাজার হাজার হুজুর মরার বানোয়াট খবরের পিছে এদের হাত আছে।
সেনাবাহিনীতে কারা আছে? আমেরিকান? পাকিস্তানী? ইন্ডিয়ান? ভুটানি? সোমালিয়ান?কেউই না। বাংলা বলা আমার আপনারই মেধাবী, পরিশ্রমী আত্মীয় স্বজন। কিন্তু সেনাবাহিনীর প্রতি কারো কারো আচরণ দেখে মনে হচ্ছে এরা আমাদের কেউ না। ভাড়াটে।
কেউ ভাববেন না সেনাবাহিনীর পক্ষ নিচ্ছি। ভাবলে সেটা একান্তই আপনার বিষয়। সেনাবাহিনীর আচরণ নিয়ে যদি কোন সমস্যা থাকে সেটা পাল্টানোর জন্য, একাডেমিক শিক্ষা নিয়ে ঝড় তুলতে পারেন। আপত্তি থাকলে অবশ্যই তুলবেন। সেনাবাহিনী চলেই আমার আপনার টাকায়। কিন্তু একটি হত্যাকে কেন্দ্র করে পুরো সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা অন্য কিছুর প্রতিই সন্দিহান করে তোলে। ক’দিন আগে সিলেটে র্যাহবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান মারা গেলেন। তিনি সেখানে গিয়ে ছিলেন স্বপ্রণোদিত হয়েই, দায়িত্ব পালনে। জানেন তো তিনি একজন সেনা কর্মকর্তা।
চলেন আসল জায়গায় নজর দেই। রমেল চাকমা নিয়ে সত্য উঠে আসুক। অপরাধীদের বিচার হোক। আসেন সোচ্চার হই প্রতি বছর হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়া নিয়ে। আসেন যেই সব সরকারি কর্মকর্তা গাফিলতি করেছে, উন্নাসিক আচরণ করেছে বর্তমান হাওরের অবস্থা নিয়ে তাদের বিচারের দাবিতে। তার সাথে চলুক রমেল চাকমার সত্য উদঘাটন, বিচার নিয়ে আন্দোলন, সংগ্রাম। তবে অবশ্য অপরাধীর বিচার নিয়ে, সিস্টেম ঠিক করা নিয়ে।
আমাদের নিজেদের বিতর্কিত করা নিয়ে না।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য