Sylhet Today 24 PRINT

কানাডায় ​​বাংলাদেশ​ ​​হাই কমিশনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন

সদেরা সুজন (সিবিএনএ) কানাডা থেকে |  ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস ২০১৫ উদযাপন করেছে কানাডার অটোয়াস্থ ​​বাংলাদেশ হাই কমিশন। এ উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ হাউসে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার কামরুল আহসান।

এরপর ১৯শে ডিসেম্বর, রবিবার সন্ধ্যায় কার্লটন ইউনিভার্সিটির কৈলাশ মিতাল থিয়েটারে বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ হাই কমিশন।

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সকলকে স্বাগত জানিয়ে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাই কমিশনার কামরুল আহাসান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা ছিল পৃথিবীর বুকে এক অনবদ্য ঘটনা। সারা বিশ্ব অবাক হয়ে দেখেছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়। ঠিক তেমনি আজ ২০১৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি গত সাত বছরে ৬.৩ এর উপরে - যা সারা পৃথিবীর কাছে এক বিস্ময়। বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দাবস্থায় বাংলাদেশ তার উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে পেরেছ, যা বর্তমান সরকারের একটি বড় সাফল্য। নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ পদ্মা সেতুর মতো বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করছে।

কামরুল আহাসান বলেন, এ বিশাল প্রকৌশল স্থাপনা নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে তা আমাদের দেশের যোগাযোগ ও উন্নয়ন ব্যবস্থায় যোগ করবে নতুন মাত্রা। কানাডাসহ উন্নত বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হাই কমিশনার বলেন, তাঁদের আত্মত্যাগে অর্জিত বিজয় তখনই অর্থবহ হয়ে উঠবে যখন আমরা প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় একটি শক্তিশালী অর্থনীতির উপর দাঁড়াতে পারবো। তাই দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রবাসী বাংলাদেশীদেরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত হবার আহ্বান জানান হাই কমিশনার কামরুল আহসান। তিনি বলেন আমদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তুলে ধরা আমাদের সকলের কর্তব্য।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই অনুষ্ঠানের শুরুতেই '৫২-র মহান​ ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর মহান​ মুক্তিযুদ্ধের​ সকল শহীদ এবং ১৯৭৫ এর কালরাতে শহীদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবারবর্গ এবং সকল শহীদের স্মৃতির​ ​​প্রতি ​গভীর ​শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ঢাকা থেকে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর নাইম আহমেদ, প্রথম সচিব মাকসুদ খান, প্রথম সচিব মোঃ আলাউদ্দিন ভুঁইয়া এবং প্রথম সচিব অপর্ণা রাণী পাল।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ১৯৭১ -এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ, এবং চূড়ান্ত বিজয়ের চিত্র গান নাচ ও কবিতার মাধ্যমে পরিবেশন করেন অটোয়ার প্রথিতযশা শিল্পীবৃন্দ। একে একে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় "একটি বাংলাদেশ, তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিস্ময়, তুমি আমার অহংকার", "বাংলাদেশের স্বাধীনতা, লক্ষ প্রাণের দাম", "কত জীবনের স্বপ্ন ছড়িয়ে, কত মরণের আলতা জড়িয়ে, পেয়েছি তোমায় বাংলা মাগো", "রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম", "জয় বাংলা বাংলার জয়" - গানগুলো।

একক পরিবেশনায় ছিলো "ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো, আগুন জ্বালো", "ও আমার বাংলা মা তোর আকুল করা রূপের সুধায়", "হায়রে আমার মন মাতানো দেশ", "দিগন্ত জোড়া মাঠ", "যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা", "শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা আয়রে আয়", "একবার যেতে দেনা আমায় ছোট্ট সোনার গাঁ" এবং "এই বাংলার মাটিতে মাগো জন্ম আমায় দিও" - গানগুলো।

সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী অং সুয়ে থোয়াই, নার্গিস আক্তার রুবি, মইনুল আহসান, সিতারা আহসান কঙ্কন, ডালিয়া ইয়াসমীন, ফারজানা মাওলা অজন্তা, শারমিন সিদ্দিক শামা, শিশির শাহনেয়াজ, দেওয়ান মাহমুদ এবং আরেফিন​ কবীর। কবিতা আবৃত্তি করেন সুলতানা শিরীন সাজী, মাসুদুর রহমান, মাকসুদ খান এবং শিশির শাহনেওয়াজ। যন্ত্রসঙ্গীতে ছিলেন সাদী রোজারিও (তবলা)​ এবং আরেফিন কবীর (কীবোর্ড ও গীটার)।

নৃত্য পরিবেশন করেন আফরোজা খান লিপি, কারিনা দত্ত এবং শিশু শিল্পী লারিসা ও আঁচল। 'একাত্তরের দিনালেখ্য" উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার রেজাউর রহমান। অনুষ্ঠান গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সচিব দেওয়ান মাহমুদ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.