Sylhet Today 24 PRINT

দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারাকারী উগ্রবাদীদের চিহ্নিত করার আহবান

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি |  ২৩ মার্চ, ২০২১

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে কয়েকটি উগ্রবাদী সংগঠনের ব্যানারে শানে রিসালাত সম্মেলনের নামে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে অভিযোগ করে এদের ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়েছেন আলোচকরা। গত ২১ মার্চ লন্ডন থেকে যুদ্ধাপরাধ বিচারমঞ্চ আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় আলোচকবৃন্দ এই আহবান জানান।

আলোচকবৃন্দ বলেন, যারা ধর্মের দোহাই তোলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে এরা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা বিরোধী এবং পাকিস্তানীদের দোসর। এই স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রবাদী গোষ্ঠী বিভিন্ন সময় ধর্মকে ব্যবহার বাংলাদেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করতে চাইছে। এরা ১৯৭১ সালে আলবদর, রাজাকার ও আলশামস বাহিনী গঠন করে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানীদের সাথে নিয়ে গণহত্যা চালিয়ে ছিল। পরবর্তীতে এদেরই একটি অংশ আফগান বিপ্লবে অংশ নেন এবং এদের দ্বারাই গড়ে উঠে হেফাজতে ইসলাম।

তারা বলেন, এই হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালে বাংলাদেশে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলাটিম ও নব্য জেএমবি‘র সদস্যদের সকলেই আফগান ফেরত তালেবান। এদের মদদ দিচ্ছে সাম্প্রদায়িক স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী। আজকের হেফাজতে ইসলাম, শানে রিসালাত, ছাত্র অধিকার ও যুবঅধিকার এবং খেলাফত মজলিশের মত সংগঠনগুলো জামায়াতের নতুন সংস্করণ। এরা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। এরা সব সময়ই সাম্প্রদায়িক। এই গোষ্ঠী প্রশ্ন তুলছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা আসলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তারা প্রতিহত করবে। জামায়াতের ইন্ধনে উগ্রবাদীরা এমনটি করছে। শুধু তাই নয় দেশে বিদেশে এই স্বাধীনতা বিরোধীরা গড়ে তুলেছে অসংখ্য সংগঠন এর মধ্যে অন্যতম হল ব্রিটেনের বাংলাদেশী মুসলিম ইন ইউকে। যদিও এই সংগঠনটি সর্বদলীয় ওলামা পরিষদ হিসেবে পরিচিত এর মাধ্যমে চালানো হয় বর্তমান সরকার এবং ভারত বিরোধী অপপ্রচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের জয়গান।

লন্ডন সময় বিকেল চার ঘটিকায় এলএনটুয়েন্টি ফোরে রূমী হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন যুদ্ধাপরাধীর বিচার মঞ্চের চেয়ারপার্সন মাতিয়ার চৌধুরী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য আনসার আহমেদ উল্লাাহ, অতিথি হিসেবে যোগদেন বাংলাদেশ থেকে শহীদ সন্তান ডা. নুজহাত চৌধুরী, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, লন্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশনের মিনিস্টার প্রেস আশিকুননবী চৌধুরী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সুইডেন চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি তরুণ কান্তি চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অপু চৌধুরী, যুদ্ধাপরাধ বিচার মঞ্চের কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট খালেদুর রহমান শাকিল।

আলোচকবৃন্দ বলেন, পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইরের নির্দেশে একাত্তরের পরাজিত শক্তি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে।

আলোচকবৃন্দ উগ্রবাদী হেফাজতে ইসলামের সকল কার্যক্রম বন্ধের দাবী জানান। সেই সাথে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের অমীমাংসিত সমস্যা বিশেষ করে বাংলাদেশে আটকে থাকা ত্রিশ লক্ষ পাকিস্তানীকে ফিরিয়ে নেয়া, বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা ফেরত, ১৯৫ জন পাকিস্তানীকে সেনাকর্মকর্তাকে বিচারের জন্যে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর, একাত্তরের গণহত্যার জন্যে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান।

বক্তারা সুনামগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা লুটপাট ও নারীদের নির্যাতন করার জন্যে হেফাজতে ইসলামকে দায়ী করে বলেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মৌলানা শোয়াইব আহমদ শানে রিসালাতের নামে তার নিজ এলাকা দিরাইয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করেন। সম্মেলনের পর পরই জাতির পিতার জন্মদিনে পরিকল্পিতভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটানো হয়। যার প্রমাণ তার ফেইসবুক আইডি।

আলোচকবৃন্দ হেফাজতের সকল কার্যক্রম বন্ধ ও শাল্লার নেয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.