তাসকিনের বলে তামিম যখন ক্যাচ ফেললেন তখন আশঙ্কা জাগছিল এই বুঝি ম্যাচও ফেলে দেওয়া হলো কিন্তু ওদিকে কে জানত অন্য হিসাব করছিলেন রুবেল হোসেন। পরের ওভারে ব্রড আর এণ্ডারসনের উইকেট উপড়ে ফেলে দিয়ে রুবেল পৌঁছে দিলেন জয়ের বন্দরে। বাংলাদেশ জিতল ১৫ রানের ব্যবধানে।
মাহমুদুল্লাহর শতকের পর রুবেল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৫ রানে জিতে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ।
সোমবার অ্যাডিলেইড ওভালে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ২৬০ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। অর্ধশতক করা ইয়ান বেলকে ফেরানোর পর অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যানকেও ফেরান রুবেল হোসেন। এরপরই জেমস টেইলরকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। ব্যাটিং পাওয়ার প্লের প্রথম ওভারেই প্রতিরোধ গড়া জো রুটকে ফেরান মাশরাফি বিন মুর্তজা।
অষ্টম ওভারে ফিরে যান মইন আলি (১৯)। মিডঅনে বল পাঠিয়ে অসম্ভব একটি রান নিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সৌম্য সরকারের দারুণ থ্রো ধরেই স্টাম্প ভেঙে দিয়ে মইনের বিদায় নিশ্চিত করেন মুশফিকুর রহিম। ২০তম ওভারে ফিরে আলেক্স হেলসকে বিদায় করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বলে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হন হেলস। ২৭তম ওভারে আঘাত হানেন ম্যাচে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বল করা রুবেল হোসেন। প্রথম বলে অর্ধশতকে পৌঁছানো ইয়ান বেলকে (৬৩) মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করেন তিনি।
চতুর্থ বলে ওয়েন মর্গ্যানকে ফেরান রুবেল। তার বাউন্সারে হুক করে রানের খাতা খুলতে চেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। কিন্তু ফাইন লেগে সাকিব আল হাসানের ঠাণ্ডার মাথার চমৎকার ক্যাচে পরিণত হন তিনি। নতুন ব্যাটসম্যান আসার পর স্লিপে ইমরুল কায়েসকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সুফল পেতেও দেরি হয়নি। তাসকিন আহমেদের হাতে ইমরুলের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান জেমস টেইলর (১)। ব্যাটিং পাওয়ার প্লের প্রথম ওভারেই (৩৬) আঘাত হানেন মাশরাফি। জো রুটকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সোমবার অ্যাডিলেইড ওভালে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান।
শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। শুরুতেই ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দেন জেমস অ্যান্ডারসন। দলে ফেরা ইমরুল থার্ড স্লিপে ক্রিস জর্ডানের হাতে ক্যাচ দেন। একবার জীবন পাওয়া তামিম ফিরে যান প্রথম স্লিপে জো রুটের তালুবন্দি হয়ে। পাঁচ রানের মধ্যে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা জুটি উপহার দেন এই দুই জনে।
চার দিয়ে শুরু করা সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ১৮.১ ওভার স্থায়ী জুটি। জর্ডানের বাউন্সার ঠিকভাবে খেলতে না পেরে জস বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। পরের ওভারেই আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসানের বিদায়ে অস্বস্তিতে পড়ে বাংলাদেশ।
পাঁচ রানের মধ্যে সৌম্য-সাকিবের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদুল্লাহ-মুশফিক। বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করা মাহমুদল্লাহ দেখেশুনে খেললেও শুরু থেকেই রানের গতি বাড়িয়ে নেয়ার দিকে মনোযোগী ছিলেন মুশফিকুর।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটি উপহার দেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে ১৪১ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে। আগের রেকর্ডেও ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেই ১৩৯ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।
মাহমুদুল্লাহর রান আউটে ভাঙে ২৩.৫ ওভার স্থায়ী জুটি। প্রথম ওয়ানডে শতক করা মাহমুদুল্লাহ ফিরেন ১০৩ রান করে। তার আগের সেরা ছিল অপরাজিত ৮২ রান। মাহমুদুল্লাহর ১৩৮ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় গড়া।
বিশ্বকাপের চার ম্যাচে তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেয়া মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে আসে ৮৯ রানের আরেকটি চমৎকার ইনিংস। তার ৭৭ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি গড়া ৮টি চার ও ১টি ছক্কায়।
আপনার মন্তব্য