Sylhet Today 24 PRINT

সিডনিতে ‘গায়ত্রী সন্ধ্যায় যাপিত জীবনের গল্প’ শোনালেন সেলিনা হোসেন

ড. শাখাওয়াৎ নয়ন, সিডনি থেকে |  ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ‘গায়ত্রী সন্ধ্যায় যাপিত জীবনের গল্প’ শোনালেন প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়া ইনক-এর আয়োজনে সিডনির হার্টসভিল সিভিক সেন্টারে ডক্টর শাখাওয়াৎ নয়ন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অফুরান মুগ্ধতা, পিনপতন নিরবতায় টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী পাঠকরা এ সাহিত্য আলোচনাটি উপভোগ করেন।

অনুষ্ঠানে সেলিনা হোসেনকে ‘একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়া সম্মাননা- ২০১৯’ প্রদান করা হয়। সেলিনা হোসেন এবং তাঁর জীবনসঙ্গী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন প্রতিষ্ঠিত ‘ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশন’কে ১৬৮০ ডলার অনুদান প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, ফারিয়া হোসেন লারা বাংলাদেশের প্রথম প্রশিক্ষক নারী বৈমানিক ছিলেন। যিনি ১৯৯৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এক বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলা কথাসাহিত্যে শুধু নারী লেখক নয়, বরং যে কোনো বিচারেই সেলিনা হোসেনের নাম সমসাময়িককালে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কারে তিনি ভূষিত এবং সম্মানিত হয়েছেন। ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট (অনারারি) ডিগ্রিতে ভূষিত করেছে। পৈতৃক সূত্রে তার বাড়ি বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায় হলেও, বাবার কর্মসূত্রে রাজশাহীতে তার জন্ম ১৪ জুন, ১৯৪৭।

একদিকে বঞ্চিত, অবহেলিত এবং দরিদ্র মানুষের জীবন-জীবিকা, মানবসত্তা নিয়ে যেমন তিনি লিখেছেন, অন্যদিকে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক জীবনের এমন কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা নেই, যে বিষয়কে উপজীব্য করে তিনি গল্প, উপন্যাস লেখেন নাই। ছিটমহল থেকে জলমহাল, চা বাগানের শ্রমিক থেকে নাগরিক জীবন, নারী নির্যাতন এবং উন্নয়ন, কোনো অনুষঙ্গকেই তিনি বাদ দেন নি। এত বিচিত্র বিষয়ে বাংলা ভাষার আর কোনো কথাসাহিত্যিক লেখেন নি। ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, ইতালিনো, জাপানি, আরবি, উর্দু, অহমিয়া, তেলেগু, তামিল, মারাঠি, মালায়লাম, কন্নড় ভাষায় তার রচনা অনূদিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, ভারত এবং বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তার উপন্যাস পাঠ্যপুস্তক হিসেবে পড়ানো হয়।

দীর্ঘ পঞ্চান্ন বছরের সাহিত্যচর্চার জীবনে তিনি বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্যও লিখেছেন ছত্রিশটি বই। ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় তিনিই এখন পর্যন্ত সর্বাধিক সংখ্যক উপন্যাস রচনা করেছেন।

একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ডক্টর স্বপন পাল অনুষ্ঠানের প্রধান সহযোগী ‘প্রভাত ফেরী’ এবং অন্যান্য সহযোগী ‘মুক্তমঞ্চ’, ‘রয়াল সিটি সলিসিটরস’, ‘ফার্স্ট একাউন্ট্যান্ট, টপআপ প্লাজা এবং বাংলা সাহিত্য সংসদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.