Sylhet Today 24 PRINT

গণতন্ত্র ছাড়া কোন বিকল্প নাই: লন্ডনে সৈয়দ আশরাফ

লন্ডনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিল টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিল

জুয়েল রাজ , লন্ডন  |  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ব্রিটেনের লেবার পার্টি ও টাওয়ার হ্যামলেরটের বন্ধু হিসাবে, যুক্তরাজ্যে সফররত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দিয়েছে টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিল। সংবর্ধনা  পূর্ববর্তী  সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে  সৈয়দ আশরাফ বলেন ‘’ ব্রিটেনের গণতন্ত্রের সাথে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের তুলনা করলে এটি সঠিক প্রশ্ন হয়না। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন এই দেশে ছিলাম, এই দেশের মূলধারার রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলাম। ইয়ুথ অর্গানাইজেশন ও সমাজ কর্মের সাথে জড়িত ছিলাম। এই ইষ্ট লন্ডনে দীর্ঘদিন আমরা পদচারনা ছিল। এক সময় আমরা যারা বাঙালী ছিলাম ব্রিকলেনে  রাতের বেলাতো  দূরের কথা দিনের বেলাও একা হাঁটা নিরাপদ ছিল না। যেকোন সময় আক্রমের শিকার হতে হয়েছিল আমাদের।

এক সময় যুব সমাজ এর প্রতিবাদ করে এবং বর্ণবাদীদের  ব্রিকলেন  থেকে উচ্ছেদ করে। সব কিছুই প্র্যাকটিসের  ব্যাপার সময়ের ব্যাপার, তিনি বলেন, ব্রিটেনের গণতন্ত্র কিন্তু সহজে আসেনাই। গত সাড়ে ৪শ বছরে ৭জন স্পীকারকে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র কিন্তু রেভ্যুলেশনের  ব্যাপার নয় এটি ধাপে ধাপে আগাতে হয়। আমাদের দেশে মাত্র কয়েকদিন আগে গণতন্ত্র চর্চা শুরু হয়েছে। তারপরও অনেক দেশের তুলনায় অনেক অনেক ভাল। আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্র ছাড়া কোন বিকল্প নাই। গণতন্ত্রের যে চুড়ান্ত লক্ষ্য সেখানে পৌছাতে হবে।

তিনি বলেন ৭০ দশকে আমরা যে ইয়ুথ মুভমেন্ট করেছিলাম । তৎকালিন ইয়াং জেনারেশনকে সাথে নিয়ে। তাদের বলেছিলাম আপনারা চাকুরীতে যান, ব্যবসায় যান। কিন্তু সাথে সাথে রাজনীতিও করতে হবে। তার ফল হচ্ছে আজকের মেয়র, স্পীকার, তিনজন এমপি, শতাধিক কাউন্সিলার। তিনি বলেন, যেখানেই যাননা কেন রাজনীতির কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এক সময় না এক সময় আসবে এই বিলাতেও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত  মন্ত্রী থাকবে।

টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের স্পিকার আব্দুল মুকিত চুন্নুর সভাপতিত্বে ও কাউন্সিলার খালিস উল্লাহর পরিচালনায় সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনার এম এ হান্নান, পপলার এন্ড লাইম হাউজের এমপি জিম ফিজপেট্রিক, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, ডেপুটি মেয়র সিরাজুল ইসলাম, কাউন্সিলার আয়াস মিয়া, ফারুক,কাউন্সিলার সাবিনা আকতার।কাউন্সিলের বিরোধী পার্টি চিফ  কাউন্সিলার পিটার গোল্ড,  যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরিফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান। স্পিকার চুন্নু তাঁর বক্তব্যে বলেন ‘’ সততা ও প্রগতিশীল রাজনীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৈয়দ আশরাফ। ৮০ র দশকে বর্ণবাদী আন্দোলন ও মূলধারার রাজনীতি যাদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাদের পিছনে রয়েছেন তিনি।

মেয়র জন বিগস বলেন  ১৯৮৮ আমার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সৈয়দ আশরাফ । তাঁর স্ত্রী শীলা  ছিলেন আমার মেয়ের শিক্ষক। আমার পুরাতন সেই বন্ধুকে এখানে সংবর্ধনা দিতে পেরে  সত্যি আজ আমি আনন্দিত । জিম পিজ ফেট্রিক এম পি বাংলায় তার বক্তব্য শুরু করেন, আদর্শগত দিক থেকে লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মিলের কথা তুলে ধরেন। সৈয়দ আশরাফের যুক্ত্যরাজ্যের  রাজনীতিতে তাঁর অবদানের কথা স্বীকার করেন।   জয়বাংলা বলে   তাঁর বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের সনাতনী রাজনীতির বাইরে এসে ব্যাক্তি আশরাফ  ক্লিন ইমেজ ও সততা দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা তৈরি করেছেন যা তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতির জন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।ইয়ুথ ফোরাম করে তরুণদের মূল ধারায় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন  সৈয়দ আশরাফ,  তা আজ  বাস্তবে রূপ  পেয়েছে।

সংবর্ধনা সভায় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন সৈয়দ আশরাফ। বক্তব্যে তিনি বলেন  ১৯৭৫ সালে আমি যখন আসি কিছুই ছিলনা আমার,  পিটার সো সহ তিন জন আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আজ আমি তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মাত্র সাড়ে তিন বছর আগে টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলে আমার সংবর্ধনার জায়গা হয়নি, এমনকি অফিসের সামনে খোলা জায়গা ও আমি ব্যবহার করতে পারি নাই। কিন্তু আজ আমাকে হলরুমে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে। সত্য ও সততার এইভাবেই জয় হয়।  আজ আমি সত্যি গর্বিত।



টাওয়ার হ্যামিলেট কাউন্সিলে অবদান রাখার জন্য কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সৈয়দ আশরাফকে  ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.