Sylhet Today 24 PRINT

যুক্তরাজ্যে তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে বাংলাদেশি ইমামের কারাদণ্ড

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৮ এপ্রিল, ২০১৮

১৯ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে যুক্তরাজ্যের আদালতে দণ্ডিত হয়েছেন বাংলাদেশি এক ইমাম। তার নাম কমর উদ্দিন। বয়স ৬৮ বছর। শুক্রবার লেস্টার ক্রাউন কোর্ট কমর উদ্দিনকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম লেস্টার মার্কারির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশি এই ‘ভুয়া’ আধ্যাত্মিক চিকিৎসক ১১ সন্তানের জনক। তার পরিবার বাংলাদেশে।

ধর্ষণের ঘটনাটি ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির। জামিনে থাকা অবস্থায় কমর উদ্দিন যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে জার্মানি চলে যান। সেখানে অ্যাসাইলাম আবেদন করলে খবর পেয়ে যায় ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। তাকে গত সেপ্টেম্বরে জার্মান থেকে ফেরত আনা হয়। এরপর তাঁর সাজা নিশ্চিত করা হলো।

কমর উদ্দিন ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু ভুক্তভোগী তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কমর উদ্দিনের ডিএনএ পাওয়া যায়।

বিচারক টিমোথি স্পেনসার কমর উদ্দিনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি একজন প্রতারক, জিন তাড়ানোর ক্ষমতা আছে বলে মিথ্যাচার করেছেন। আপনি আপনার ধর্মের জন্য কলঙ্ক।’ তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা-মা তাদের মেয়েকে হতাশা থেকে রক্ষার জন্য আপনার সাহায্য চেয়েছিল। আপনি তাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ওই তরুণীকে আরও হতাশাগ্রস্ত করেছেন।’

কমর উদ্দিন আদালতে স্বীকার করেন তিনি অবৈধ অভিবাসী। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের মসজিদে তিনি ইমাম হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৬ সাল থেকে ইউরোপের কয়েকটি দেশ ঘুরে বৈধতা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে বসবাস করছিলেন তিনি।

সরকারি কৌঁসুলি রিচার্ড থ্যাচার বলেন, সাজা ভোগের পর তাকে বাংলাদেশে বিতাড়ন করা হতে পারে। আর যুক্তরাজ্যে থাকলে তাকে বাকি জীবন ‘যৌন অপরাধী নিবন্ধন’ (সেক্স অফেন্ডার রেজিস্ট্রার) অফিসে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে। এমনটাই আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা আদালতে জানান, কমর উদ্দিন একজন ইমাম হিসেবে সবার কাছে শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। আধ্যাত্মিক চিকিৎসার (ঝাড়-ফুঁক) জন্য তার বেশ পরিচিতি ছিলেন। ফলে তিনি তার হতাশাগ্রস্ত মেয়ের কথা কমর উদ্দিনকে জানান। ওই মেয়েকে জিনে ধরেছে এবং ওই জিন তাড়াতে হবে বলে পরামর্শ দেন কমর উদ্দিন।

ঘটনার দিন বাড়ির দোতলায় মেয়েটির শোয়ার ঘরে মোম জ্বালিয়ে, আরও আনুষঙ্গিক আয়োজন করে জিন তাড়ানোর প্রস্তুতি নেন কমর উদ্দিন। তিনি ওই তরুণী ছাড়া পরিবারের সবাইকে নিচ তলায় পাঠিয়ে দেন। কথিত চিকিৎসা শেষে তাড়াহুড়ো করে চলে যান কমর উদ্দিন।

ঘটনার পর মেয়েটি কাঁদতে থাকে। একপর্যায়ে তার মাকে ধর্ষণের ঘটনা জানায়। ওই দিন মেয়েটিকে দুই দফা ধর্ষণ করে ‘ভুয়া’ ইমাম কমর উদ্দিন।

লেস্টার পুলিশের গোয়েন্দা কনস্টেবল জুলি গ্যাম্বল আদালতে বলেন, তাদের বিশ্বাস আধ্যাত্মিক চিকিৎসার নামে কমর উদ্দিন আরও অনেকের সঙ্গে যৌন অপকর্ম করেছেন। তিনি জানান, যুক্তরাজ্যে কমর উদ্দিনের স্থায়ী কোনো ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার সময় তিনি লেস্টার শহরের হাইফিল্ডের লিঙ্কন স্ট্রিটে বসবাস করতেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.