আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

কেউ কি আছো চাঁদের আলো ফিরিয়ে দেবে?

জহিরুল হক বাপি  

তোর এত সাহস তুই আমার ফোন ধরস না. . . তিন লাখ খাওয়াতে হবে. . . বিচ্ছেদের বাজারে গিয়া তোমার প্রেম বিকি দিয়া করবো না প্রেম আর যদি কেউ কয়- টুং টাং। দুই পথিকের মোবাইল কথোপকথন আর রিকশাওয়ালার গানের ঝংকার। গানের বিচ্ছেদের ব্যবচ্ছেদ করলে তিনজনই “বিচ্ছেদ ভুবনেই” আছে। রাস্তার পাশে তিনটা কুকুরের বাচ্চা আমার পায়ে পায়ে হাঁটে। আমি চাঁদের দিকে তাকিয়ে হাঁটি।

আধুনিক শহরে আসলে বলা উচিত অসভ্যতার শহরে চাঁদের আলো পরাস্ত। মানুষ মনে হয় প্রকৃতির এই একটা ব্যাপারকে অস্বীকার করতে পেরেছে সোডিয়াম, হ্যালোজেন, এলইডি বাত্তির নিরাপত্তায়।

ভাবালু জাতি হয়েও কতকাল জোছনা দেখা হয় না। আমি যদি সভ্য হতাম, আমি যদি সুন্দর হতাম তাহলে এমন জোছনা রাতে শহরের সব বাত্তি অন্ধ হয়ে যেত। জোছনায় ভেসে ভেসে মানুষ ফিরত, মানুষ ঘুরতো, মানুষ পুড়তো, মানুষ উঠতো, মানুষ পড়তো...।

বিচ্ছেদ নিজের সাথে নিজের বিচ্ছেদ। “করবো না প্রেম আর যদি কেউ কয়.....”

চন্দ্রের সাথে কি সেলফি তোলা যায় যায়? বিচ্ছেদ আমার ব্যবসার সাথে, বিচ্ছেদ আমার পোশাকের সাথে, বিচ্ছেদ আমার সরলতার সাথে, বিচ্ছেদ আমার আলোর সাথে- করবো না প্রেম...অন্ধকার কি আমার খুব ভালো লাগে? সোডিয়াম, হ্যালোজেন কত্ত কত্ত বাতি অথচ আমায় জোছনায় টানে না কেন?

জোছনায় কোন চরাচর এখন ধু-ধু করছে। সাদা বাতির নিরাপত্তায় কল্পনা করতে করতে হাঁটি। জীবনানন্দ ফিরে ফিরে আসে... সাথে ফিরে ফিরে আসে হাছন রাজা।

আগে যদি জানতো হাছন বাঁচবো কত দিন.... বানাইতো দালান কোঠা করিযা রঙিন। আমি হাঁটি ঢাকার রাস্তায়।

ঢাকা ইদানিং আগের মতো জমজমাট থাকে না। যদিও মধ্য রাত পর্যন্ত জ্যাম। অন্ধ কটাবাত্তির সামনে কয়েক টুকরা জোছনা। জোছনায় নিজের মুখ দেখি। আমার চেহারা ভর্তি খাই খাই, খাই খাই। কেউ কি বাংলা সিনেমার ঐ গানটা জানেন? হুমায়ুন ফরিদী নেচে নেচে গেয়েছিলেন - এত ক্ষুধা পেটে সোনা কবর ঘরে খাবি কি....

