Sylhet Today 24 PRINT

করিম জন্মশতবর্ষের উৎসবে উদ্ভাসিত সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সিলেটে উদযাপিত হয়েছে প্রয়াত বাউলসাধক শাহ আবদুল করিমের জন্মশতবর্ষ।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নগরীর কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে বিকেল পৌনে পাঁচটায় শাহ আবদুল করিম জন্মশতবর্ষ উদযাপন পর্ষদের উদ্যোগে এবং প্রথম আলোর সহযোগিতায় ‘শাহ আবদুল করিম জন্মশতবর্ষ উৎসব’ পালিত হয়েছে। উৎসবের উদ্বোধন করেন ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট লেখক তপোধীর ভট্টাচার্য।
 
উদ্বোধন শেষে আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ডক্টর তপোধীর ভট্টাচার্য।

উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক কবি শুভেন্দু ইমামের সভাপতিত্বে  আলোচনা পর্বে অংশ নেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মো. সালেহ উদ্দিন, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, ভারতের সাহিত্যিক স্বপ্না ভট্টাচার্য, কবি তুষার কর ও করিম-তনয় শাহ নূরজালাল।

স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন আবৃত্তিকার নাজমা পারভীন।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, শাহ আবদুল করিমের গান শুনে শুধু মাথা নাড়লেই চলবে না, গানের অনেক গভীরে গিয়ে প্রবেশ করতে হবে। করিম তাঁর গানে সমষ্টির কথা বলেছেন। দেশ-কাল করিমের কথা না ভাবলেও করিম দেশ-কালের কথা বলে গিয়েছেন। আর করিমের সৃষ্টির সার্থকতাই এখানে।

স্বপ্না ভট্টাচার্য বক্তৃতায় বলেন, করিমের গান আমাদের মনোজগতকে নাড়া দেয়, আলোড়িত করে। মানুষের সংকটে মানুষকে বাঁচিয়ে দেয় সংস্কৃতি। আর করিমের গান সেই সংকট উত্তরণের আলোকোজ্জ্বল সিঁড়ি।

বক্তৃতায় শাহ নূরজালাল বলেন, শাহ আবদুল করিম আর কেবল আমার পরিবারের নন, তিনি এখন সারা দেশের, সারা জাতির, সারা বিশ্বের। আর কোনো বাউল যেন বাবার মতো জীবদ্দশায় লাঞ্ছিত-বঞ্চিত না হন, সেজন্য রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নেওয়া উচিত।

শুভেন্দু ইমাম সভাপতির বক্তৃতায় বলেন, করিমের গানের শুদ্ধ পাঠ ও শুদ্ধ সুর ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল করিমের শতবর্ষ পালনের সার্থকতা হবে। ইদানীং করিমের জন্ম তারিখ থেকে শুরু করে নানা বিষয় নিয়ে কিছু সুবিধাবাদীরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, এর প্রতিবাদও করিম অনুরাগীদের করা উচিত।

আলোচনা পর্বের শুরুতে সৃজনশীল পোশাকের দোকান ‘স্লোগান’ এর জন্মশতবর্ষ টি-শার্ট, উৎসব স্মারক ও ষড়ঋতুর তৈরি করিমের গান দিয়ে ‘মা’ শীর্ষক ব্যাগ উন্মোচন করা হয়।

আলোচনার পর সন্ধ্যায় ১০০টি মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রয়াত বাউলের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করা হয়।

এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। শুরুতেই ছিল কলকাতার প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী মৌসুমী ভৌমিকের ‘গান ও গল্প’ শীর্ষক এক ঘণ্টার পরিবেশনা।

এ পর্বে মৌসুমী সিলেট অঞ্চলে তাঁর লোকগান সংগ্রহের অভিজ্ঞতা, করিমের গান এবং বাংলা লোকগানের সাধকদের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন। এ সময় তিনি শাহ আবদুল করিম ছাড়াও বিভিন্ন লোকসাধক ও তাঁর বেশকিছু গান পরিবেশন করেন।

এরপর ছিল শাহ আবদুল করিমের লেখা প্রচলিত ও অপ্রচলিত গান পরিবেশন। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমদের জনপ্রিয় হিমু চরিত্রে অভিনয়কারী শিল্পী ফজলুল কবীর তুহিন, করিমের শিষ্য বাউল আবদুর রহমান ও রণেশ ঠাকুর। এ ছাড়া প্রবীণ লোকসংগীত শিল্পী সুষমা দাশ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী লোকসংগীত শিল্পী হিমাংশু গোস্বামী, বাউল বশির উদ্দিন সরকার, বাউল সিরাজ উদ্দিন, বাউল বাবুল সরকার, বাউল শাহীনুর আলম সরকার, শিল্পী লাভলী দেব, অংশুমান দত্ত, শামীম আহমদ, মনিরা ইসলাম পাপ্পু, বিজন রায়, সৌরভ সোহেল, ধরনী দাস, লিংকন দাশ, প্রশান্ত কুমার দাস প্রমুখ গান পরিবেশন করেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.