Sylhet Today 24 PRINT

মেস ভাড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন শাবি শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় খুললে ব্যবস্থার আশ্বাস প্রশাসনের

হাসান নাঈম, শাবি |  ১৪ জুন, ২০২০

দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারী সংকটকালীন মেস ভাড়া নিয়ে উদ্বিগ্নে দিন পার করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা। পর্যাপ্ত আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে মেস ভাড়া নিয়ে বাইরে থাকতে হয়।

এদিকে ছেলেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে বিভিন্ন মেসে থাকলেও মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সামাদ হাউজ -১, সামাদ হাউজ -২,ফজল কমপ্লেক্স, আমির কমপ্লেক্স, ফজলে আলি হল, ছায়ানীড়ে ভাড়া করে থাকেন।

করোনা মহামারীতে দীর্ঘ দিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরাও বাড়িতে রয়েছেন। তবে মেসে না থাকলেও মেস ভাড়া পরিশোধ নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি অনেক শিক্ষার্থীদের মেস মালিকের হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে। এতে মেস ভাড়া পরিশোধ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। তাই এ সমস্যার দ্রুত একটি সমাধান খুঁজছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা মেসে থাকছেন না। যারা টিউশন করে নিজের খরচ চালাতো তারাও টিউশন বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটে ভুগছেন। ফলে মেস ভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না তারা।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, কিছু বাড়ির মালিক সমস্যায় না থাকা সত্ত্বেও কোনো প্রকার ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। এরই মাঝে সময় বেঁধে দিয়ে ভাড়া আদায় করছেন কিছু মেস মালিক। এই সংকটকালে শিক্ষার্থীদের কোন প্রকার সহযোগিতা করার আগ্রহও দেখাচ্ছে না তারা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে এই সমস্যার একটি কার্যকরী সমাধান চান শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, মেস মালিকরা ভাড়ার জন্য বার বার ফোন দিচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা দু'এক মাসের ভাড়াও পরিশোধ করেছি। ভাড়ার জন্য বার বার বিরক্ত করছে। তবে আমাদের এক মাসের ভাড়া মওকুফ করার কথা বলছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মেস ভাড়ার বিষয়ে মনোলোভা কমপ্লেক্স মেসের মালিকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, যে শিক্ষার্থীরা আমাদের বাসায় থাকেন তাদেরকে দেখাশোনা করার দায়িত্ব আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে শিক্ষার্থীরা যখন আসবেন আমরা মেস ভাড়া নিয়ে একটি ব্যবস্থা নিব। এই সঙ্কটকালীন সমস্যার কথা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করবো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো রাশেদ তালুকদার বলেন, শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দিলে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিতে পারে। আমরা যেহেতু শিক্ষার্থীদের জন্য আছি তাই তাদের সমস্যায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।

এ বিষয়ে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং শিক্ষার্থীরাও বাড়িতে থাকায় আপাতত আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে যখনই বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে তখনই মেস মালিক, সিলেট জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে এর সমাধান করা হবে।

উপাচার্য আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা আপাতত কোন চাপ না নিয়ে নিজেরা যাতে পড়াশুনা চালিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে অবশ্যই মেস ভাড়ার বিষয়টি আমরা প্রাধান্য দিয়ে দেখবো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একান্ত সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করলে মেস/বাসা মালিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তবে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর সম্বলিত মেস ভাড়া কমানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করতে হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.