কবরের খবরেও আমার বিচ্ছেদ। রাজনীতির পথের সাথে সচতুর প্রকৌশলী মিশিয়ে দিয়েছে ধর্মের দর্শন। পথে ধুলো থাকে। হরেক রকমের ধূলা। লাল নীল সাদা রঙের ধুলা। ধর্মীয় দর্শনের উপর রাজপথের, রাজনীতির পথের ধুলা জমে। ধুলো ঢাকা রাস্তায় দক্ষ চালক নিয়ে যায় ভিন্ন পথে। ধর্মের রকমারি সাইনবোর্ড-বিভ্রান্ত-ধুলোয় অন্য পথে। প্রকৌশলীদের দক্ষ নকশা। ধুলো থেকে ধুলো। মানুষ ধূলায় অন্ধ। বিবর্তনবাদ বা অভ্যস্ততার সূত্র মেনে আমি ভাবছি এ অন্ধকারটাই সত্য। আমি ধুলো চোখে পৃথিবী দেখি। ধূলায় পৃথিবী সীমিত। আমার চলে যাওয়া বহু শতাব্দী পর একজন ইতিহাসবিদ আমায় এসব তথ্য জানিয়ে ছিলেন। তিনি ইতিহাসবিদ ও বিজ্ঞানী। তিনি হাঁটতে হাঁটতে চাঁদের গায়ে ম্যাচের কাঠি ঘষে সিগারেট জ্বালালেন। তিনি তার রচিত ইতিহাসে অন্ধত্বের বর্ণনা দিয়েছেন। ঐটাকে আসলে ইতিহাস না বলে গবেষণাপত্র বলা যেতে পারে। এখানে কয়েকজন বিজ্ঞানী, কয়েকজন দার্শনিক, কয়েকজন সাহিত্যিক-কবি-প্রেমিক, একত্রে গবেষণা করেছেন। তারা কিছু ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন।

কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করি উদাহরণস্বরূপ।
* ঘটনা – ২০১৩- ২০১৭
# একজন রাজনীতিবিদ মক্কা শরীফের দোহাই দিয়ে মিথ্যা কথা বলেন ধর্মীয় লেবাসের বিপরীত সাজসজ্জা নিয়ে। ইফতারের সময়ও তার বক্তব্য বন্ধ হয় না। মানুষ ইফতার করে ছিল তার বক্তৃতা শুনে শুনে। ভিশন-২০৩০ চলে আযানের সময়। তিনি বক্তৃতা দিয়েই যান। অথচ তিনিই আমাদের ইসলামের নেত্রি। তিনি আমাদের পরকালের কাণ্ডারি। বিপরীত রাজনীতিবিদ শতভাগ ধর্মীয় আচার সহ বাঙালি পর্দায় চলাফেরা করেও তিনি নাস্তিক।

চন্দ্র কি অভিশপ্ত না আমি? কে ছিল অভিশপ্ত? ঝরে ঝরে গলে গলে পড়ে চাঁদ। আমি ভাবি চাঁদের কেজি কতো? আমি ভাবি ধনী যে জন সেই জনই মানি, সেই জনই জ্ঞানী, সেই জনই ধার্মিক। ঘুষের টাকার গরম কি সাধারণ টাকার গরমের মতো? নাকি কম বেশি হয়। ১৫ টাকা বেতনের সরকারি ইঞ্জিনিয়ার ১৫,০০০ টাকার গাড়িতে এসে সাড়ে পনের টাকায় মসজিদেরে গম্বুজ করলে তারে আমি দেখি বেহেশতের চূড়ায়। ইয়া নবী সালাইমালাইকা, ইয়া হাবীব সালাইমালাইকুম, ইয়া রসূল সালাইমালাইকুম- ক্ষুধার্ত পেটে মিলাদের মনোযোগ আমার নষ্ট হয়ে ছিল বেশ কবার ১৫ লক্ষ টাকার বাড়ির তবারকের খাবারের মৌ মৌ গন্ধে। ইঞ্জিনিয়ার সাব, সরকারি ডাক্তার সাব, বোর্ডের কেরানী সাব, দারোগা সাব, এসি ল্যান্ড সাব বড় দ্বীনদার।

এ শিক্ষা দিল কে আমারে গোপনে-
ধূলার পৃথিবী বড় ছোট। আমি অন্ধ বর্ণমালায়, ব্যাকরণে শিক্ষিত।
কেউ কি আছো আমায় চাঁদের আলো ফিরিয়ে দেবে?

জহিরুল হক বাপি, লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