স্পোর্টস ডেস্ক

১৩ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ১২:৫৪

বিশ্বকাপের মহারণ: উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি নিউজিল্যাণ্ড-শ্রীলংকা

শ্রীলংকান ক্রিকেটের সেরা সাফল্য ১৯৯৬ বিশ্বকাপের শিরোপা, একই হিসাবে নিয়ে আসলে নিউজিল্যাণ্ড এখনও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। সব সময়ের জন্যে এভারেজ দল তারা। তবে সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় শ্রীলংকার চাইতে বেশ এগিয়ে আছে নিউজিল্যাণ্ড।

মাস কয়েক আগে অবশ্য বিশ্বমঞ্চের উদ্বোধনী ম্যাচের আগেই শ্রীলঙ্কাকে আতিথ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৭ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ ৪-২ ব্যবধানে জিতে ম্যাককালাম-টেলররা জানান দিয়েছে বিশ্বমঞ্চেও লঙ্কানদের কাঁদাতে চায় তারা। তবে এবার হাসতে চান লঙ্কানরা অন্তত তারা আবার ‘৯৬কে ফিরিয়ে আনতে চায়।

বৃহস্পতিবার ডামাডোল বেজে ওঠা এই বিশ্বমঞ্চের সূচনালগ্নেই দণ্ডায়মান মহারণ। যেখানে দুরন্ত ফর্মে থাকা নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি নড়বড়ে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী এ ম্যাচে ক্রাইস্টচার্চের গ্যালারিতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকার কথা নয়। ধ্রুপদী আসরে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথ আয়োজক যখন খোদ নিউজিল্যান্ড। তাই স্বপ্নের শিরোপাযাত্রায় কিউইদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা পরিচিত দর্শকদের সামনে খেলতে পারাটা।

নিউজিল্যান্ড কি পারবে নিজেদের মঞ্চে বৈশ্বিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে? কার্যত সেটা অনেক দূরের কথা। তবুও ব্ল্যাক ক্যাপসদের মনের আঙিনায় ওই স্বপ্নটাই ঘুড়পাক খাচ্ছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা? হ্যা, লঙ্কানদের চোখও শিরোপার দিকেই। ইতিহাসের ভূত তাড়ানোর মিশনের দায়িত্বটা কাঁধে নিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। টানা দুই বার তীরে এসে ডোবার সেই ভয়াল দুঃস্মৃতির সমাধী ঘটাতে এ যাত্রায় প্রস্তুত শ্রীলঙ্কা।

লঙ্কানদের ক্ষেত্রে ‘প্রস্তুত’ কথাটা অবশ্য বিতর্কে উস্কে দেয়ার মতোই। কারণটাও অনুমেয়। বিশ্বমঞ্চের সন্নিটকে যখন প্রদর্শনী ম্যাচগুলোতে নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছেন লঙ্কানরা। দু’দিন আগেই ধুঁকতে থাকা জিম্বাবুয়ের কাছে পা হড়কেছে দুই বারের বিশ্বসেরারা। ওভালে চিগুম্বুরা-মাসাকাদজাদের কাছে ৭ উইকেটের ওই হারটা লঙ্কানদের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও চির ধরেছে সেটা না বললেই নয়।

ঠিক উল্টো চিত্র নিউজিল্যান্ড শিবিরে। ফর্ম আর বৃহস্পতির তুঙ্গে থেকেই নিজেদের উঠোনে বিশ্বজয়ের মিশনে নামছে কিউইরা। গা গরমের ম্যাচ তো বটেই, ফেভারিট জায়ান্টদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে ধারাবাহিক জয়ের কারণে রীতিমত বাজির ঘোড়া হয়ে উঠেছে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের দল। শুধু দলীয় হিসেবে নয় ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের আলোতে কিইউ তারকারা হয়ে উঠেছেন আপন মহিমায় ভাস্বর।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে নিউজিল্যান্ড শিবির জেগে উঠেছে টগবগে আত্মবিশ্বাসে। যা ব্ল্যাক ক্যাপসদের ইতিহাসের সেরা ফর্ম বলে তকমা পেয়ে গেছে। সেটা ধরে রেখে ক্রিকেট মহাযজ্ঞে বাজিমাত করতে আদাজল খেয়ে নেমেছে নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক দলের এ রথযাত্রায় সেনাপতি ম্যাককালাম। সঙ্গে ব্যাটসম্যান রস টেলর, স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টরির মতো দীর্ঘ দিনের সেনানীরা তো আছেনই।

অভিজ্ঞতায় টুইটুম্বুর লঙ্কান শিবিরও। মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, তিলেকরত্নে দিলশান এ নক্ষত্রই লঙ্কানদের ‘ফাইনাল গেড়ো’ কাটিয়ে ওঠার মূল ভরসা। গত আসরে দিলশান তো প্রায় একাই অনেক দূর নিয়ে গেছেন দলকে। ভারতের কাছে ফাইনালে হারের দুঃস্বপ্নটা অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে আসরের সর্বোচ্চ রানের খেতাব পাওয়া দিলশানকে। যদিও টানা দুই বারের রানারআপদের মশালটা ম্যাথুসের হাতে।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে সেই ম্যাথুসই পড়ে গেছেন মহা ভাবনায়। এমন বাজে ফর্ম নিয়ে আর কোনো বিশ্বকাপ শুরু করেননি লঙ্কানরা। তবুও আশাবাদী সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। প্রস্তুতি ম্যাচের জরাজীর্ণতা উপড়ে ফেলে মূল মঞ্চেই বাতি জ্বালানোর স্বপ্নে বিভোর রানাতুঙ্গা-জয়সুরিয়াদের উত্তরসূরিরা।

 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত