Sylhet Today 24 PRINT

শাবির ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন, ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৭ জানুয়ারী, ২০২২

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় গণিত বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাশেদ তালুকদারকে প্রধান করে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সোমবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রোববারের ঘটনা খতিয়ে দেখতে এই কমিটি করা হয়েছে। দ্রুত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য জহির বিন আলম বলেন, ‘রোববারের ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে, কারা দোষী এটা আমরা খুঁজে বের করব। বিশ্ববিদ্যালয় শান্ত ছিল, হঠাৎ কেন এমন অশান্ত হলো তা বের করা হবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে সোমবার সকালে মুক্তমঞ্চের সমাবেশ থেকে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও থিয়েটার কর্মী শাহীন আলম, ‘আমরা উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। তাকে ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে হবে। আমরা রাষ্ট্রপতি বরাবর আজ চিঠি দেব। তিনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা ক্যাম্পাস ছাড়ব না।’

শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে চাচ্ছেন না এই প্রসঙ্গে সিন্ডিকেট সদস্য জহির বিন আলম বলেন, ‘যদি তারা হল না ছাড়ে তবে কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই সেটা গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’

এর আগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। নানা স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিন দফা দাবির আন্দোলনে ভিসির নির্দেশেই রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ হামলা চালিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। এ কারণেই প্রক্টরিয়াল বডিরও পদত্যাগের দাবি আনা হয়েছে।

বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। রোববার আন্দোলনের চতুর্থ দিনে এসে তা সহিংসতায় রূপ নেয়।

রোববার বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ধাওয়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে। এর জেরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এতে রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস।

রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য। সেই সঙ্গে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের কাছে সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা কিছু সমস্যার কথা জানান। অভিযোগ, এ বিষয়ে তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে জাফরিনের পদত্যাগসহ শুরু হয় তিন দফা দাবিতে আন্দোলন।

রোববার বিকেল ৪টার দিকে সেখানে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম ও অন্য শিক্ষকরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন।

উত্তেজনা বাড়তে থাকলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এরপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কয়েকটি রাবার বুলেট ছোড়া হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবীর জানান, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় শিক্ষক, পুলিশ, শিক্ষার্থীসহ অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.