নিউজ ডেস্ক

৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ ২০:৩৯

নির্বাচন নিয়ে ৭ দফা প্রস্তাব দিলেন খালেদা জিয়া

নির্দলীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতাসীন সরকারকে নির্বাচন দিতেই হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।


বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছেন ৩১ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আহ্বান জানান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্ত​​ব্যের পর তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন



খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) বলেছিল সাংবিধানিক বাধ্যকতায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করতে হয়েছে। তারা খুব শিগগিরই নির্বাচনের ওয়াদা করেছিলেন। নিজেদের অঙ্গীকার  তারা মানছে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। এ ধরনের একটি সরকারের দেশ পরিচালনার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।



তিনি আরও বলেন,  জাতীয় সংসদের নির্বাচন অবশ্যই একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে হবে। গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ, দক্ষ, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হবে। 


তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তার জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরুর আগেই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।


সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া সাত দফায় খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের আমলে বন্ধ করে দেওয়া সব সংবাদপত্র ও স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল খুলে দেওয়ার কথা বলেন।



খালেদা জিয়া বলেন, জাতীয় জীবনে এই বছর ছিল ছিল দুঃসহ বছর। আজ রাষ্ট্রের ক্ষমতা স্বাধীন দেশের মালিকানা জনগণের হাতে নেই। তারা নিজেরা দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করেছে।



তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কার্যত একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে। তারা জনগণের কোনো তোয়াক্কা করেনি। জনগণের ওপর স্বৈরাচার ব্যবস্থা চেপে বসেছে।



প্রস্তাবের বিস্তারিত:


১. জাতীয় সংসদের নির্বাচন অবশ্যই একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে হবে। যাতে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সকল পক্ষের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সুযোগের সমতা নিশ্চিত হয়।



২. নির্বাচন ঘোষণার আগেই প্রতিদ্বন্দ্বী সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ, দক্ষ, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। যাতে, জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা যায়। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায় থেকে পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা যায়। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তব্যে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা যায়। সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী আইন ও বিধিমালার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা যায়। এবং ভোটার তালিকার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করা সম্ভব হয়।



৩. নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হবে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর সম্মতিক্রমে গঠিত নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করবে।



৪. নির্বাচনের উপযোগী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে তারিখ ঘোষণার পরপরই বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হবে।



৫. নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরুর আগেই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতদূষ্ট ও বিতর্কিত হিসাবে চিহ্নিত সদস্যদের সকল গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে প্রত্যাহার এবং কর্তব্যপালন থেকে বিরত রাখতে হবে।



৬. সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে।



৭. বর্তমান সরকারের আমলে বন্ধ করে দেয়া সকল সংবাদপত্র ও স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল খুলে দিতে হবে। মাহমুদুর রহমানসহ আটক সকল সাংবাদিককে মুক্তি দিতে হবে।



আপনার মন্তব্য

আলোচিত