Sylhet Today 24 PRINT

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবিতে কানাডায় আলোকচিত্র প্রদর্শনী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের দাবিতে কানাডায় ফটো সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবুর গ্রুপ আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রদর্শিত ছবিতে রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন বাবু।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) কানাডার টরেন্টো ডেনটোনিয়া পার্কে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন ভাষাসৈনিক শামসুল হুদা। প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন কানাডা ইমিগ্রেশন, রিফিউজি ও নাগরিকত্ব মন্ত্রী আহমদ ডি হোসেইন, এমপি সালমা জাহিদ, এমপিপি রিমা বার্ন্স-মেকগ্রো, এমপিপি ডলি বেগম ও এমপিপি মাইক্যাল কটিঊ।

এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আহমদ ডি হোসেইন বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা রিফিউজিদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে কানাডিয়ান সরকার বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।

এমপি সালমা জাহিদ বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি কানাডা সরকার ও প্রধানমন্ত্রী জাষ্টিন ট্রুডোর বিশেষ নজরে আছে।

এমপিপি মাইক্যাল কটিঊ বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে এক মহত দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন বিশ্বাসী এই দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হবে। কানাডিয়ান সরকার ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাই রোহিঙ্গা রিফোজিদের মায়ানমারে পূর্ণ নাগরিকত্ব দিয়ে পুনর্বাসন করাতে এগিয়ে আসুন।

ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আব্দুল গফফারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাশ্রম প্রদান করেন সোহেল শাহরিয়ার রানা, শারিফুল হক ও মম কাজী।

ভাষা সৈনিক শামসুল হুদা বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি ক্ষুদ্র দেশের পক্ষে এতোগুলো রোহিঙ্গার দায়ভার একা বহন করা সম্ভব না। রোহিঙ্গা সংকট ক্রমেই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে। এই সমস্যাটি সমাধানে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা উচিত, অন্যথায় সামনে বিশ্ববাসীকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।

অন্যান্য বক্তারাও এই সমস্যা সমাধানে কানাডা, আমেরিকা, চীন, রাশিয়াসহ মোড়ল দেশগুলোকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা ফোজিত শেখ বাবু বলেন, শুরুতেই ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। যিনি মমতাময়ী মায়ের মতো নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি শুধু রোহিঙ্গাদেরই আশ্রয় দেননি, তিনি আশ্রয় দিয়েছেন পুরো বিশ্ববিবেক ও মানবতাকে। বর্তমানে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক শান্তির দেশ এটাই তার প্রমাণ।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের ছবির মাধ্যমেই সব প্রমাণিত, তারপরও দু-চার কথা বলতে হয়- আজকে রোহিঙ্গারা যেমন দুঃখ-দুর্দশা কষ্ট ভোগ করছে আশির দশকে আমিও বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের একটি বস্তি এলাকায় দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করে বড় হয়েছি। সুতরাং আমি তাদের কষ্ট বুঝি। আর আমাদের এই দুঃখ-দুর্দশার মর্ম বুঝে ২০০৮ সালে স্থানীয় এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর বীরপ্রতীকের সহযোগিতায় আমরা আমাদের মানবাধিকার ফিরে পাই এবং বর্তমানে আমরা খুব সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করছি। ঠিক একই অবস্থা রোহিঙ্গাদের। তাই এই রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে প্রয়োজন বিশ্ববাসীর সজাগ দৃষ্টি। তবেই তারা ফিরে পাবে তাদের মাতৃভূমি ও মানবাধিকার। বাংলাদেশেও ফিরে আসবে সুন্দর পরিবেশ ও স্বস্তি।

তিনি আরও বলেন, ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ যে আশ্রয় দিয়েছে এর অর্থ এই নয় যে তাদেরকে সারা জীবন রাখতে হবে। একটি বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীর মাঝে ক্ষুদ্র কোন জাতিসত্তা বসবাস করলে সেই জাতির প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। সেখান থেকে জন্ম নেয় বিভিন্ন উশৃঙ্খল গ্রুপ। তাই এই রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশের হুমকি নয়। হুমকি সারা বিশ্বের জন্য। আর এই ব্যাপারে সকলের সজাগ দৃষ্টি ও সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশের পক্ষে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

বাংলাদেশের ফটো সাংবাদিক ও রিপোর্টারদেরকে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গা রিফিউজি বিষয়ে সচেতনতা মূলক আলোকচিত্র প্রদর্শনী করতে চাই যদি আপনাদের সহযোগিতা পাই।

প্রদর্শনীতে ফোজিত শেখ বাবুরসহ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জয়, দৈনিক দেশরূপান্তর ফটো সাংবাদিক হারুনুর রশিদ, ডেইলি নিউ এজ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মো. সৌরভ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের ফটো সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মোমিন, দৈনিক বণিকবার্তা পত্রিকার ফটো সাংবাদিক ফজলে এলাহী ওমর, ইত্তেফাক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক রেহানা আক্তার, আবুল হোসেন ফটোগ্রাফার ও মো. গোলাম কিবরিয়া সাইমন-এর আলোকচিত্র স্থান পায়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.