Sylhet Today 24 PRINT

দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্টের চোখে আলোচিত সাত এমপি: তালিকায় টিউলিপ সিদ্দিক

নিউজ ডেস্ক  |  ১১ মে, ২০১৫

ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচন শেষ। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি আবারও ক্ষমতায় এসেছে। অনেকে এমপি প্রথম বারের মতো সংসদে যাচ্ছেন, অনেকে আবার পূর্বের ধারাবাহিকতায় সংসদে থাকছেন। তাদের মধ্য থেকে দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা ইন্ডিপেন্ডেন্টে রোববার সাতজন এমপি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টিউলিপ সিদ্দিকও রয়েছেন।

স্টিফেন কিনোক: স্ত্রী ডেনমার্ক-এর প্রধানন্ত্রী
ওয়েলস-এর এ্যাবেরাভন নির্বাচনী আসনের লেবার দলের নতুন সংসদ সদস্য স্টিফেন কিনোক হচ্ছেন ডেনমার্ক-এর প্রধানমন্ত্রী হেলে থর্নিং-শ্মিড্‌ট এর স্বামী। কিনোক পরিকল্পনা করছেন তিনি প্রতি সপ্তাহে সোমবার থেকে শুক্রবার লন্ডনে সংসদে তার কাজ করবেন, আর সপ্তাহান্তে নির্বাচনী এলাকায় যাবেন। তাহলে তার সংসার জীবনের কী হবে? তিনি বিবিসিকে বলেন, তারা স্বামী-স্ত্রী এভাবেই জীবন কাটিয়ে অভ্যস্ত। পারিবারিক আর রাজনৈতিক জীবন এক সাথে চালানোটা কিনোকের জন্য নতুন কিছু নয়। তার বাবা নিল কিনোক ছিলেন লেবার পার্টির নেতা আর তার মা গ্লেনিস কিনোক ইউরোপীয় পার্লামেন্ট-এর সদস্য ছিলেন।

টিউলিপ সিদ্দিক
শুধু স্টিফেন কিনোক-ই কোন বিখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য নন। লেবার পার্টির টিউলিপ সিদ্দিক হ্যামপস্টেড এবং কিলবার্ন নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। লন্ডনে জন্ম গ্রহণ করা টিউলিপ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে এবং দেশটির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি। বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের এক অভ্যুত্থানে হত্যা করা হয়। তার মা এবং খালা ওই সময় জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। সিদ্দিক ১৬ বছর বয়সে লেবার রাজনীতির সাথে জড়িত হন, এবং চারজন সংসদ সদস্যের সাথে গবেষক, উপদেষ্টা ইত্যাদি ভূমিকায় কাজ করেন। টিউলিপ ২০১০ সাল থেকে চার বছর ক্যামডেন কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর। তাকে লেবার দলের রাইজিং স্টার হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।

মাড়ি ব্ল্যাক: কুড়ি বছর বয়সে সংসদ সদস্য
স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি-র মাড়ি ব্ল্যাক ৩৫০ বছরের মধ্যে ব্রিটেনের সব চেয়ে কনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হলেন। এই ২০-বছর বয়স্ক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী এখন গ্লাসগো শহরের দক্ষিণে পেইসলি এবং রেনফ্রিশায়ার নির্বাচনী আসনের প্রতিনিধি। সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার জন্য নূন্যতম বয়স ২০০৬ সালে ২১ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ করা হয়। এর আগে সব চেয়ে কনিষ্ঠ সংসদ সদস্য ছিলেন আলবেমার্ল-এর ডিউক ক্রিস্টোফার মঙ্ক, যিনি ১৬৬৭ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে হাউস অফ কমন্স-এ আসন গ্রহণ করেন। মাড়ি ব্ল্যাক বব ডেলান এবং দ্য স্পাইস গার্লস-এর গান পছন্দ করেন। তিনি লেবার পার্টির সব চেয়ে নামী নেতাদের অন্যতম, পররাষ্ট্র বিষয়ে দলের মুখপাত্র ডগলাস আলেকজান্ডারকে পরাজিত করেন।

তানিয়া ম্যাথিস
ভিনস ক্যাবল’স টুইকেনহাম আসন থেকে জয় পেয়েছেন ড. তানিয়া ম্যাথিয়াস। তিনি এর আগে তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এইচআইভি, এইডস এবং টিবি রোগীদের চিকিসার জন্য তিনি আফ্রিকায় গেছেন। তিনি ভারত এবং দক্ষিণ চীনও গেছেন। সেখানে গেছেন কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসার জন্য। তিনি একজন সংগঠক হিসেবে পরিচিত।তিনি শিক্ষাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত।

জেমস বেরি
জেমস বেরি রাজনীতিতে প্রবেশের আগে ব্যারিস্টারি পাস করেন। তিনি কিংসটন অ্যান্ড সারবিটন আসনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এড ডেভিকে তিন হাজার ভোটের হারিয়েছেন। তাকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছিলেন কনজারভেটিভ দলের ছয়জন শীর্ষ ব্যক্তিত্ব। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যারিস্টারি পাস করা জেমস বেরি স্বাস্থ্য এবং পুলিশ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করেছেন। তিনি হাই প্রোফাইল মামলার কার্যক্রমও পরিচালনা করেছেন যার মধ্যে লেভসন তদন্তের মামলাও রয়েছে। এই মামলাটি খুবই আলোচিত।

নাজ শাহ
নাজ শাহের পেছনের গল্পটা খুব করুণ। তার ছোট দুই বোনের দেখাশোনা করেছেন তিনি। আর এটা করতে বাধ্য হয়েছেন। কারণে এক মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে তার মাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। ওই মাদক ব্যবসায়ী তার মায়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এরপর বিয়ের বয়স হওয়ার আগেই পাকিস্তানে এক ছেলেকে বিয়ে করতে বাধ্য হন নাজ। তার এই স্বামী দীর্ঘদিন ধরেই তার ওপর যৌন হয়রানি চালিয়ে আসছিল এবং তার ওপর হামলাও চালিয়েছিল। এরপর তিনি তার মা জুরার মুক্তি আন্দোলনে যুক্ত হন নাজ। এর মাধ্যমেই রাজনীতিতে সংযুক্ত হন নাজ। তিনি ব্রাডফোর্ট ওয়েস্ট আসনে রেসপেক্ট পার্টি এমপি জর্জ গ্যালওয়েকে ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন।

টম পাসগ্লোভ
বয়স ২৬ বছর। তিনি করবি অ্যান্ড ইস্ট নর্দ্যাম্পটোশায়ার থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৭ সালে ওয়েলিংব্রাফের ক্রোয়েল্যান্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন টম পাসগ্লোভ। ১৮ বছরে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে তিনি দেশের সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলর হিসেবে খ্যাতিলাভ করেন। তিনি স্থানীয় কনজারভেটিভ এসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি একজন সমাজকর্মী হিসেবেও পরিচিত।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.