সনেট দেব চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা

১৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ২১:০৪

জ্বালানি সঙ্কটে মৌলভীবাজারের ডিপো ও পেট্রোল পাম্প

টানা অবরোধ ও নাশকতার আশঙ্কায় পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় জ্বালানি সঙ্কটে পড়েছে মৌলভীবাজারের ডিপো ও পেট্রোল পাম্পগুলো

লাগাতার অবরোধ হরতাল আর নাশকতার আশঙ্কায় পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় জ্বালানি সঙ্কটে পড়েছে মৌলভীবাজারের পেট্রোল পাম্পগুলো। আর এর প্রভাব পড়েছে পরিবহন সেক্টরে। জ্বালানি নির্ভর যানবাহনের ব্যবহারকারীরা পড়েছেন বিপাকে।

অন্যদিকে জ্বালানী খ্যাতে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীরা অনেকটাই বেকার হয়ে পড়েছেন। এদিকে জেলার ৩টি ডিপোতে প্রতিদিন তেল সরবরাহ করা হচ্ছে বিজিবির প্রহরায়। ডিপোগুলোত তেলের পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও নাশকতার আশঙ্কায় পেটোল পাম্পের মালিকরা নিয়মিত তেল সংগ্রহ করতে পারছেন না। অন্যদিকে কিছু পাম্পে তেল থাকলেও যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিক্রিও কমে গেছে। 

বিএনপি-জামায়াত তথা ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ, হরতাল ও নাশকতার কারণে মৌলভীবাজার জেলার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ৩টি ডিপোতে দেখা দিয়েছে জ্বালানি সঙ্কট। জ্বালানি তেলের মজুত না থাকায় বন্ধ হতে চলেছে অধিকাংশ পেট্রোল পাম্প।

সড়কগুলোতে ট্রাক, ট্যাংক লরী চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে। বিজিবি‘র প্রহরায় জ্বালানি তেল ডিপো থেকে সীমিত পরিমাণে ট্যাংক লরীর মাধ্যমে আনা হলেও সব পেট্রোল পাম্পগুলোতে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় অধিকাংশ পাম্পে গিয়ে পেট্রোল না পেয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যানবাহন চালকরা। অন্যদিক অবরোধের এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বেকার হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে জেলার কর্মরত শত শত পরিবহন শ্রমিকরা।

এদিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ের পাশে সখিনা সিএনজি ও ফিলিং স্টেশন নিয়মিত তেল সরবরাহ করা হয় মৌলভীবাজারের পদ্মা ও মেঘনার পেট্রোলিয়াম ডিপো থেকে। এই পাম্পের ম্যানেজার সুজিত ভট্টাচার্য জানান, টানা হরতাল অবরোধের কারণে ডিপো থেকে নিয়মিত আনতে পারছেন না। নিরাপত্তার অজুহাতে ডিপো থেকে তেল সরবরাহ করতে না পেরে প্রতিদিন ১‘লাখ টাকা থেকে বিক্রি কমে দাড়িয়ে ১০ হাজার টাকায়।

অপরদিকে পদ্মার ডিপো কর্তৃপক্ষ কোন কথা বলতে না চাইলেও পদ্মা ডিপোর ম্যানেজার পুলক ঢালী বলেছেন, সেচ মৌসুমে তাদের ডিপোতে বিশেষ করে ডিজেলের পর্যাপ্ত মজুত আছে। তবে অবরোধের কারণে দূরদূরান্ত থেকে পাম্প মালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীর আসতে পাড়ছেন না।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলার ৩টি ডিপোর আওতায় ৭টি উপজেলাসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে মোট ৩৫টি পাম্পে গড়ে প্রতিদিন ৩ লাখ লিটার ডিজেল, ২ লাখ লিটার পেট্রলএবং অকটেনের চাহিদা রয়েছে। তেব বিপিসির আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, রশিদপুর ও চট্টগ্রাম থেকে ট্রাংক লরি ও ট্রেনে করে তেলবাহী ওয়াগন পৌছতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে মৌলভীবাজার জেলার ডিপো থেকে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ পাশ্ববর্তী জেলার পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি সরবরাহ করা হয়। এসব ডিপোয় পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকার কথা তারা জানিয়েছেন।

এদিকে জেলার পেট্রোল পাম্প ও জ্বালানি তেল সরবরাহে নিয়োজিত ট্রাংক লরি সমিতির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, হরতাল অবরোধের কারণে 'ডিপোতে নিয়মিত যানবাহন সরবরাহ দিতে ভয় পাচ্ছেন তারা। ট্যাংক লরীতে আগুন দেওয়ার ভয়ে ঝুঁকি নিয়ে তেল নিয়ে আসতে পারছে না গাড়ির মালিকরা।

জেলার প্রেটোল পাম্প এর নিয়োজিত শত শত কর্মচারী ও পরিবহন চালকদের মাঝে টানা অবরোধ, হরতাল ও নাশকতার কারণে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটাই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা জানান, এভাবে চলতে থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

তবে মৌলভীবাজার জেলার আইনশৃংখলা ও জ্বালানী খ্যাতের সংকট কাটাতে প্রতিদিন বিজিবি‘র প্রহরায় জেলার ডিপো ও আশেপাশের পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়েছেন বিজিবি‘র শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মো. তারিকুল ইসলাম খান।

 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত