Sylhet Today 24 PRINT

বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্র বানানো যাবে না: গাফফার চৌধুরী

জুয়েল রাজ, লন্ডন থেকে  |  ১৮ অক্টোবর, ২০১৮

মৌলবাদী ধর্মান্ধ তালেবানী গোষ্ঠী যতই ভয় দেখাক, বাংলাদেশ কখনও তালেবানী রাষ্ট্র হবেনা। বাংলা ভাষা, রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু এই তিনটি মৌলিক জিনিস আমাদের আছে, এই দেয়াল ভেঙে বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্র বানানো যাবে না। বঙ্গবন্ধু বিশ্বময় উজ্জ্বল নাম। বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের আলোকবর্তিকা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সংগ্রাম ছিল বাংলার মানুষকে শোষণ বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা করা। ছাত্রজীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি সংগ্রাম করে গেছেন।

১৭ অক্টোবর, বুধবার লন্ডনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের গোপন নথি নিয়ে ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক ১৪ খণ্ডের বইয়ের প্রথম খণ্ডের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আব্দুল গাফফার চৌধুরী এই মন্তব্য করেন।   

লন্ডনের স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করতে গিয়ে সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাধারণ বই। কোন রাজনৈতিক নেতার জীবন সম্পর্কে গোয়েন্দাদের দ্বারা সংগৃহীত তথ্য বিবরণ সম্বলিত এই ধরনের কোন বই এর পূর্বে আর কোন দেশে বের হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু কত বড় মাপের নেতা ছিলেন এই সিরিজের বইগুলি প্রমাণ করে। বাংলাদেশের রাজনীতি, সামাজিক জীবনের একটি নির্ভুল বিবরণও এই সিরিজের বইগুলো। প্রথম খন্ড বেরিয়েছে অন্যান্য খন্ডও বেরোবে বলে আশা করছি।

বঙ্গবন্ধু কন্যার শেখ হাসিনার যে তিনটি কাজ ইতিহাসের অংশ হওয়ার দাবি রাখে, এগুলো হলো বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দণ্ড কার্যকর এবং বুদ্ধিবৃত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বিনির্মাণ।

৭৫ এর খুনিরা শুধু শারীরিকভাবে নয়, জাগতিক ভাবেও বঙ্গবন্ধুকে খুন করতে চেয়েছে, তাঁর নাম পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছিল। সেই  বঙ্গবন্ধুকে জাগতিক ভাবে  শেখ হাসিনা দালিলিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচার পর, ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বই প্রকাশ বঙ্গবন্ধুকে বিনির্মাণেরই অংশ।

তিনি বলেন, শত্রুপক্ষই সাক্ষ্য দিলো বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতির জনক, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, তৎকালীন পাকিস্তান গোয়েন্দা বিভাগের এই রিপোর্টই হলো সেই সাক্ষীনামা। বাংলাদেশের নামের সাথে বঙ্গবন্ধুই বেঁচে থাকবেন। ইতিহাস বিকৃতিকারীরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। লন্ডনের ব্রিকলেনে আমরা একসময় শ্লোগান দিতাম, খুনি তুমি যেখানেই থাকো শাস্তি তোমায় পেতেই হবে। সেই শাস্তি জিয়াউর রহমান পেয়েছিল। তার লাশ ও চিহ্নিত করা যায়নি। প্রকৃতির বিচার ছিল সেটা।

গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ একটি অসাধারণ বই। কোন রাজনৈতিক নেতার জীবন সম্পর্কে গোয়েন্দাদের দ্বারা সংগৃহীত তথ্য বিবরণ সম্বলিত এই ধরনের কোন বই এর পূর্বে আর কোন দেশে বের হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বঙ্গবন্ধু কত বড় মাপের নেতা ছিলেন এই সিরিজের বইগুলি প্রমাণ করে। বাংলাদেশের রাজনীতি, সামাজিক জীবনের একটি নির্ভুল বিবরণও এই সিরিজের বইগুলো। প্রথম খণ্ড বেরিয়েছে অন্যান্য খন্ডও বেরোবে বলে আশা করছি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।

সভায় সভাপতির বক্তৃতা করতে গিয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  তৎকালীন পূর্ব বাংলা এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে বৈষম্য ছিল সে বৈষম্যের কথা বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বার বার জেল খেটেছেন, বারবার তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের জন্ম, মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাদণ্ড, বঙ্গবন্ধুর লেখা চিঠি, তার কাছে লেখা বিভিন্ন নেতা-কর্মী ও আত্মীয়-স্বজনের চিঠি, বিভিন্ন মিটিং ও জনসভায় দেওয়া ভাষণ, কারাগারে তার সঙ্গে আত্মীয়-স্বজন ও নেতা-কর্মীদের সাক্ষাৎকার সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রভৃতি তথ্য পাঠকরা পাবেন এ বইটিতে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে যেভাবে  বাংলার অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হলেন- সেই পথচিত্র যেমন এই বইয়ে এসেছে, সেই সঙ্গে এসেছে বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে চলার মানচিত্র। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন ছিলো স্বাধীনতা। আর স্বাধীনতার ইতিহাস ও নানা তথ্যের জন্য এ বই গুলো প্রামাণ্য দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হবে।  

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি, অধ্যাপক আবুল হাসেম, সৈয়দ মুজাম্মিল আলি,  যুগ্ম সম্পাদক মারুফ আহমদ চৌধুরী , সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ মিয়া, আব্দুল আহাদ চৌধুরী প্রমুখ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.