Sylhet Today 24 PRINT

‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ স্বীকৃতি পেলেন আহমেদ উস সামাদ

জুয়েল রাজ, লন্ডন  |  ০৭ অক্টোবর, ২০২১

আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি সম্মানজনক ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ এর স্বীকৃতি লাভ করেছেন। গত  মঙ্গলবার লন্ডনের গিল্ডহলে এক অনুষ্ঠানে উচ্চ আন্তর্জাতিক মর্যাদার এ সম্মাননা তার হাতে তুলে দেয়া হয়।

দ্য ফ্রিডম অব দ্য সিটি অফ লন্ডন হল এমন একটি স্বীকৃতি যা তার কর্মক্ষেত্রে সাফল্য, কমিউনিটিতে অবদান রেখেছেন এর স্বীকৃতি দেয়া। লন্ডন শহরের অনারারি ফ্রিডম হল আজীবন কৃতিত্ব বা উচ্চ আন্তর্জাতিক মর্যাদার স্বীকৃতি, এটি লন্ডনের সর্বোচ্চ সম্মাননার স্বীকৃতি।

অনুষ্ঠানে ক্লার্ক টু দি চ্যাম্বারলেইন মুরে ক্রেইগের আহ্বানে ‘ডিক্লেরেশন অব দি ফ্রিম্যান’ পড়তে দেন আহমেদ উস সামাদ চৌধুরীকে। অনুষ্ঠানে বাঙালি  কমিউনিটি ও মিডিয়ার অনেকেই    উপস্থিত ছিলেন। পরে সপরিবারে উপস্থিত আহমেদ উস সামাদ চৌধুরীর হাতে সম্মাননাটি তুলে দেন ক্লার্ক টু দি চ্যাম্বারলেইন মুরে ক্রেইগ।

সম্মাননা পাওয়ার পর আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী জেপি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছি। কোনোদিন কোনো পজিশন চাইনি। আমার এই সম্মাননা কমিউনিটির মানুষকে কল্যাণমূলক কাজে উৎসাহিত করবে- এটাই আমার অর্জন।

উল্লেখ্য, এই  সম্মান তাদেরকেই দেয়া হয়, যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রাখেন। প্রায় ৩০০ বছর আগে চালু হওয়া এ সম্মানজনক পুরস্কার ব্রিটেনের রাজ পরিবারের ১১ জন সদস্য পেয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন, প্রিন্স জর্জ-ডিউক অব ক্যামব্রিজ, প্রিন্সেস ডায়না, প্রিন্স চার্লস-প্রিন্স অব ওয়েলস, প্রিন্স এ্যাডওয়ার্ড-আর্ল অব ওয়াসেক্স প্রমুখ।

উচ্চ মর্যাদার এ পুরস্কার ব্রিটেনের বর্তমান রানী এলিজাবেথ দ্বিতীয় এবং তাঁর মা এলিজাবেথ প্রথম দুজনকেই দেওয়া হয়। তাছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্সটন চার্চিল, মার্গারেট থেচারসহ ডিউক অব ওয়েলিংটন, নেলসন ম্যাণ্ডেলো, জওহর লাল নেহেরু, আর্চ বিশপ অব ক্যান্টারবেরি, জাতিসংঘের প্রাক্তন মহসচিব কফি আনান পেয়েছেন এ পুরস্কার।

ফেঞ্চগঞ্জের নূরপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী। তার পিতা মরহুম দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী ও মাতা মরহুমা আছিয়া আক্তার খানম চৌধুরী।

আহমেদ উস সামাদ নিজ গ্রামের দুর্গাপুর প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ফেঞ্চুগঞ্জ ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি হাই স্কুলে ও পিপিএম হাইস্কুলে অধ্যয়ন করেন।

১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি চলে আসেন যুক্তরাজ্যে। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী বাথ শহরের সিটি অফ বাথ কলেজ থেকে ও-লেভেল পাশ করার পর ব্যবসা প্রশাসন বিষয়ে প্রথম ভর্তি হন সাউথ বৃস্টল কলেজে এবং পরে এ বিষয়ে উচ্চ ডিগ্রী শেষ করেন সিটি অফ বাথ কলেজে। উভয় কলেজে তিনি স্টুডেন্ট ইউনিয়নে সহ-সভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। উচ্চ শিক্ষা শেষ করেই আহমেদ চৌধুরী আত্মনিয়োগ করেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠায়।

১৯৯১ সাল থেকে ‘কমনওয়েলথ জাজেস অ্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট এসোসিয়েশন’-এর আজীবন সদস্য আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী। তিনি ‘ব্রিটেন-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

১৯৯১ সালে ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্য থেকে ‘জাস্টিস অফ পিস (জেপি)’ হিসেবে নিয়োগ পেয়ে বাথ বেঞ্চের একজন মেজিস্ট্রেট হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

১৯৭৫ সালে আহমেদ উস সামাদ ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে প্রথম এশিয়ান ছাত্র সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি নিজের নামে আর্থিক ঋণ নিয়ে ১৯৯০ চৌধুরী ব্রিস্টলের শহরে বাঙালি কমিউনিটির জন্য প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ হাউস এবং ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সেন্টার। তিনিই প্রথম বিলেতে ব্রডশিট মাল্টিকালার পত্রিকা প্রকাশ করেন।

২০০২ সালে ব্রিস্টলে নান্দনিক শাহজালাল ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড মসজিদ প্রতিষ্ঠায় ছিল অবদান। তিনি ১৯৯৫ সালে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নিউ ডিল প্রোগ্রামের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.